মহাভারতে শ্রীকৃষ্ণের সর্বোত্তম ‘হরে কৃষ্ণ’ নাম
মহাভারতে শ্রীকৃষ্ণের সর্বোত্তম °হরে কৃষ্ণ° নাম শ্রীল নরোত্তম দাস ঠাকুর রচিত ‘শ্রীকৃষ্ণের অষ্টোত্তর শতনাম’ হতে আমরা প্রায় সকলেই জানি, ভ্রাতা বলরাম শ্রীকৃষ্ণকে ‘হরে কৃষ্ণ’ নামে ডাকতেন। হরে কৃষ্ণ নাম রাখে প্রিয় বলরাম। ললিতা রাখিল নাম দূর্ব্বাদল শ্যাম। শ্রীকৃষ্ণের এ ‘হরে কৃষ্ণ’ নাম সমগ্র জগতে অতি সমাদৃত। মহাভারতে বহুবার এ নামে শ্রীকৃষ্ণকে স্তব স্তুতি করা হয়েছে। ভগবানের এ দিব্য নাম উচ্চারণে কলিকালে জীব মাত্রেরই উদ্ধার হয়। তাই কলিকালের তারকব্রহ্ম মহামন্ত্রও শুরু হয়েছে ‘হরে কৃষ্ণ’ নামোচ্চারণে। হরে কৃষ্ণ নাম মাহাত্ম্য পদ্মপুরাণাদি নানাবিধ শাস্ত্রে আছে, এগুলো আমরা পরবর্তী পর্বগুলোতে দেখবো। অনেকের ধারণা, ‘হরে কৃষ্ণ’ নামটি বৈষ্ণব কবিদের কল্পিত নাম, শাস্ত্রে উল্লেখ নেই। তাদের এ ধরনের ভ্রান্তির বিপরীতে আজ আমরা মহাভারত হতে দিব্য ‘হরে কৃষ্ণ’ নামের উল্লেখ আছে এমন কয়েকটি প্রমাণ নিবেদন করবো। মহাভারতের দ্রোণ-মহাপর্বে শ্রীকৃষ্ণকে নানাভাবে স্তব স্তুতি করা হয়েছে। সেখানে শ্রীকৃষ্ণের প্রণাম মন্ত্রে তাকে ‘হরে কৃষ্ণ’ নামে সম্বোধন করা হয়েছে। নমস্তে দেবদেবেশ সনাতন বিশাতন। বিষ্ণো জিষ্ণো ‘হরে কৃষ্ণ’ বৈকুন্ঠ পুরুষোত্তম।। ( মহাভারত, দ্রোণপর্ব ৭৩।১৮ ) বঙ্গানুবাদ: “হে বিষ্ণু! হে জিষ্ণু! হে ‘হরে কৃষ্ণ’! হে বৈকুন্ঠ! হে পুরুষোত্তম! তুমি দেবদেবেশ অর্থাৎ দেবতাদের দেবতা শিবেরও ঈশ্বর, তুমিই সনাতন, তুমিই বিশাতন, তোমাকে নমস্কার।” . মহাভারতের খিলপর্বে পৌন্ড্রক যুদ্ধকালে ভগবানের ‘হরে কৃষ্ণ’ নামোচ্চারণ করে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিলেন, সে যুদ্ধে ভগবান স্বয়ং তাকে সাযুজ্য মুক্তি প্রদান করেন। যদি শক্তো ‘হরে কৃষ্ণ’ দারয়েদং মহাস্পদম্ । ইত্যুক্ত্বা তচ্ছতগুণং ভ্রামযিত্বা মহাবলঃ।। ( মহাভারত, খিলপর্ব্ব-হরিবংশ, ভবিষ্যপর্ব, ১০১।১৫ ) বঙ্গানুবাদ: যদি শক্তি থাকে তবে, হে হরে কৃষ্ণ! এই মহাস্পদ অস্ত্র ছিন্ন করো।’ এ বলে পন্ড্রক মহাবলশালী অস্ত্রটি শতবার ঘুরিয়ে নিক্ষেপ করলেন। . মহাভারতের খিলপর্ব হরিবংশে ঘন্টাকর্ণ নামের এক পিশাচের উপাখ্যান আছে। জীবনের শুরুতে সে মুক্তি লাভের আকাঙ্ক্ষায় শিবের তপস্যা করেছিলেন। কিন্তু শিব উপস্থিত হয়ে তাকে বলেন, ‘মুক্তিদাতা কেবল মুকুন্দ। আমি তোমাকে মুক্তি দিতে পারবো না। অন্য যা কিছু চাও আমি তোমাকে দিবো, কিন্তু মুক্তি পেতে হলে তোমাকে মুকুন্দের নাম জপ করে তপস্যা করতে হবে হবে।’ তখন থেকে ঘন্টাকর্ণ সদা সর্বদা শ্রীকৃষ্ণের নামোচ্চারণ ও লীলামহিমা স্মরণ করে তপস্যা করতে থাকেন। তার দৃঢ়ভক্তিতে সন্তুষ্ট হয়ে স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ উপস্থিত হলে তিনি ‘হরে কৃষ্ণ’ নামোচ্চারণে তাঁর সম্মুখে আনন্দে উদ্দাম নিত্য করেছিলেন। নমো নমো ‘হরে কৃষ্ণ’ যাদবেশ্বর কেশব । প্রত্যক্ষং চ হরেস্তত্র ননর্ত বিবিধং নৃপ ।। ( মহাভারত,হরিবংশ, ভবিষ্যপর্ব ৮২।৪৩ ) বঙ্গানুবাদ: “হে ‘হরে কৃষ্ণ’, হে যাদবেশ্বর, হে কেশব! আমি আপনাকে বারংবার প্রণাম জানাই।” হে রাজন! এ বলে বলে ঘন্টাকর্ণ ভগবান শ্রীহরির সম্মুখে বিবিধ নৃত্য করতে থাকলেন। . এভাবে মহাভারতের অসংখ্য স্থানে ভগবানের দিব্য ‘হরে কৃষ্ণ’ নামের উল্লেখ আছে, যা উচ্চারণে মানব জীবন সফল হয়, জন্ম সফল হয়, সকল উদ্দেশ্য সাধিত হয়, অন্তিমে শ্রীহরি প্রাপ্তি ঘটে। তাই মৃত্যুশয্যায় ভীষ্মদেব যুধিষ্ঠিরকে বৈষ্ণবধর্ম সম্পর্কিত জ্ঞান দানের পর উপদেশ দিয়েছিলেন, তিনি যেন সর্বোত্তম নাম- কৃষ্ণ নাম জপ করে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেবা করেন। ভীষ্ম উবাচ- এতত্তে কথিতং রাজন্ ! বিষ্ণুতত্ত্বমনুত্তমম্ । ভজস্বৈনং বিশালাক্ষং জপন্ কৃষ্ণেতি সত্তম !।। ( মহাভারত, শান্তিপর্ব ২০৪।৭৭ ) বঙ্গানুবাদ: ভীষ্ম বলিলেন—’সাধুশ্রেষ্ঠ রাজা ! এই আমি তোমার নিকট সর্বশ্রেষ্ঠ বিষ্ণুতত্ত্ব বলিলাম। তুমি সর্বশ্রেষ্ঠ নাম- কৃষ্ণ নাম জপ করিতে থাকিয়া এই বিশালনয়ন কৃষ্ণের সেবা কর। . মহাভারতের ভীষ্মপর্বে শ্রীমদ্ভগবদগীতাতেও ভগবানের নাম কীর্তনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে- সততং কীর্তয়ন্তো মাং যতন্তশ্চ দৃঢ়ব্রতাঃ। নমস্যন্তশ্চ মাং ভক্ত্যা নিত্যযুক্তা উপাসতে।। ( মহাভারত, ভীষ্মপর্ব, ৩৩।১৪; শ্রীমদ্ভগবদগীতা ৯।১৪ ) বঙ্গানুবাদ: যারা দৃঢ়ব্রতী ও যত্নশীল মহাত্মারা সর্বদা আমার কীর্তন করে এবং আমাকে প্রণাম করে নিরন্তর যুক্ত হয়ে ভক্তি সহকারে আমার(শ্রীকৃষ্ণের) উপাসনা করে। শাস্ত্রীয় রেফারেন্সগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে গীতাপ্রেস গোরক্ষপুর প্রকাশনী, বিশ্ববাণী প্রকাশনী ও নবভারত পাবলিশার্স এডিশান হতে। BORI CRITICAL EDITION এও একই শ্লোকগুলো বিদ্যমান। অন্যান্য এডিশানগুলোতে অধ্যায়ভেদে বিদ্যমান। সকল কৃতিত্ব মহাভারতের রচয়িতা শ্রীব্রহ্ম-মাধ্ব-গৌড়ীয় সম্প্রদায়ের পরমারাধ্য আচার্য্য শ্রীকৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস ও তার অনুগামী আচার্যবর্গের। হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে। হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।। [ বি:দ্র: স্বধর্মম্-এর অনুমোদন ব্যাতীত এই গবেষণামূলক লেখার কোনো অংশ পুনরুৎপাদন, ব্যবহার, কপি পেস্ট নিষিদ্ধ। স্বধর্মম্-এর সৌজন্যে শেয়ার করার জন্য উন্মুক্ত ] নিবেদক- ° স্বধর্মম্: প্রশ্ন করুন | উত্তর পাবেন °
