ইসকনে নারী পুরুষের মধ্যে কেমন সম্পর্কের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে?

20240926_164520

এই জগতের কল্যাণের স্বার্থে কৃষ্ণকৃপাশ্রীমূর্তি শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ এই স্বর্ন সংস্থা স্থাপন করছেন। প্রভুপাদের শিক্ষার একমাত্র আঁধার ছিল জীবনের সকল কার্যে জড় বিষয় পরিত্যাগ করে পারমার্থিক পথনির্দেশ অনুসরণ করা হবে। দেহের কোনো পার্থক্য থাকছে না, “হোক এই দেহটি কোনো নারী অথবা পুরুষের” আমরা সকলেই আত্মা যদি আমরা পারমার্থিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি। কিন্তু প্রকৃতির নির্দেশ অনুসারে শারীরিক ও মানসিক দৃষ্টিকোণ থেকে পুরুষ এবং নারীকে ভিন্ন ভিন্নভাবে তৈরি করা হয়েছে। প্রকৃতির বিধি অনুসারে নারীরা সাধারণত বেশিরভাগ আবেগপ্রবণ হয়ে থাকেন, ভগবান তাদের এই বিশেষ গুণটি প্রদান করেছেন যে তারা নিজেদের স্বজন হোক পিতা-মাতা, স্বামী অথবা নিজের সন্তানদের অধিক ভালোবাসার সাথে স্বাচ্ছন্দে রাখতে পারেন। এবং পুরুষরা প্রাকৃতিকভাবে শারীরিক দিক থেকে অধিক শক্তিশালী, রক্ষক, উপার্জনকারী, তার শরণাগত থাকা সকলকে রক্ষা করা।
প্রভুপাদ যখন আমেরিকায় গিয়েছেন তখন তিনি দেখছিলেন যে নারীরা পুরুষদের সাথে সমান অধিকার নিয়ে বেশি সচেতন, তারাও চাকরি করছে। তখন প্রভুপাদ সেইভাবেই প্রচার করেছেন তিনি কখনই তাদের বাধা দেননি চাকরি বা অন্যান্য বিষয়ে। তিনি তাদের চারটি বিধিনিষেধ দিয়েছিলেন। যা আমরা সকলেই জানি। এরমধ্যে একটি প্রধান হচ্ছে অবৈধ সঙ্গ বর্জন করা।

এবার মূল বিষয়ে আসছি,
শ্রীল প্রভুপাদ চেয়েছিলেন এমন একটি সংস্থা হবে যেখানে নারী পুরুষ উভয়ই সমানভাবে কৃষ্ণভাবনামৃতের আশ্রয় গ্রহণ করবে এবং জগতের কল্যাণের স্বার্থে সেই বৈদিক সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসার করবে। কিন্তু এখনকার বর্তমান সমাজে কিছু ছেলেমেয়েরা এই প্রচার ও প্রসারের নাম দিয়ে অবাধে মেলামেশা করছে। অনেকে এটাকে কৃষ্ণভাবনাময় সম্পর্ক নামক আখ্যা দিয়ে থাকেন যা তথাকথিত বয়ফ্রেন্ড, গার্লফ্রেন্ড অথবা বেস্টফ্রেন্ড হিসেবেও পরিচিত। যা কখনোই প্রভুপাদের দৃষ্টিকোণ ছিল না।

শ্রীল প্রভুপাদ তার ১৭ নভেম্বর, ১৯৭১, দিল্লিতে একটি প্রবচনে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন: –
বিবাহ করা অপরিহার্য। আমাদের সংস্থার বিষয়ে বিবেচনা করা হলে, আমরা আমাদের সংস্থায় কাউকে বন্ধু, গার্লফ্রেন্ড বা বয়ফ্রেন্ড হিসেবে থাকার স্বীকৃতি দেই না। না। তাদের অবশ্যই বিবাহিত হতে হবে এবং এই ছেলে-মেয়েরা, বিবাহিত হওয়ার পর, তারা সুন্দরভাবে কৃষ্ণভাবনামৃত প্রচার করছে। আমার সমস্ত শিষ্য যারা বিবাহিত, তারা সন্ন্যাসীর চেয়ে বেশি প্রচারকার্য করছে।

