একাদশী করা কি শাস্ত্রসম্মত নয়?!
- গীতার ৬/১৬ শ্লোকে কি বলেছে নাকি একাদশী ব্রত থাকা নিষেধ?!
- একাদশী ব্রত কি অতি অনাহারের মধ্যে পড়ে?!
- একাদশী ব্রতের নিয়ম জানেন তো?!
উপবাসের প্রসঙ্গে কৃষ্ণযজুর্বেদের ১/৬/৭ নং মন্ত্রে বলেছে যারা সামর্থবান তারা নির্জলা উপবাস করবে। এতে অসমর্থ হলে জল পান করবে। শাস্ত্রে আরো বলছে, যারা তাতেও অসমর্থ তারা সাচ্ছন্দে ফল-মূল-কন্দ সবজী গ্রহণ করতে পারবে। শাস্ত্রে একাদশী থাকার থেকে সমস্ত প্রকারের দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত দিয়েছে। যে যার সামর্থ অনুসারে একাদশী পালন করতে পারবে।
“উপবাসে ক্ষুধা বৃদ্ধি পায় এবং ক্ষুধাগ্নি জীবের ক্ষতি সাধন করে । যদি ক্ষুধা অসহনীয় হয় তবে #জলপান করবে। জলপানে ভোজন হয়, আবার হয়না। যজ্ঞ বজ্রসদৃশ, ক্ষুধা মানুষের শত্রু। না খেয়ে উপবাস করলে যজ্ঞরূপ বজ্র তার ক্ষুধারূপ শত্রুকে বিনাশ করে।”
[কৃষ্ণযজুর্বেদ, ১/৬/৭]
উপবাসাসমৰ্থশ্চ ফলমূলজলং পিবেৎ।
নষ্টে শরীরে স ভবেদন্যথা চাত্মঘাতকঃ ॥ ১২
– [শ্রীব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ, ব্রহ্মখন্ড, ২৭।১২]
অনুবাদ: উপবাস জন্য শরীর নষ্ট হইলে, আত্মহত্যার পাপ হয়, তাই (নির্জলা) উপবাসে অসমর্থ হইলে, ফলমূল ভোজন ও জল পান করিবেন।
কই শাস্ত্রে তো একাদশীতে অতি অনাহার থাকতে বলা হয় নি!!!
একাদশী হলো নিয়মিত উপবাস৷ কোন যন্ত্রকে সঠিকভাবে কার্যক্রম রাখতে নির্দিষ্ট সময় পর পর বিরতি দিতে হয়। আমাদের দেহের পাকস্থলী সারা দিনরাত খাদ্য পরিপাকে ব্যস্ত থাকে। তাই মাসে ২ দিন তাকে বিশ্রাম দেওয়া হয়, যাকে আমরা একাদশী বলে চিনি। একাদশী ব্রত থাকলে শরীরের অপ্রয়োজনীয় চর্বি ঝরে যায়, শরীর সতেজ হয়, হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়।
অতএব, ফেসবুক কেন্দ্রিক ধর্মচর্চা না করে একটু শাস্ত্র অধ্যয়ন করুন, মন্দিরে যান। যতই ফেসবুক নানা গ্রুপে ঘুরে ঘুরে অনলাইন কেন্দ্রিক ধর্মচর্চা করবেন, তত নিজে বিভ্রান্ত হবেন, সমাজটাকেও পঁচাবেন।
পরিশেষে, শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন –
যঃ শাস্ত্রবিধিমুৎসৃজ্য
বর্ততে কামকারতঃ।
ন স সিদ্ধিমবাপ্নোতি
ন সুখং ন পরাং গতিম ॥
যে শাস্ত্রবিধি পরিত্যাগ করে কামাচারে বর্তমান থাকে, সে সিদ্ধি, সুখ অথবা পরাগতি লাভ করতে পারে না।
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ১৬।২৩
তস্মাচ্ছাস্ত্রং প্রমাণং তে
কার্যাকার্যব্যবস্থিতৌ।
জ্ঞাত্বা শাস্ত্রবিধানোক্তং
কর্ম কর্তুমিহাইসি॥
অতএব, কর্তব্য ও অকর্তব্য নির্ধারণে শাস্ত্রই তোমার প্রমাণ। অতএব শাস্ত্রীয় বিধানে কথিত হয়েছে যে কর্ম, তা জেনে তুমি সেই কর্ম করতে যোগ্য হও।
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ১৬।২৪
অগণিত শাস্ত্রে বিষ্ণুব্রত একাদশী পালনের নির্দেশ রয়েছে। এই নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।
।।হরে কৃষ্ণ।।
সংকলন: নবনীল ঘনশ্যাম দাস
লেখার স্বত্ব স্বধর্মম্ কর্তৃক সংরক্ষিত। কেবল স্বধর্মম্ এর স্বত্ব উল্লেখ পূর্বক হুবহু কপি ও লিংক শেয়ারের জন্য অনুমোদিত