ইসকনে নারী পুরুষের মধ্যে কেমন সম্পর্কের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে?
এই জগতের কল্যাণের স্বার্থে কৃষ্ণকৃপাশ্রীমূর্তি শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ এই স্বর্ন সংস্থা স্থাপন করছেন। প্রভুপাদের শিক্ষার একমাত্র আঁধার ছিল জীবনের সকল কার্যে জড় বিষয় পরিত্যাগ করে পারমার্থিক পথনির্দেশ অনুসরণ করা হবে। দেহের কোনো পার্থক্য থাকছে না, “হোক এই দেহটি কোনো নারী অথবা পুরুষের” আমরা সকলেই আত্মা যদি আমরা পারমার্থিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি। কিন্তু প্রকৃতির নির্দেশ অনুসারে শারীরিক ও মানসিক দৃষ্টিকোণ থেকে পুরুষ এবং নারীকে ভিন্ন ভিন্নভাবে তৈরি করা হয়েছে। প্রকৃতির বিধি অনুসারে নারীরা সাধারণত বেশিরভাগ আবেগপ্রবণ হয়ে থাকেন, ভগবান তাদের এই বিশেষ গুণটি প্রদান করেছেন যে তারা নিজেদের স্বজন হোক পিতা-মাতা, স্বামী অথবা নিজের সন্তানদের অধিক ভালোবাসার সাথে স্বাচ্ছন্দে রাখতে পারেন। এবং পুরুষরা প্রাকৃতিকভাবে শারীরিক দিক থেকে অধিক শক্তিশালী, রক্ষক, উপার্জনকারী, তার শরণাগত থাকা সকলকে রক্ষা করা। প্রভুপাদ যখন আমেরিকায় গিয়েছেন তখন তিনি দেখছিলেন যে নারীরা পুরুষদের সাথে সমান অধিকার নিয়ে বেশি সচেতন, তারাও চাকরি করছে। তখন প্রভুপাদ সেইভাবেই প্রচার করেছেন তিনি কখনই তাদের বাধা দেননি চাকরি বা অন্যান্য বিষয়ে। তিনি তাদের চারটি বিধিনিষেধ দিয়েছিলেন। যা আমরা সকলেই জানি। এরমধ্যে একটি প্রধান হচ্ছে অবৈধ সঙ্গ বর্জন করা। এবার মূল বিষয়ে আসছি, শ্রীল প্রভুপাদ চেয়েছিলেন এমন একটি সংস্থা হবে যেখানে নারী পুরুষ উভয়ই সমানভাবে কৃষ্ণভাবনামৃতের আশ্রয় গ্রহণ করবে এবং জগতের কল্যাণের স্বার্থে সেই বৈদিক সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসার করবে। কিন্তু এখনকার বর্তমান সমাজে কিছু ছেলেমেয়েরা এই প্রচার ও প্রসারের নাম দিয়ে অবাধে মেলামেশা করছে। অনেকে এটাকে কৃষ্ণভাবনাময় সম্পর্ক নামক আখ্যা দিয়ে থাকেন যা তথাকথিত বয়ফ্রেন্ড, গার্লফ্রেন্ড অথবা বেস্টফ্রেন্ড হিসেবেও পরিচিত। যা কখনোই প্রভুপাদের দৃষ্টিকোণ ছিল না। শ্রীল প্রভুপাদ তার ১৭ নভেম্বর, ১৯৭১, দিল্লিতে একটি প্রবচনে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন: – বিবাহ করা অপরিহার্য। আমাদের সংস্থার বিষয়ে বিবেচনা করা হলে, আমরা আমাদের সংস্থায় কাউকে