অর্থাৎ এই কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘে দুজন সম্পর্ক বিহীন পুরুষ নারী কখনোই অবাধে মেলামেশা করতে পারবে না। তাদের অবশ্যই কোনো বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। এটাই আমাদের বৈদিক সংস্কৃতি। কিন্তু আমরা যদি পাশ্চাত্য সংস্কৃতি অনুসরণ করি এবং এই কৃষ্ণভাবনামৃতের নাম দিয়ে অবৈধ সঙ্গ করি তাহলে তা হচ্ছে প্রতারণার স্বরূপ।
শ্রীল প্রভুপাদ প্রায়শই বৈদিক সংস্কৃতি এবং পাশ্চাত্য সংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্য বর্ণনা করেছেন।

images 29 Svadharmam

প্রভুপাদ তখনকার সময় উল্লেখ করে বলছিলেন-
“বৈদিক সংস্কৃতি এতই কঠোর ছিল যে তুমি তার (নারীর) দিকে তাকাতেও পারবে না, তার সাথে কথা বলার বা কিছু প্রস্তাব করার বিষয়ে প্রশ্নই আসে না।” এতেই বোঝা যায় পুরুষরা তাদের সাথে কথা বলা তো দূরের কথা তাদের দিকে তাকাতে পারতোনা। তাহলে কৃষ্ণভাবনামৃতের এই প্রচার এত সহজ করে দেওয়ার পরেও কেনো এই অবৈধ সঙ্গে লিপ্ত হচ্ছি তাও নিজের ইন্দ্রিয়তৃপ্তির জন্য।

শ্রীল প্রভুপাদ আরো উল্লেখ করেছেন যে,
পতিব্রতা পত্নী হচ্ছেন তিনি, যাঁর বিবাহের পূর্বে কোন পুরুষের সঙ্গে কোন সম্পর্ক ছিল না। স্ত্রীদের যদি যৌবনে পুরুষদের সঙ্গে মেলামেশা করার স্বাধীনতা দেওয়া হয়, তা হলে তার সতীত্ব বজায় রাখা অত্যন্ত কঠিন হয়। সাধারণত তাদের সতীত্ব থাকে না। আগুনের সামনে মাখন আনলে তা গলবেই। স্ত্রী হচ্ছে আগুনের মতো এবং পুরুষ মাখনের মতো।
~শ্রীমদ্ভাগবত ৪.২৬.১৬ ভক্তিবেদান্ত তাৎপর্য।

সাধারণত বিবাহিতা স্ত্রী ব্যতীত অন্য কারও সঙ্গে পুরুষের যৌনসঙ্গে লিপ্ত হওয়া উচিত নয় এবং শাস্ত্র বিরুদ্ধ। বৈদিক বিধান অনুসারে, অপরের স্ত্রীকে মাতৃবৎ দর্শন করা উচিত, এবং মাতা, ভগিনী ও কন্যার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। কেউ যদি পরস্ত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়, তা হলে তা মায়ের সঙ্গে যৌনসঙ্গে লিপ্ত হওয়ার মতো বলে বিবেচনা করা হয়। সেই আচরণ অত্যন্ত পাপময়। স্ত্রীলোকের ক্ষেত্রেও সেই নিয়ম বলবৎ রয়েছে, কোন স্ত্রী যদি তার পতি ব্যতীত অন্য কোন পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়, তা হলে সেই সম্পর্ক পিতা অথবা পুত্রের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার মতো।
~শ্রীমদ্ভাগবত ৫.২৬.২০ ভক্তিবেদান্ত তাৎপর্য।

