💗 বাসুদেব শ্রীকৃষ্ণ 💗 তিঁনিই হচ্ছেন এক এবং অদ্বিতীয় পরমেশ্বর ভগবান। যাঁকে পৃথিবীর সমস্ত পরমার্থবাদীরা বিভিন্ন উপায়ে লাভ করার চেষ্টা করছেন। অনেকে তাঁকে কোনোরূপেই জানতে পারছেন না এবং নাস্তিকে পরিণত হচ্ছেন। কেউ কেউ তাঁর দিব্য অঙ্গজ্যোঁতি দর্শন করে তাঁকে নিরাকার রূপহীন মনে করে থেমে গিয়ে তাঁর দ্বিভুজ শ্যামসুন্দর মুরলীধর রূপকে জানতে পারছেন না। কেউবা আবার এই পরম পুরুষের সর্বব্যাপী বিরাট বিশ্বরূপের বিস্তৃতিকেই সর্বস্ব ভাবছেন।
সেই পরমেশ্বর ভগবান কর্তৃক পরিচালিত হয়ে ভগবদ্তত্ত্বজ্ঞান প্রচারের জন্য এই পৃথিবীর সমস্ত অঞ্চলে কোনো না কোনো #বার্তাবাহক এসেছেন এবং সেই সেই অঞ্চলের অধিবাসীদের জ্ঞানের ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী বোধগম্য উপায়ে ভগবদ্ সম্বন্ধীয় জ্ঞান প্রদান করেছেন।
পৃথিবীর মধ্যভাগ ও পশ্চিমীয় অঞ্চল মানুষ বসবাসের জন্য প্রতিকূল। সেখানে যথেষ্ট স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় থাকে না, হয়তো প্রচুর উত্তাপ, নয়তো হিমবাহ। পরিবেশ, খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদির উপর ভিত্তি করেই বেড়ে উঠা মানুষের চেতনা বিকশিত হয়। বিশেষত সেইসব অঞ্চলের মানুষের অবৈদিক খাদ্যাভ্যাসের প্রাধান্যতার কারণেই আদিকাল হতে তাদের চেতনা আধ্যাত্মিকতাপূর্ণ জ্ঞান ধারণের জন্য পর্যাপ্ত হয়না। অতএব, সেই অঞ্চলের মানুষদের ভগবদ্ বিষয়ক অতি সাধারণ জ্ঞান প্রদান করা হয়। যেমন:
ভগবান একজন, তিঁনি সর্বশক্তিমান এবং তাঁকে মান্য করা উচিত, ইত্যাদি।
ভগবান সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ তত্ত্ব তাদের প্রদান করা হয় না। কারণ, পৃথিবীর সমস্ত অঞ্চলে একইরকম পরিবেশ থাকে না। পরিবেশের উপর ভিত্তি করে উৎপাদন হয় ফলে সেইমতন খাদ্যাভ্যাস তৈরি হয়। ভগবদ্তত্ত্বজ্ঞান উপলব্ধির পথে খাদ্যগ্রহনের প্রক্রিয়া অতি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। যেরকম খাদ্য আমরা গ্রহণ করি সেরকম চেতনা ও আচরণ তৈরি হয়। তাই আমরা সেইভাবেই নূন্যতম ও উচ্চতর জ্ঞান আহরণ করতে পারি।
অপরপক্ষে পৃথিবীর প্রাচ্যদেশীয় অঞ্চলের পরিবেশ মনুষ্যজাতির জন্য সর্বাধিক অনুকূল। তাই, এই প্রাচ্যের মনুষ্যজাতিকে দেওয়া হয়েছে ভগবদ্তত্ত্ব বিজ্ঞানের চরম সিদ্ধান্ত-
“বেদ-বেদান্তাদি সমস্ত শাস্ত্র” তাতে বর্ণিত হয়েছে ভগবান সম্বন্ধীয় পূর্ণাঙ্গ তত্ত্ব।
- জড় ও চেতন বস্তু কি?
- আত্মা কি?
- পরমাত্মা কি?
- প্রকৃতি কি?
- কাল ও কর্ম কি?