বন্ধু, গার্লফ্রেন্ড বা বয়ফ্রেন্ড হিসেবে থাকার স্বীকৃতি দেই না। না। তাদের অবশ্যই বিবাহিত হতে হবে এবং এই ছেলে-মেয়েরা, বিবাহিত হওয়ার পর, তারা সুন্দরভাবে কৃষ্ণভাবনামৃত প্রচার করছে। আমার সমস্ত শিষ্য যারা বিবাহিত, তারা সন্ন্যাসীর চেয়ে বেশি প্রচারকার্য করছে। অর্থাৎ এই কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘে দুজন সম্পর্ক বিহীন পুরুষ নারী কখনোই অবাধে মেলামেশা করতে পারবে না। তাদের অবশ্যই কোনো বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। এটাই আমাদের বৈদিক সংস্কৃতি। কিন্তু আমরা যদি পাশ্চাত্য সংস্কৃতি অনুসরণ করি এবং এই কৃষ্ণভাবনামৃতের নাম দিয়ে অবৈধ সঙ্গ করি তাহলে তা হচ্ছে প্রতারণার স্বরূপ। শ্রীল প্রভুপাদ প্রায়শই বৈদিক সংস্কৃতি এবং পাশ্চাত্য সংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্য বর্ণনা করেছেন। প্রভুপাদ তখনকার সময় উল্লেখ করে বলছিলেন- “বৈদিক সংস্কৃতি এতই কঠোর ছিল যে তুমি তার (নারীর) দিকে তাকাতেও পারবে না, তার সাথে কথা বলার বা কিছু প্রস্তাব করার বিষয়ে প্রশ্নই আসে না।” এতেই বোঝা যায় পুরুষরা তাদের সাথে কথা বলা তো দূরের কথা তাদের দিকে তাকাতে পারতোনা। তাহলে কৃষ্ণভাবনামৃতের এই প্রচার এত সহজ করে দেওয়ার পরেও কেনো এই অবৈধ সঙ্গে লিপ্ত হচ্ছি তাও নিজের ইন্দ্রিয়তৃপ্তির জন্য। শ্রীল প্রভুপাদ আরো উল্লেখ করেছেন যে, পতিব্রতা পত্নী হচ্ছেন তিনি, যাঁর বিবাহের পূর্বে কোন পুরুষের সঙ্গে কোন সম্পর্ক ছিল না। স্ত্রীদের যদি যৌবনে পুরুষদের সঙ্গে মেলামেশা করার স্বাধীনতা দেওয়া হয়, তা হলে তার সতীত্ব বজায় রাখা অত্যন্ত কঠিন হয়। সাধারণত তাদের সতীত্ব থাকে না। আগুনের সামনে মাখন আনলে তা গলবেই। স্ত্রী হচ্ছে আগুনের মতো এবং পুরুষ মাখনের মতো। ~শ্রীমদ্ভাগবত ৪.২৬.১৬ ভক্তিবেদান্ত তাৎপর্য। সাধারণত বিবাহিতা স্ত্রী ব্যতীত অন্য কারও সঙ্গে পুরুষের যৌনসঙ্গে লিপ্ত হওয়া উচিত নয় এবং শাস্ত্র বিরুদ্ধ। বৈদিক বিধান অনুসারে, অপরের স্ত্রীকে মাতৃবৎ দর্শন করা উচিত, এবং মাতা, ভগিনী ও কন্যার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। কেউ যদি পরস্ত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়, তা হলে তা মায়ের সঙ্গে যৌনসঙ্গে লিপ্ত হওয়ার মতো বলে বিবেচনা করা হয়। সেই আচরণ অত্যন্ত পাপময়। স্ত্রীলোকের ক্ষেত্রেও সেই নিয়ম বলবৎ রয়েছে, কোন স্ত্রী যদি তার পতি ব্যতীত অন্য কোন পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়, তা হলে সেই সম্পর্ক পিতা অথবা পুত্রের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার মতো। ~শ্রীমদ্ভাগবত ৫.