শ্রীল প্রভুপাদ স্পষ্ট বলে দিয়েছেন ইন্দ্রিয়তর্পণ করার জন্যে এসব অবাধে মেলামেশা করা চলবে না। যদি কোনো পুরুষ বা নারী এভাবে অবাধে মেলামেশা করে তবে আগুনের ন্যায় নারীদের সম্মুখে পুরুষের ন্যায় ঘি অবশ্যই গলবে। এবং একসময় তারা অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হবে। তখন একজন নারীর সতীত্ব বজায় রাখা কঠিন হবে। এখন প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে কি প্রভুপাদ নারীদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছেন? না একদমই না। প্রথমত এসব অবাধে মেলামেশা কখনোই স্বাধীনতা হতে পরে না। কিন্তু প্রভুপাদ প্রচারে কঠোর নিয়ম অনেকটাই শিথিল করেছেন। যেমন আমি প্রথম দিকেই বলেছি প্রভুপাদ যখন তিনি আমেরিকায় প্রচারে যান তখন তিনি মাতাজীদের চাকরি করায় বাধা দেননি। তিনি বলেছেন এর মধ্যেই তোমরা কৃষ্ণভাবনামৃত প্রচার করবে, কিছু সীমানা বজায় রেখে। তিনি অনেকটাই শিথিল করেছিলেন। তখনকার সময়ে তিনি মাতাজীদের অনেক মন্দিরের অধ্যক্ষের পদ দিয়ে গিয়েছিলেন।
Some words on this topic
– একটি ঘটনায় দেখা যায় প্রচারকালে প্রভুপাদ বিভিন্ন ভক্তদের মাঝে কথোপকথনে তিনি একটি ভূ-গোলক রেখে সেই নকশা থেকে তাদের মাঝে প্রচারের জন্য দেশের বিভক্তি করেছিলেন, এবং বলছিলেন তুমি এই দেশে যাবে, তুমি ওই দেশে যাবে ওখানে গিয়ে প্রচার করবে। পেছনে কিছু মাতাজী শিষ্যরাও ছিলেন। তারা প্রভুপাদ কে জিজ্ঞাসা করছিলেন, প্রভুপাদ আমরা কি কিছু পাবো না। তখন প্রভুপাদ বলছেন- না না তোমরা এই দেশটা নাও প্রচারের জন্য। যেনো তিনি দেশ স্বরূপ প্রসাদ বিতরণ করছেন। এবং আমরা দেখতে পাই যে প্রভুপাদের শিষ্যগণ ঠিক কিভাবে বিভিন্ন দেশে নগরে গ্রামে প্রচার করেছিলেন। এখন পুরো বিশ্বে সেই প্রচার প্রসিদ্ধ। এমনকি প্রভুপাদ তাঁর শিষ্যাদের নিজের পূত্রীস্বরূপ দেখতেন, তাই তাদের মধ্যে কোনো বিভাজন করেননি।

আমি কিছুকাল পূর্বেই প্রভুপাদের একজন শিষ্যা শ্রীমতী মালতি মাতাজীর প্রভুপাদ স্মরণামৃত তে শুনছিলাম, তিনি কিছু ঘটনা উল্লেখ করছিলেন:-
তৎকালীন মায়াপুর তখন মায়াপুরে ভক্তদের থাকার জায়গা অনেকটাই সংকীর্ণ ছিল মন্দির ছিল না বললেই চলে। তখন মালতি মাতাজী ভাবছিলেন “এমন স্থানে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।” তিনি ভাবছিলেন আমি প্রভুপাদের সাথে কথা বলে এখন থেকে অন্যস্থানে চলে যাবেন প্রচারে।images 26 Svadharmam একদিন প্রভুপাদ ও তাঁর গুরু ভ্রাতারা প্রসাদ আস্বাদন করছিলেন। মালতি মাতাজী তাদের সকলকে পরিবেশন করছিলেন।যখন মাতাজী প্রসাদ নিয়ে যাচ্ছেন তখন হটাৎ প্রভুপাদ তার দিকে আঙুল দিয়ে তাঁর গুরুভ্রাতাদের দেখাচ্ছিলেন যে “এই দেখো ও আমার মেয়ে, তোমরা জানো সে আমাকে কতটা ভালোবাসে সে আমার জন্য নিজের জীবন দিতে পারবে এবং আমি ওর জন্য নিজের গলা কাটাতেও প্রস্তুত।” তখন মালতি মাতাজী হটাৎ আলাদা স্থানে গিয়ে কান্না শুরু করলেন- “প্রভুপাদ আমার জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত আর আমি এটা কি চিন্তা করছিলাম।” তখন তিনি ঠিক করলেন যা কিছুই হোক তিনি প্রভুপাদকে ছেড়ে এই মায়াপুর কে ছেড়ে কোথাও যাবেন না।