তাই সমস্ত বেদের সারস্বরূপ ভগবদ্গীতা’তে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজেই ঘোষণা দিচ্ছেন-
“আমিই সমস্ত বেদের জ্ঞাতব্য বিষয়, আমি সমস্ত বেদান্ত কর্তা ও বেদবেত্তা।” (ভ:গী : ১৫/১৫)
বৈদিক শাস্ত্রে (অথর্বেদান্তর্গত, গোপালতাপনী উপনিষদ: ১/১) উল্লেখ আছে-
সচ্চিদানন্দরূপায় কৃষ্ণায়ক্লিষ্টকারিণে।
নমো বেদান্তবেদ্যায় গুরবে বুদ্ধিসাক্ষিণে ॥
“আমি শ্রীকৃষ্ণের প্রতি আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি জ্ঞাপন করছি, যাঁর অপ্রাকৃত রূপ হচ্ছে সৎ, চিৎ ও আনন্দময়। আমি তাঁকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি, কারণ তাঁকে জানার অর্থ সমগ্র বেদকে জানা এবং সেই কারণেই তিনি হচ্ছেন পরম গুরু।”
অথর্বেদান্তর্গত, গোপালতাপনী উপনিষদে আরও বলা হয়েছে,
“কৃষ্ণো বৈ পরমং দৈবতম্ ;
শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পরম পুরুষোত্তম ভগবান।” (গোপালতাপনী উপনিষদ: ১/৩)
“একো বশী সর্বগঃ কৃষ্ণ ঈড্য;
পরব্রহ্ম শ্রীকৃষ্ণ এক অর্থাৎ সজাতীয় বিজাতীয় স্বগত ভেদ রহিত, এ নিমিত্ত সকলই ইহাঁর বশীভূত
একোঅপি সন্ বহুধা হো বিভাতি।
শ্রীকৃষ্ণ এক, কিন্তু তিনি অনন্ত রূপ ও অবতারের মাধ্যমে প্রকাশিত হন।” (গোপালতাপনী উপনিষদ: ১/২১)
সমস্ত বৈদিক শাস্ত্রাদিতে তাহলে কি বর্ণিত হয়েছে দেখা যাক-
শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন সগুণ ব্রহ্ম। (মহাভারত: আদি/১/৭২)
অসিত ও দেবল ঋষি উল্লেখ করছেন-
“ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ই প্রজা সৃষ্টিকারী প্রজাপতি এবং সকল লোকের একমাত্র রচয়িতা।” (মহাভারত: বনপর্ব/১২/৫০)
দেবর্ষি নারদ উল্লেখ করছেন-
“ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সকল লোকের স্রষ্টা ও সমস্ত ভাবের প্রকাশক। ইনি সাধ্যগণ এবং দেবগণেরও প্রভু, দেবদেব ব্রহ্মা এবং শিবেরও অধীশ্বর” (মহাভারত: ভীষ্মপর্ব/৬৭/২)
মার্কণ্ডেয় ঋষি বলছেন-
“শ্রীকৃষ্ণ যাজ্ঞিকগণের যজ্ঞ ও তপস্বীগণের তপস্যা। (মহাভারত: ভীষ্মপর্ব/৬৭/৩)
ভৃগু ঋষি উল্লেখ করছেন:
“আপনি দেবগণেরও দেবতা এবং বিষ্ণুরূপী আপনার রূপটি আদি ও সুন্দর।” (মহাভারত: ভীষ্মপর্ব/৬৭/৪)
মহর্ষি বেদব্যাসও বর্ণন করছেন-
শ্রীকৃষ্ণই বসুগণের বাসুদেব, ইন্দ্রকে স্বর্গ রাজ্য প্রদানকারী এবং দেবগণেরও পরম দেবতা। (মহাভারত: ভীষ্মপর্ব/৬৭/৫)
ঋষি অঙ্গিরা উল্লেখ করছেন-
“শ্রীকৃষ্ণ সর্বভূতের সৃষ্টিকর্তা” (মহাভারত: ভীষ্মপর্ব/৬৭/৬)
অসিতদেবল বলেছেন- শ্রীকৃষ্ণই সমস্ত জগতে ব্যাপ্ত সনাতন পুরুষ (মহাভারত: ভীষ্মপর্ব/৬৭/৮)
