সনাতন ধর্মে আত্মহত্যাকারী ব্যক্তির শাস্তি কি?
মানব জীবন অত্যন্ত দূর্লভ, এই মানব জীবনের সৎ ব্যবহার করার মাধ্যমে আমরা আমাদের জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্যে পৌঁছাতে পারি। আবার অসৎ ব্যবহার করার ফলে আমাদের অধপতন হয়।
স্কন্দপুরাণে আত্মহত্যাকারীর শাস্তি কি হয়, তা এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে–
অন্ধং তমো বিশেযুস্তে যে চৈবাত্মহনোজনাঃ।
ভুক্তা নিরয়সাাহস্রং তে চ স্যুর্গ্রামসূকরাঃ।।
আত্মঘাতো ন কর্তব্যস্তস্মাৎ ক্বাপি বিপশ্চিতা।
ইহাপি চ পরত্রাপি ন শুভান্যাত্মঘাতিনাম্।।
[ স্কন্দপুরাণ, কাশীখণ্ড ১২।১২,১৩ ]
বঙ্গানুবাদ:
আত্মঘাতী লোকেরা ঘোর নরকে যায় এবং সহস্রাধিক নরক যন্ত্রণা ভোগ করে আবার গ্রামের শূকরের যোনিতে জন্মগ্রহণ করে। এজন্য বুদ্ধিমান মানুষদের ভুল করেও কখনো আত্মহত্যা করা উচিত নয়। আত্মঘাতীদের এই লোকে এবং পরলোকেও মঙ্গল হয় না।
মহাভারতে বলা হয়েছে-
অকার্য্যমিতি চৈবেমং নাত্মানং সংত্যজাম্যহম্।
নাতঃ পাপীয়নীং যোনিঃ পতেয়মপরামিতি ॥
[ মহাভারত, শান্তিপর্ব ১৭৪।২১ ]
বঙ্গানুবাদ:
আত্মহত্যা কর্তব্য নহে, সুতরাং আত্মহত্যা করিয়া, ইহা অপেক্ষাও নিকৃষ্ট যোনিতে যাইয়া না পরি, ইহা ভাবিয়া আত্মহত্যা করিতেছি না।
পরাশর স্মৃতিতে আত্মহত্যাকারীর শাস্তি কি হয়, তা এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে-
অতিমানাাতিক্রোধাৎ স্নেহাবা যদি বা ভয়াৎ।
উদ্বধ্নীয়াৎ স্ত্রী পুমান্ বা গতুরেষা বিধীয়তে।।
পূযশোণিতসম্পূর্ণে অন্ধে তমসি মজ্জতি।
ষষ্টিং বর্ষসহস্রাণি নরকং প্রতুপদ্যতে।।
[ পরাশর স্মৃতি, ৪।১,২ ]
বঙ্গানুবাদ:
যদি কোনো স্ত্রী কিম্বা পুরুষ অতিশয় মান, ক্রোধ, স্নেহ ও ভয় নিবন্ধন উদ্ধবন্ধনে তথা ইচ্ছাকৃত ভাবে প্রাণ পরিত্যাগ করে, তাহা হইলে তাহার কিরূপ গতি হয় তাহা বলিতেছি। সেই আত্মহত্যাকারী ব্যক্তি নরকে গমন করে ও ষাট হাজার বছর পর্যন্ত পূয শোণিতপূর্ণ অন্ধতমস নামক নরকে নিমজ্জিত থাকে।
অর্থাৎ যদি কোনো ব্যক্তি আত্মহত্যা করে তাহলে তাকে ষাট হাজার বছর পূয-শোণিতপূর্ণ অন্ধতমস নরকে নিমজ্জিত থাকতে হবে।
।।হরে কৃষ্ণ।।
নিবেদক-
° স্বধর্মম্: প্রশ্ন করুন | উত্তর পাবেন °