কলিযুগ শ্রেষ্ঠ!!!
সাধারণত আমরা সবাই জানি বর্তমানে কলিযুগ চলছে, যার সময়সীমা ৪ লক্ষ ৩২ হাজার বছর। আর এই কলি যুগের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মানুষকে বেদ বিরোধী আচরণ তথা পাপাচারণে প্রবৃত্ত করা। এই কলিযুগ সম্পর্কে বৈদিক শাস্ত্রে আগাম সতর্কবাণী ও দিক নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। কলিযুগে বেদ বিরোধী কার্যক্রমের প্রসার থাকা সত্ত্বেও এই যুগের এক মহান বিশেষত্ব রয়েছে, যে কারণে কলিযুগকে শ্রেষ্ঠ ঘোষণা করা হয়েছে।
“শ্রীব্যাসদেব বললেন – হে দ্বিজগণ! যে ফল সত্যযুগে দশবছর তপস্যা, ব্রহ্মচর্য ও জপাদি করলে পাওয়া যায়, ত্রেতায় মানুষ তা এক বছরে, দ্বাপরে এক মাসে এবং কলিযুগে মাত্র এক দিন-রাতে প্রাপ্ত করে নেয়, সেই কারণেই আমি কলিযুগকে শ্রেষ্ঠ বলেছি৷ সত্যযুগে যে ফল ধ্যানে, ত্রেতায় যজ্ঞ দ্বারা এবং দ্বাপরে দেব-অর্চনা করলে প্রাপ্ত করা যায়, সেই ফলই কলিযুগে শ্রীকৃষ্ণের নামকীর্তন করলে পাওয়া যায়।।– (শ্রীবিষ্ণুপুরাণ: ৬/২/১৫-১৭)
এই অত্যন্ত খারাপ (দূষিত) কলিযুগের এই একটি মহাগুণ । যে এই যুগে শুধুমাত্র শ্রীকৃষ্ণের নাম-সঙ্কীর্তন করলেই মানুষ পরম-পদ প্রাপ্ত করে নেয়।।– (শ্রীবিষ্ণুপুরাণ: ৬/২/৩৯)
শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণেও আমরা দেখতে পাই শুকদেব গোস্বামী পরীক্ষিত মহারাজকে একই কথা বলছেন-
कलेर्दोषनिधे राजन्नस्ति ह्येको महान् गुण: ।कीर्तनादेव कृष्णस्य मुक्तसङ्ग: परं व्रजेत्
“হে রাজন, যদিও কলিযুগ হচ্ছে এক দোষের সাগর, তবুও তার একটি মহান গুণ আছে-শুধুমাত্র হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র কীর্তন করার মাধ্যমে মানুষ জড়বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে পরমধামে উন্নীত হবেন”।।– (শ্রীমদ্ভাগবত: ১২/৩/৫১)
“সত্যযুগে শ্রীবিষ্ণুর ধ্যান করে, ত্রেতা যুগে যজ্ঞ অনুষ্ঠান করে এবং দ্বাপর যুগে ভগবানের চরণ পরিচর্যার মাধ্যমে যা কিছু ফল লাভ হয়, কলিযুগে শুধুমাত্র হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র কীর্তন করার মাধ্যমেই সেই ফল লাভ হয়ে থাকে”।।– (শ্রীমদ্ভাগবত: ১২/৩/৫২)
এছাড়াও পদ্ম পুরাণ: উত্তর খণ্ড ৭২/২৫ এবং বৃহন্নারদীয় পুরাণেও ৩৮/৯৭ অনুরূপ একটি শ্লোক পাওয়া যায়।
– প্রবীর চৈতন্যচন্দ্র দাস