বৈদিক জ্ঞানে কিছু মূর্খ আজকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার করছে বৈষ্ণরা নাকি নিজেদের সম্প্রদায়কে টিকিয়ে রাখতে নিজেদের সুবিধামত মুক্তিকোপনিষদে বর্ণিত ১০৮ টি উপনিষদের মধ্যে প্রথম ১১ টি উপনিষদ ছাড়া আর অন্যগুলির মধ্যে গোপালতাপনী উপনিষদ,কৃষ্ণ উপনিষদ,কলির্সন্তরণ উপনিষদ,নারায়ণ উপনিষদ, মুক্তিকোপনিষদ ইত্যাদি উপনিষদগুলি নাকি নিজেরা লিখছে। নিম্নে তাদের অপপ্রচারের শাস্ত্রসম্মত জবাব প্রদান করা হল।
বাস্তবিক অর্থে উপনিষদ বিষয়ক বৈষ্ণব সম্প্রদায় সম্পর্কে অনার্য মুর্খদের অপপ্রচার সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।কারন সমগ্র বেদে শ্রীবিষ্ণু,শ্রীকৃষ্ণকে পরমেশ্বর ভগবান বলা হয়েছে । বেদে মানব জাতিকে বৈষ্ণব বা বিষ্ণুভক্ত বা পরমেশ্বর ভগবান শ্রীবিষ্ণুর ভক্ত হওয়ার কথা বলা হয়েছে।সুতারাং বৈষ্ণব সম্প্রদায় বেদবিহিত সম্প্রদায়। শুক্ল যজুর্বেদে বলা হয়েছে, “বৈষ্ণবমসি বৈষ্ণবা স্থ।।”~তোমরা বৈষ্ণব হও, তােমরা ভগবান বিষ্ণুর প্রীতিসাধক হও।।-শুক্লযজুর্বেদ ৫/২৫।
বৈষ্ণবগণ নাস্তিক নয়,আস্তিক। তারা ধর্ম পালন করছে ঈশ্বরের সন্তুষ্টির জন্য।সুতারাং উপনিষদ লিখে বৈষ্ণবদের ধর্ম পালন করতে হবে না।প্রকৃতই শুক্ল যজুর্বেদীয় মুক্তিকোপনিষদ ১/২৭-৩৬ নং অনুসারে ঈশ,কেন,কঠ,কলির্সন্তরণ,গোপালতাপনী, রামতাপনী ইত্যাদি ১০৮ টি উপনিষদ সরাসরি পরমেশ্বর ভগবান থেকে আগত। মুক্তিকোপনিষদ ১/৫১-৫৫ নং অনুসারে ১০৮ টি উপনিষদকে চারটি সংহিতা বেদ অনুসারে বিভক্ত করা হয়েছে।ঋগ্বেদীয় উপনিষদ : ১০ (দশ) টি,শুক্ল যজুর্ব্বেদীয় : ১৯ (উনিশ) টি, কৃষ্ণ যজুর্ব্বেদীয় : ৩২ (বত্রিশ) টি, সামবেদীয় :১৬ (ষোল) টি, অথর্ব্ববেদীয় : ৩১ (একত্রিশ) টি।
সুতারাং মুক্তিকোপনিষদে বর্ণিত ১০৮ টি উপনিষদের মধ্যে প্রথম ১১ টি উপনিষদ বৈদিক আর বাকী ৯৭ টি উপনিষদ অবৈদিক, মুর্খ গোষ্ঠীদের দ্বারা এসমস্ত অপপ্রচার সনাতনী শাস্ত্র অনুসারে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।শ্রুতি বা বেদ,স্মৃতি,পুরাণ,তন্ত্র, রামায়ন ও মহাভারত ইত্যাদি কোন সনাতনী শাস্ত্রে মুক্তিকোপনিষদে বর্ণিত ১০৮ টি উপনিষদের মধ্যে প্রথম ১১ টি উপনিষদ বৈদিক আর ৯৭ টি উপনিষদ অবৈদিক এ ধরনের কোন কথা শাস্ত্রে উল্লেখ করা হয় নি।
আমাদের পূর্বতন সকল আচার্য যেমন শ্রীপাদ শঙ্করাচার্য, শ্রীরামানুচার্য,শ্রীমধ্বাচার্য, শ্রীবিষ্ণুস্বামী, শ্রীনিম্বাকাচার্য,শ্রীধর স্বামী,শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু,শ্রীল রুপ গোস্বামী, শ্রীল সনাতন গোস্বামী,শ্রীল গোপালভট্র গোস্বামী, বিশ্বনাথ চক্রবর্তী ঠাকুর প্রমুখ বিদগ্ধ সংস্কৃত পন্ডিতগণ কৃষ্ণ যজুর্বেদ বেদ নয়,গীতার ৬৩০ টি শ্লোক বিকৃত, ১০৮ টি উপনিষদের ৯৭ টি উপনিষদ বিকৃত বা অবৈদিক, এ ধরনের কোন মতামত প্রদর্শন করেন নি।বরং তারা ভারতবর্ষে সবর্ত্র বিভিন্ন মঠ, মন্দির প্রতিষ্ঠা করে বেদ,গীতা,অষ্টাদশ পুরাণ এবং ১০৮ টি উপনিষদের বাণী প্রচার করেছেন।
হরে কৃষ্ণ। প্রনাম
সদগুন মাধব দাস।