তাই ভগবদ্গীতাতে আমরা এটি দেখতে পাই যে, মহাত্মা অর্জুনও উপরিল্লিখিত ঋষি-মহর্ষি গণের উদ্ধৃতি দিয়ে শ্রীকৃষ্ণকে উদ্দেশ্য করে আমাদের নিশ্চয়তা দিচ্ছেন যে, শ্রীকৃষ্ণই হচ্ছেন বেদের সেই পরম জ্ঞাতব্য বিষয় পরম ঈশ্বর।
“ অর্জুন বললেন- তুমি পরম ব্রহ্ম, পরম ধাম, পরম পবিত্র ও পরম পুরুষ৷ তুমি নিত্য, দিব্য, আদি দেব, অজ ও বিভু। দেবর্ষি নারদ, অসিত, দেবল, ব্যাস আদি ঋষিরা তোমাকে সেভাবেই বর্ণনা করেছেন এবং তুমি এখন আমাকে তা বলছ।” (ভ:গী: ১০/১২-১৩)
শ্রীমদ্ভাগবত মহাপুরাণে বর্ণিত রয়েছে-
“কৃষ্ণস্তু ভগবান স্বয়ং” শ্রীকৃষ্ণ’ই হচ্ছেন স্বয়ং পরমেশ্বর ভগবান। (শ্রীমদ্ভাগবত:১/৩/২৮)
শ্রীমদ্ভাগবত তথা সমস্ত বেদে’ই প্রতীয়মান হয় যে বাসুদেব-শ্রীকৃষ্ণ’ই হলেন পরাৎপর পরমব্রহ্ম পরমেশ্বর ভগবান। এতোসব প্রমাণাদি থাকার পরও “মায়া অপহৃতজ্ঞানা” (ভ:গী:৭/১৫) ব্যক্তিদের চেতনা আচ্ছাদিত, কলুষিত, তাই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাদের কাছে সাধারণ মনুষ্যরূপে প্রতীত হন।
এজন্য স্বয়ং ভগবান বলেছেন-
“আমি সকলের কাছে প্রকাশিত হই না। আমি আমার অন্তরঙ্গা শক্তি যোগমায়ার দ্বারা আবৃত থাকি” (ভ:গী : ৭/২৫)
শ্রীবিষ্ণুপুরাণ: ৬ষ্ট অংশ ৫ম অধ্যায় ৭৬ নং শ্লোকে শ্রীল পরাশর মুনি বর্ণনা দিচ্ছেন-
“হে মৈত্রেয়! এইভাবে এই মহান ‘ভগবান’ শব্দ পরব্রহ্মস্বরূপ শ্রীবাসুদেবেরই বাচক, আর কারোর নয়।।৭৬।।
ঋগ্বেদ: ১ম মন্ডল/১৬৪ নং সূক্তম্/৪৬ নংঋক্ বর্ণনা করছেন-
“একং সদ্বিপ্রা বহুধা বদন্তি”
সেই এক পরমেশ্বরকে বহু নামে অবিহিত করা হয়।”
আর বলা বাহুল্য তাঁর সেই নাম তাঁর বিভিন্ন অপ্রাকৃত রূপ-লীলা’র উপর প্রতিষ্ঠিত। বেদ-এ সেই পরমপুরুষ পরমাত্মাকে কোথাও ডাকা হচ্ছে গোবিন্দ নামে, কোথাও তাঁকে বলা হচ্ছে বাসুদেব, কোথাওবা শ্রীবিষ্ণু। এসবই হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের অপ্রাকৃত দিব্য নাম।
এমনকি আদি শঙ্করাচার্য বিবেক চূড়ামণিতে সেই গোবিন্দের নিকট প্রণতি নিবেদন করে তিঁনি বলছেন-
“সমস্ত বেদান্তশাস্ত্রের সিদ্ধান্তে যার কথা বলা হয়েছে, যিনি বাক্যমনাতীত পরমানন্দসরূপ সদ্গুরু, সেই পরমাত্মা গোবিন্দকে আমি প্রণাম করি।” (বিবেকচূড়ামণি-১)
“পৃথিবীতে থেকে যিনি পৃথিবী পরিচালনা করেন কিন্তু পৃথিবী যাঁকে জানতে পারে না, শ্রুতির দ্বারা বেদ যে অমলস্বরূপ জগতের স্বামী, নিয়ামক, ধ্যেয় এবং দেবতা, মনুষ্য ও মুনি ঋষিগণের মোক্ষ প্রদানকারী বলে জানিয়েছেন, সেই শরণাগত পালক, নিখিল ভুবনেশ্বর শ্রীকৃষ্ণচন্দ্র আমার নয়নগোচর হোন। (আদি শংকরাচার্য- কৃষ্ণাষ্টকম্/৪)