এবং প্রভুপাদ পুরুষের কথাও উল্লেখ্য করছেন যে, শ্রীমদ্ভাগবতে উল্লেখ রয়েছে যদি কোনো পুরুষ কোনো নারীর দিকে কুদৃষ্টিতে তাকায় তাহলে তা ধর্ষনের সমতুল্য। প্রভুপাদ আরো বলেছেন, যদি কোনো পুরুষ চারটি বিধিনিষেধ পালন না করে একজন নারী অবশ্যই তার পতির সঙ্গ পরিত্যাগ করতে পারবে। কিন্তু পুনরায় বিবাহ করে নয়। অর্থাৎ যদি কোনো নারী ভুলবশত একজন পতিত পতির দ্বারা প্রভাবিত হন এবং ভক্তিজীবনে নিরাপত্তাহীনতা বোধ করেন তবে তিনি স্বামীর থেকে দূরত্বে থাকতে পারেন। হ্যাঁ যদি স্বামীকে বোঝাতে সক্ষম হন সেক্ষেত্রে আলাদা বিষয়। কিন্তু নারীর সর্বোচ্চ চেষ্টা করা উচিত স্বামীর সাথে মানিয়ে চলার। এইজন্য প্রভুপাদ বিধান দিয়েছেন যেনো স্বামী অথবা তত্ত্বাবধায়ক যেনো বয়সে বড় এবং ভক্তিজীবনে উন্নত স্তরে থাকেন এমন কাউকেই সঙ্গী হিসেবে গ্রহন করতে। এবং এই পতি নির্বাচনের দায়িত্ব অবশ্যই পিতা মাতার।

এতেই আমরা দেখতে পাই প্রভুপাদ কখনোই তার শিষ্যদের মধ্যে নারী পুরুষ আলাদা করে বৈষম্যতা করতেন না। সকলেই তার পারমার্থিক সন্তান সকল শিষ্যদের তিনি পাশ্চাত্যে তাদের প্রচারের সুযোগ করে দিয়েছিলেন।

আবার মূল বিষয়ে ফিরে যাই:
প্রভুপাদ অবৈধ যৌনতা বা অবৈধ যেকোনো সম্পর্কে স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। অথবা কোনো গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড এর সম্পর্ক রাখা যাবেনা। যদিও এখন কিছু তথাকথিত কপট অসাধু ব্যাক্তি শুধুমাত্র ইসকনের ট্যাগ লাগিয়ে অবৈধ সঙ্গে লিপ্ত রয়েছে। অনেকে এটাকে কৃষ্ণভাবনানয় বন্ধুত্ব বলছেন অনেকে কৃষ্ণভাবনাময় সম্পর্কের নাম দিয়ে চালাচ্ছেন। যা ইসকনের নীতি বিরুদ্ধ আমি জানি না তারা ভক্তি জীবনে কতটুকু উন্নতি করার চেষ্টা করছে। কিন্তু কপটতা দিয়ে নীতিবিরুদ্ধ কার্য করে আর যাই হোক ভক্তিতে অগ্রসর হওয়া যায় না।

প্রভুপাদকে একজন শিষ্য প্রশ্ন করেছিলেন (প্রভুপাদ, শিষ্যদের মধ্যে বিষাক্ত এমন কি রয়েছে ” যা সবকিছুকে ধ্বংস করে ফেলতে পারে?)
প্রত্যুত্তরে প্রভুপাদ বলেছিলেন:
এই বিষাক্ত বস্তুটি হচ্ছে অবৈধ যৌনাচার, এবং এই বিষাক্ত বস্তুটি সবকিছু ধ্বংস করে ফেলবে। এটাই হচ্ছে সেই বিষ। আর আমি বুঝতে পারছি না আমার শিষ্যদের এই বিষ এর হাত থেকে বাঁচাতে পারব কিনা।
( রেফারেন্স বেদব্যাস:- ভক্তদের সাথে কথোপকথন, ৩রা জানুয়ারী, ১৯৭৫, বোম্বে )

• প্রভুপাদ পরমানন্দ ও সত্যভামা মাতাজির বিয়েতে বলছিলেন এই দেখো আমি এই সকলকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেছি। এটাই বৈদিক নিয়ম। প্রভুপাদ বারবার বলেছেন বিবাহের অনুমোদন রয়েছে তাহলে কেনো অবাধে মেলামেশা করবে। এখন অনেক ব্যাক্তিই বলবে যে তাহলে সংস্থায় তো এত নারী পুরুষ রয়েছে তারা কি কথাবার্তা

images 25 Svadharmamমেলামেশা বন্ধ করে দেবে। আমাদের সংস্থায় সকলকে প্রভু বা মাতাজী সম্বোধনের প্রচলন দেখতে পাই। যা বৈদিক সংস্কৃতির অংশ। আমরা তাদের ওই দৃষ্টিকোণ থেকেই দর্শন করবো। শুধুমাত্র ব্যাক্তিগত সম্পর্ক ব্যতীত তাদের মেলামেশার অথবা প্রজল্পের কোনো প্রয়োজন দেখছি না। প্রভুপাদ এর একটিই সমাধান দিয়ে গিয়েছেন, বিবাহ।

