বেদে বর্ণনায় লক্ষ্মীপতি শ্রীবিষ্ণুঃ
শাস্ত্রজ্ঞানহীন কিছু ব্যক্তি আজকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার করছে, অষ্টাদশ পুরান,রামায়ন, মহাভারত আদি শাস্ত্রে বর্ণিত লক্ষ্মীপতি চতুর্ভুজ নারায়ন নাকি বেদে উক্ত নারায়ন বা বিষ্ণু নন।তাদের মতে নারায়ন বা বিষ্ণু নাকি ঈশ্বরের গুনবাচক নাম মাত্র।
অথচ আমরা ঋগ্বেদের নারায়ন সুক্ত এবং বিষ্ণু সুক্তে দেখতে পায় শ্রীবিষ্ণুর মহিমা বর্ণনা করার পর একই বেদের শ্রীসুক্তে লক্ষ্মী দেবীকে বিষ্ণুপত্নি বলা হয়েছে। এভাবেই বেদ আমাদের শিক্ষা দিচ্ছে যে,বেদে বর্ণিত লক্ষ্মীপতি শ্রীবিষ্ণু হলেন অষ্টাদশ পুরান, রামায়ন, মহাভারত,গীতা আদি শাস্ত্রে বর্নিত চতুর্ভুজ পরমেশ্বর ভগবান শ্রীবিষ্ণু।নিম্নে সে বিষয়ে আলোচনা করা হল…
প্রতদ্বিষ্ণুঃ স্তবতে বীর্যেণ মৃগো ন ভীমঃ কুচরো গিরিষ্ঠাঃ।যস্যোরুষু ত্রিষু বিক্রমণেষ্বধিক্ষিয়ন্তি ভুবনানি বিশ্বা।।
–-ঋগ্বেদঃবিষ্ণুসূক্ত- ১/১৫৪/৩
অনুবাদঃ যেহেতু বিষ্ণুর তিন পদক্ষেপে সমস্তভুবন অবস্থান করে, অতএব ভয়ঙ্কর, হিংস্র, গিরিশায়ী অরণ্য জন্তুর ন্যায় বিষ্ণুর বিক্রম লোকে প্রশংসা করে।( ভগবান বিষ্ণুর বামন অবতারের কথা বর্নিত হয়েছে)
ওঁ তদবিষ্ণো পরমং পদং সদা পশ্যন্তি সূরয়ঃ।
দিবীব চক্ষুরাততম।।
–(ঋগ্বেদঃবিষ্ণুসূক্ত ১/১৫৪/১১)
অনুবাদঃ দুঃলোকে অবস্থিত বিষ্ণুর পরমপদ (চরনকমল)দেবতাগন সর্বক্ষণ ধ্যান বা দর্শন (পশ্যন্তি) করেন।
ওঁ তদ্বিপ্রাসো বিপন্যবো জাগৃবং সঃ সমিন্ধতে।
বিষ্ণোর্যৎ পরমং পদম।।
–ঋগ্বেদঃবিষ্ণুসূক্ত- ১/ ১৫৪/১২
ঋগ্বেদের শ্রীসুক্তে লক্ষ্মীদেবীর মহিমা বর্ণনা করে লক্ষ্মীদেবীকে বিষ্ণুপত্মি বলা হয়েছে…
বিষ্ণুপত্নীং ক্ষমাং দেবীং মাধবীং মাধবপ্রিয়াম্।
লক্ষ্মীং প্রিয়সখীং দেবীং নমাম্যচ্যুতবল্লভাম্।।
মহালক্ষ্মীং চ বিদ্মহে বিষ্ণুপত্নী চ ধীমহি।
তন্নো লক্ষ্মীঃ প্রচোদয়াৎ।।
-(ঋগ্বেদঃসংহিতাঃ আশ্বলায়ন শাখা ৫. ৮৯. ৮-৯)
অনুবাদঃ হে ক্ষমারূপিনী, মহাদেবী, মাধবী,মাধবপ্রিয়া লক্ষ্মী! তুমি অচ্যুত নারায়ণের প্রিয়সখী অচ্যুতবল্লভা, তোমায় নমস্কার করি।আমরা মহালক্ষ্মীকে জানতে, বিষ্ণুপত্নীকে ধ্যান করি, সেই মহালক্ষ্মী যেন আমাদের শুভ কার্যে প্রেরণ করেন।
হরে কৃষ্ণ। প্রনাম।