কৃষ্ণভক্তিকে বেদে দূর্লভ বলা হয়েছে কেন?
এ সম্পর্কে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় বলেছেন-
ত্রৈগুণ্যবিষয়া বেদা নিস্ত্রৈগুণ্যো ভবার্জুন ।
নির্দ্বন্দ্বো নিত্যসত্ত্বস্থো নির্যোগক্ষেম আত্মবান্ ॥
[ শ্রীমদ্ভগবদগীতা ২।৪৫ ]
বঙ্গানুবাদ:
বেদে প্রধানত জড়া প্রকৃতির তিনটি গুণ সম্বন্ধেই আলোচনা করা হয়েছে। হে অর্জুন ! তুমি সেই গুণগুলিকে অতিক্রম করে নির্গুণস্তরে অধিষ্ঠিত হও। সমস্ত দন্দ্ব থেকে মুক্ত হও এবং লাভ-ক্ষতি ও আত্মরক্ষার দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে অধ্যাত্ম চেতনায় অধিষ্ঠিত হও।
শ্রীমদ্ভাগবত (১১।৩।৪৪)-এ বলা হয়েছে, “পরোক্ষবাদ বেদোঽয়ং, অর্থাৎ পরোক্ষবাদ ( একপ্রকারে স্থিত বস্তুর যথার্থতত্ত্ব গোপন করার জন্য অন্য প্রকারে তার বর্ণন ) বেদের একটি স্বভাব।
পিতা যেমন পুত্রের রোগনিবারণের জন্য কুসুমিতবাক্যে মধুরদ্রব্যের আশা দেখিয়ে পরে বঞ্চণাপূর্ব্বক পুত্রের মঙ্গল-কামনায় মঙ্গলকর ঔষধাদি দান করেন, কুপথের প্রলোভন দিয়ে পুত্রকে ঔষধ গ্রহণে কৌতূহলাক্রান্ত করেন, তেমনই কর্মকাণ্ডে ফলের আশা ভরসায় উৎসাহিত করে বেদসমূহ ইন্দ্রিয় পরায়ণ অদূরদর্শী কর্মীকে কর্মকাণ্ডের লোভ দেখিয়ে কর্মফল ভোগ থেকে অবসর দেন।
তাহলে প্রকৃতির সমস্ত গুণকে কিভাবে অতিক্রম করা যায়? এ সম্পর্কে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন-
মা চ যোঽব্যভিচারেণ ভক্তিযোগেন সেবতে।
স গুণান্ সমতীত্যৈতান্ ব্রহ্মভূয়ায় কল্পতে ॥
[ শ্রীমদ্ভগবদগীতা ১৪।২৬ ]
বঙ্গানুবাদ:
যিনি ঐকান্তিক ভক্তিযোগ সহকারে আমার সেবা করেন, তিনি প্রকৃতির সমস্ত গুণকে অতিক্রম করে ব্রহ্মভূত স্তরে উন্নীত হন।
অর্থাৎ, কেউ যদি ঐকান্তিক ভক্তিযোগের মাধ্যমে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেবা করেন, তাহলে তিনি প্রকৃতির সমস্ত গুণকে অতিক্রম করতে পারেন ।
।। হরে কৃষ্ণ ।।
[ বি:দ্র: স্বধর্মম্-এর অনুমোদন ব্যাতীত এই গবেষণামূলক লেখার কোনো অংশ পুনরুৎপাদন, ব্যবহার, কপি পেস্ট নিষিদ্ধ। স্বধর্মম্-এর সৌজন্যে শেয়ার করার জন্য উন্মুক্ত ]
নিবেদক-
° স্বধর্মম্: প্রশ্ন করুন | উত্তর পাবেন °