‘হরে কৃষ্ণ’ মহামন্ত্রের অর্থ -শ্রীল গোপালগুরু গোস্বামী প্রভুপাদ কৃত।
বক্রেশ্বর পণ্ডিতের শিষ্য এবং ধ্যানানন্দ গোস্বামীর গুরুদেব গোপালগুরু গোস্বামী পাঁচশো বছর পূর্বে জগন্নাথ পুরীতে থাকতেন এবং নিয়মিত মহাপ্রভুর সঙ্গ করতেন। তাঁর প্রদত্ত মহামন্ত্রের অর্থ শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর তার ভজনরহস্য গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন এবং পয়ার ছন্দে তার অর্থ ব্যাখা করেছেন।
শ্রীল গোপালগুরু গোস্বামী প্রভুপাদ কৃত অর্থ:
বিজ্ঞাপ্য ভগবত্তত্ত্বং চিদ্ঘনানন্দবিগ্রহম্।
হরত্যবিদ্যাং তৎকার্যমতো হরিরিতি স্মৃতঃ
হরতি শ্রীকৃষ্ণমনঃ কৃষ্ণাহ্লাদস্বরূপিণী।
অতো হরেত্যনেনৈব শ্রীরাধা পরিকীর্তিতা।।
অনুবাদ:
ভগবত্তত্ত্ব অর্থাৎ শ্রীভগবান্ চিদ্ঘনানন্দবিগ্রহ জানিতে হইবে। তিনি অবিদ্যা হরণ করেন বলিয়া ‘হরি’-নামে স্মরণীয়। শ্রীকৃষ্ণাহ্লাদ-স্বরূপিণী শ্রীরাধা শ্রীকৃষ্ণমন হরণ করেন বলিয়া ‘হরা’ নামে পরিকীর্তিতা।
.
আনন্দৈকসুখস্বামী শ্যামঃ কমললোচনঃ।
গোকুলানন্দনো নন্দনন্দনঃ কৃষ্ণ ঈর্যতে॥
অনুবাদ:
আনন্দৈক-সুখস্বামী অর্থাৎ (শ্রীকৃষ্ণের হ্লাদিনী শক্তি) আনন্দস্বরূপা শ্রীমতী রাধিকার একমাত্র সুখস্বরূপ স্বামী কমললোচন শ্যাম গোকুলের আনন্দজনক নন্দনন্দন ‘কৃষ্ণ’-সংজ্ঞায় সংজ্ঞিত।
.
বৈদগ্ধ্য-সারসর্বস্বং মূর্তিলীলাধিদৈবতম্।
রাধিকাং রময়ন্নিত্যং রাম ইত্যভিধীয়তে॥
অনুবাদ:
শ্রীকৃষ্ণ বৈদগ্ধ্যসার-সর্বস্ব এবং মূর্ত-লীলার অধিদেবতা। শ্রীরাধিকার নিত্য রমন অর্থাৎ প্রীতিবর্ধনের জন্য তিনি ‘রাম’- নামে অভিহিত।
.
শ্রীল গোপালগুরু গোস্বামীকৃত নামার্থের শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর কৃত ভাষ্য (‘ভজনরহস্য’ গ্রন্থে)
চিদ্ঘন আনন্দরূপ শ্রীভগবান্।
নামরূপে অবতার এইত’ প্ৰমাণ।।
অবিদ্যাহরণ কার্য হৈতে নাম হরি।
অতএব হরে কৃষ্ণ নামে যায় তরি’॥
কৃষ্ণাহ্লাদস্বরূপিণী শ্রীরাধা আমার।
কৃষ্ণমন হরে তাই হরা নাম তাঁর॥
রাধাকৃষ্ণ-শব্দে শ্রীসচ্চিদানন্দ রূপ।
হরে কৃষ্ণ শব্দে রাধাকৃষ্ণের স্বরূপ॥
আনন্দ-স্বরূপ-রাধা তাঁর নিত্য স্বামী।
কমললোচন শ্যাম রাধানন্দকামী॥
গোকুল-আনন্দ নন্দনন্দন শ্ৰীকৃষ্ণ।
রাধাসঙ্গে সুখাস্বাদে সর্বদা সতৃষ্ণ॥
বৈদগ্ধ্য-সার-সর্বস্ব মূর্ত-লীলেশ্বর।
শ্রীরাধারমণ রাম নাম অতঃপর॥
হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র শ্রীযুগল-নাম।
যুগল লীলার চিন্তা কর অবিরাম॥
।।হরে কৃষ্ণ।।
স্বধর্মম্