পরমানন্দ ও সত্যভামার বিবাহে মন্ট্রিল, ২২ জুলাই, ১৯৬৮ সালে প্রভুপাদ বলেছেন
আমাদের বৈষ্ণবীয় বিধি অনুসারে, বিবাহ অনুমোদিত কারণ সেখানে পুরুষ, নারী রয়েছে। কেন তারা ঐক্যবদ্ধ হবে না? তবে অবৈধভাবে নয়। আমি দেখলাম অধিকাংশ ছেলে-মেয়েরা বয়ফ্রেন্ড, গার্লফ্রেন্ড রাখছে। তাই আমি তাদের অনুরোধ করেছিলাম যে, তোমরা যদি পারমার্থিক জীবনে উন্নতি করতে চাও, তাহলে চার প্রকার পাপকার্য থেকে বিরত থাকতে হবে।

এতে প্রভুপাদ বুঝিয়েছেন আমাদের ছেলেমেয়েরা অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হবে কিন্তু অবশ্যই তাদের বিবাহিত হতে হবে। কিন্তু অবৈধভাবে নয়। আমরা দেখতে পাই প্রচারের ক্ষেত্রে শ্রীল প্রভুপাদ নারী পুরুষের মধ্যে কোনো বিভাজন তৈরী করেননি।

প্রভুপাদ আরো উল্লেখ করেছেন যদি এভাবে অবৈধ সম্পর্ক চলতে থাকে ভবিষ্যতে তখন নারী পুরুষের মধ্যে সম্পর্কে মাধ্যমে অবৈধ সন্তান উৎপাদন হবে এবং পুরুষ আবার নতুন নারীর সাথে সম্পর্ক করবে। এবং ওই নারীটি তার বাচ্চাদের নিয়ে অনাথ হয়ে যাবে। তখন তার দায়িত্ব নেবে কে?
তাই আমাদের লজিকালিও দেখতে হবে। এখন যারা সমালোচনা করছে তারা কি ওই নারীর দায়িত্ব নেবে?

বৈদিক নির্দেশ অনুসারে দুজ নারী পুরুষ বিবাহিত হয়ে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রীতিবিধান করবেন। এবং স্ত্রী এবং স্বামী একে অপরকে ভক্তিজীবনের উন্নতিতে সাহায্য করবেন।

অনেকের এই বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য আসতেই পারে। কিন্তু নিয়ম নিয়মই। এর উলঙ্ঘন মানেই সংস্থার নির্দেশ অমান্য করা। অনেকেই এসব চিন্তাধারায় প্রভুপাদকে ব্যাকডেটেড বলবেন। কারণ তারা ভাবে যে ইন্দ্রিয়তর্পণ করা মানেই স্বাধীনতা। তাই আমরা যদি এমন মনোভাব পোষণ করি তবে ইসকন অথবা বৈদিক/বৈষ্ণবীয় সংস্কৃতিতে থাকার যোগ্যতা আপনার বা আমার নেই এবং প্রভুপাদ আমাদের একমাত্র অথরিটি তিনি যা অনুমোদন দিয়েছেন তার পালন করতে হবে। যদি তা পালন করতে না পারেন তাহলে নিশ্চিন্তে দরজা খোলা রয়েছে বেরিয়ে যেতে পারেন। অথবা যারা এসব চিন্তাভাবনা নিয়ে ইসকনে আসার চেষ্টা করছেন তাদের জানিয়ে রাখি ইসকন থেকে দূরে থাকবেন, অযথা ইসকনে এসে এই স্বর্ণ সংস্থায় আবর্জনার মিশ্রণ করবেন না।
।।হরে কৃষ্ণ।।

সংকলনে: নীলমাধব বণিক নীলাদ্রি (আচার্য বাক্যের পুনরাবৃত্তি) নোট: জানুয়ারি ১৮, ২০২৪

[ বি:দ্র: স্বধর্মম্-এর অনুমোদন ব্যাতীত এই লেখার কোনো অংশ পুনরুৎপাদন, ব্যবহার, কপি পেস্ট নিষিদ্ধ। স্বধর্মম্-এর সৌজন্যে শেয়ার করার জন্য উন্মুক্ত ]

নিবেদক-
° স্বধর্মম্: প্রশ্ন করুন | উত্তর পাবেন °

Avatar of Shuvo Debnath

Shuvo Debnath

Writer & Admin

5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Protap kumar roy
Protap kumar roy
1 month ago

Hare Krishna 🙏🙏