বেদে বারবার সেই পরমাত্মার স্তুতি বন্দনার কথা বলা হয়েছে, তাঁকে জানার জন্য বলা হয়েছে তবুও কিছু বেদাধ্যয়নকারী সেই পরমাত্মার প্রকৃত স্বরূপকে জানতে পারেন না। অথচ ভক্তিযোগ অনুশীলনের দ্বারা এটা খুব সহজেই বুঝতে পারা যায় যে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণই হচ্ছেন সেই “একং এবং অদ্বিতীয়ম্ পরম পুরুষঃ”।
वेदाहमेतं पुरुषं महान्त- मादित्यवर्ण तमसः परस्तात् ।
तमेव विदित्वाऽतिमृत्युमेति नान्यः पन्था विद्यतेऽयनाय ।।
“পরমেশ্বর ভগবানকে জানবার ফলেই জন্ম-মৃত্যুর বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়া যায়। এছাড়া আর কোনই পথ নেই।” (শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ: ৩/৮)
ভগবদ্গীতা পড়লে আমরা দেখতে পাই স্বয়ং পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সেটি নিশ্চিত করছেন যে, প্রকৃতপক্ষে তিঁনিই সেই পরম তত্ত্ব-
“ভক্তির দ্বারা কেবল স্বরূপত আমি যে রকম হই, সেরূপে আমাকে কেউ তত্ত্বত জানতে পারেন। এই প্রকার ভক্তির দ্বারা আমাকে তত্ত্বত জেনে, তার পরে তিনি আমার ধামে প্রবেশ করতে পারেন।”(ভ:গী : ১৮/৫৫)
“হে অর্জুন যিনি আমার এই প্রকার দিব্য জন্ম এবং কর্ম যথাযথ ভাবে জানেন, তাঁকে আর দেহ ত্যাগ করার পর পুনরায় জন্ম গ্রহন করতে হয় না তিনি আমার নিত্য ধাম লাভ করে।”(ভ:গী: ৪/৯)
“হে অর্জুন এই ভুবন থেকে ব্রহ্মলোক পর্যন্ত সমস্ত লোকই পুনরাবর্তনশীল অর্থাৎ, পুনর্জন্ম হয়। কিন্তু হে কৌন্তেয়! আমাকে প্রাপ্ত হলে আর পুনর্জন্ম হয় না।”(ভ:গী: ৮.১৬)
“বহু জন্মের পর তত্ত্বজ্ঞানী ব্যক্তি আমাকে সর্ব কারণের পরম কারণ রূপে জেনে আমার শরণাগত হন। সেইরূপ মহাত্মা অত্যন্ত দূর্লভ। (ভ:গী: ৭/১৯)
“হে গুড়াকেশ ! আমিই সমস্ত জীবের হৃদয়ে অবস্থিত পরমাত্মা, আমিই সর্বভূতের আদি, মধ্য ও অন্ত। (ভ:গী: ১০/২০)
ব্রহ্মাজি ঘোষণা দিচ্ছেন-
ईश्वरः परमः कृष्णः सच्चिदानन्दविग्रहः ।
अनादिरादिर्गोविन्दः सर्व्वकारणकारणम्।।
“সচ্চিদানন্দ-বিগ্রহ গোবিন্দ কৃ্ষ্ণই পরমেশ্বর। তিনি অনাদি, সকলেরই আদি এবং সকল কারণের কারণ (ব্রহ্মসংহিতা: ৫/১)
শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত: আদিলীলা ৫/১৪২ আমাদের জানাচ্ছেন-
“একেলা ঈশ্বর কৃষ্ণ আর সব ভৃত্য”
আরকেটি বিষয় এই যে, পরমেশ্বর ভগবান যেহেতু মূর্ত-সাকার তবুও তার নিরাকার অমূর্ত অবস্থা রয়েছে। কেউ কেউ আবার সেই নিরাকারকেই পরমেশ্বরের আদি রূপ হিসেবেই গ্রহণ করেন এবং এনিয়ে কুতর্কও করেন।
আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ই স্ ক ন) প্রতিষ্ঠাতা আচার্য এক কথায় ভগবানের নিরাকার এবং সাকারত্বের বিষয়ে আমাদের খুব সুন্দর সুস্পষ্ট ধারণা দিয়ে বলছেন-
“ওঁ হলো নিরাকার, কিন্তু কৃষ্ণের মনোহর আনন্দময় রূপ রয়েছে, আর আমরা সুন্দর রূপ দেখতে ভালোবাসি। যা সুন্দর নয় তা কেন দেখব? কৃষ্ণ ভগবদগীতায় বলছেন, আমি ওঁকার। তাই এক অর্থে ওঁকার এবং কৃষ্ণ এক কিন্তু আমি কৃষ্ণকে দেখি অত্যন্ত সুন্দর এবং আরো অনেক কিছু। কিন্তু আমি ওঁকার এর মধ্যে সেই সব কিছু দেখতে পাই না। সুতরাং আমার পছন্দ কৃষ্ণ হওয়া উচিত।” ~ শ্রীল প্রভুপাদ (বোষ্টন, মে ৪, ১৯৬৮)
এখন যারা নিজেদের মুনি ঋষি ও আচার্যগণ অপেক্ষা অধিক পণ্ডিত মনে করেন তারা নিষ্ফল কুতর্ক করবেন এটাই স্বাভাবিক। কৃষ্ণতত্ত্ব সকলের বোধগম্য হবে না। এটা ভগবান নিজেই বর্ণনা করেছেন-
“বহু বহু জন্মের পরে আমাকে (শ্রীকৃষ্ণ) বাসুদেব সর্ব কারণের পরম কারণ রূপে জানতে পারেন এমন মহাত্মা অত্যন্ত দুর্লভ। (ভ:গী: ৭/১৯)
অতএব, সমস্ত শাস্ত্র শ্রীকৃষ্ণের পরমেশ্বরত্ব ঘোষণা করছে। আমাদের উচিত মনুষ্য জীবনের এই অমূল্য সুযোগ কাজে লাগিয়ে ঠিক যেভাবে একজন জন্মদাত্রী মাতার কাছে থেকে পিতার পরিচয় জানতে পারা যায় তেমনি বেদমাতা’র দেওয়া এই পরমপিতা শ্রীকৃষ্ণের পরিচয় স্বীকার করে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুদ্ধভক্তিতে নিজেকে নিয়োজিত করা।
সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনে-
প্রবীর চৈতন্যচন্দ্র দাস
তথ্যসূত্র:
- ঋগ্বেদ- দূর্গাদাস লাহিড়ী
- শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ- শ্রীরামকৃষ্ণ মঠ
- গোপালতাপনী উপনিষদ- শ্রীরামদেব মিশ্র (৪র্থ সংস্করণ)
- ব্রহ্মসংহিতা- শ্রীচৈতন্য সারস্বত মঠ, নবদ্বীপ
- মহাভারত- হরিদাস সিদ্ধান্ত বাগীশ।
- শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা- (বিবিটি)
- শ্রীমদ্ভাগবত মহাপুরাণ (বিবিটি)
- শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত- (বিবিটি)
- বিবেক চূড়ামণি- কালীপ্রসন্ন বিদ্যারত্ন
বেদে নেই কেনো?
প্রথমত বেদ কি সেটা জানা জরুরী। আজকাল বেদ বলতে যা দেখা যায় সেটা হচ্ছে বেদের মন্ত্র/সংহিতা ভাগ যেমন- ঋগ্বেদ সংহিতা, যজুর্বেদ সংহিতা, সামবেদ সংহিতা, অথর্ববেদ সংহিতা।
প্রকৃতপক্ষে বেদ’এ চারটি বিভাগ রয়েছে মন্ত্র/সংহিতা; ব্রাহ্মণ; আরণ্যক; উপনিষদ। অপরদিকে ছান্দোগ্য উপনিষদ ও অথর্ববেদে ইতিহাস (রামায়ণ ও মহাভারত)-পুরাণাকেও (অষ্টাদশ পুরাণ) ৫ম বেদ বলা হয়েছে।
তাহলে আপনিই বলুন এখানে কি বেদের প্রমাণ দেওয়া হয়নি!