সোমরস কি? সোমরস আর মদিরা বা সুরা কি এক?
এ সম্পর্কে রসেন্দ্রচূড়ামণিতে বলা হয়েছে-
পঞ্চাঙ্গযুত্পঞ্চদশচ্ছদাঢ্যা সর্পাকৃতিঃ শোণিতপর্বদেশা। সা সোমবল্লী রসবন্ধকর্ম করোতি একাদিবসোপনীতা। করোতি সোমবৃক্ষোহপি রসবন্ধবধাদিকম্। পূর্ণিমাদিবসানীতস্তযোবল্লী গুণাধিকা।। কৃষ্ণে পক্ষে প্রগলতি দলং প্রত্যহং চৈকমেকং। শুক্লেহপ্যেকং প্রভবতি পুনর্লন্বমানা লতাঃ স্যুঃ। তস্যাঃ কন্দঃ কলয়তিতরাং পূর্ণিমায়াং গৃহীতো। বদ্ধা সূতং কনকসহিতং দেহলোহং বিধত্তে।।ইয়ং সোমকলা লক্ষবেধী বদ্ধসূতেন্দ্রো নাম বল্লী পরমদুর্লভা। অনয়া প্রজায়তে।।
[ রসেন্দ্রচূড়ামণি ৬।৬-৯]
বঙ্গানুবাদ:
সর্পের আকৃতির ন্যায় যার পনেরোটি পাতা, পাতা বেরোবার স্থানটি যার লালবর্ণ, পূর্ণিমার দিন সংগ্রহ করা এরই পঞ্চাঙ্গ (মূল, শাখা, পাতা, ফুল ও ফল) দ্বারা যুক্ত সোমবল্লী পারদকে বদ্ধ করে। পূর্ণিমার দিনে সংগ্রহ করা পঞ্চাঙ্গ (মূল, বল্কল, পাতা, ফুল ও ফল) যুক্ত সোমবৃক্ষও পারদকে সংযুক্ত করা, পারদকে ভস্মে পরিণত করা ইত্যাদি কাজ করে দেয়। কিন্তু সোমবল্লী এবং সোমবৃক্ষ-এই দুটির মধ্যে সোমবল্লী অধিক গুণসম্পন্ন। কৃষ্ণপক্ষে প্রতিদিন এই সোমবল্লীর একটি করে পাতা খসে যায় এবং শুক্লপক্ষে প্রতিদিন একটি করে নতুন পাতা গজায়। এইভাবে এই লতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। পূর্ণিমার দিন যদি এই লতার কন্দ বার হয়, তবে সেটি খুব ভালো হয়। ধুতরার সঙ্গে এই কন্দে আবদ্ধ পারদ শরীরকে লোহার মতো মজবুত করে এবং এর দ্বারা আবদ্ধ পারদ লক্ষবেধী হয় অর্থাৎ একগুণ বদ্ধ পারদ লক্ষগুণ লোহাকে সোনায় পরিণত করে। সোম নামক এই লতা অত্যন্ত দুর্লভ।
সোমলতা নামক এই ওষধি গাছের রস থেকে তৈরি হয় সোমলতার রস বা সোমরস।
সোমলতার কথা পাওয়া যায় আশ্বলায়ন শ্রৌতসূত্র (৫।১২)-তে যেখানে বলা হচ্ছে, সোমযাগে সোমলতা ছেঁচা হত। সোমলতা ও মদিরা এক নয়।শতপথ ব্রাহ্মণ (৫।১।২)-এ সরাসরিই মদ্যপান করতে নিষেধ করা হয়েছে। তাই সোমরস কোন মদিরা বা নেশাদ্রব্য নয়।
।। হরে কৃষ্ণ ।।
[ বি:দ্র: স্বধর্মম্-এর অনুমোদন ব্যাতীত এই লেখার কোনো অংশ পুনরুৎপাদন, ব্যবহার, কপি পেস্ট নিষিদ্ধ। স্বধর্মম্-এর সৌজন্যে শেয়ার করার জন্য উন্মুক্ত ]
নিবেদক-
° স্বধর্মম্: প্রশ্ন করুন | উত্তর পাবেন °