২৬.২০ ভক্তিবেদান্ত তাৎপর্য। শ্রীল প্রভুপাদ স্পষ্ট বলে দিয়েছেন ইন্দ্রিয়তর্পণ করার জন্যে এসব অবাধে মেলামেশা করা চলবে না। যদি কোনো পুরুষ বা নারী এভাবে অবাধে মেলামেশা করে তবে আগুনের ন্যায় নারীদের সম্মুখে পুরুষের ন্যায় ঘি অবশ্যই গলবে। এবং একসময় তারা অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হবে। তখন একজন নারীর সতীত্ব বজায় রাখা কঠিন হবে। এখন প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে কি প্রভুপাদ নারীদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছেন? না একদমই না। প্রথমত এসব অবাধে মেলামেশা কখনোই স্বাধীনতা হতে পরে না। কিন্তু প্রভুপাদ প্রচারে কঠোর নিয়ম অনেকটাই শিথিল করেছেন। যেমন আমি প্রথম দিকেই বলেছি প্রভুপাদ যখন তিনি আমেরিকায় প্রচারে যান তখন তিনি মাতাজীদের চাকরি করায় বাধা দেননি। তিনি বলেছেন এর মধ্যেই তোমরা কৃষ্ণভাবনামৃত প্রচার করবে, কিছু সীমানা বজায় রেখে। তিনি অনেকটাই শিথিল করেছিলেন। তখনকার সময়ে তিনি মাতাজীদের অনেক মন্দিরের অধ্যক্ষের পদ দিয়ে গিয়েছিলেন। Some words on this topic – একটি ঘটনায় দেখা যায় প্রচারকালে প্রভুপাদ বিভিন্ন ভক্তদের মাঝে কথোপকথনে তিনি একটি ভূ-গোলক রেখে সেই নকশা থেকে তাদের মাঝে প্রচারের জন্য দেশের বিভক্তি করেছিলেন, এবং বলছিলেন তুমি এই দেশে যাবে, তুমি ওই দেশে যাবে ওখানে গিয়ে প্রচার করবে। পেছনে কিছু মাতাজী শিষ্যরাও ছিলেন। তারা প্রভুপাদ কে জিজ্ঞাসা করছিলেন, প্রভুপাদ আমরা কি কিছু পাবো না। তখন প্রভুপাদ বলছেন- না না তোমরা এই দেশটা নাও প্রচারের জন্য। যেনো তিনি দেশ স্বরূপ প্রসাদ বিতরণ করছেন। এবং আমরা দেখতে পাই যে প্রভুপাদের শিষ্যগণ ঠিক কিভাবে বিভিন্ন দেশে নগরে গ্রামে প্রচার করেছিলেন। এখন পুরো বিশ্বে সেই প্রচার প্রসিদ্ধ। এমনকি প্রভুপাদ তাঁর শিষ্যাদের নিজের পূত্রীস্বরূপ দেখতেন, তাই তাদের মধ্যে কোনো বিভাজন করেননি। আমি কিছুকাল পূর্বেই প্রভুপাদের একজন শিষ্যা শ্রীমতী মালতি মাতাজীর প্রভুপাদ স্মরণামৃত তে শুনছিলাম, তিনি কিছু ঘটনা উল্লেখ করছিলেন:- তৎকালীন মায়াপুর তখন মায়াপুরে ভক্তদের থাকার জায়গা অনেকটাই সংকীর্ণ ছিল মন্দির ছিল না বললেই চলে। তখন মালতি মাতাজী ভাবছিলেন “এমন স্থানে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।” তিনি ভাবছিলেন আমি প্রভুপাদের সাথে কথা বলে এখন থেকে অন্যস্থানে চলে যাবেন প্রচারে। একদিন প্রভুপাদ ও তাঁর গুরু ভ্রাতারা প্রসাদ আস্বাদন করছিলেন। মালতি মাতাজী তাদের সকলকে পরিবেশন করছিলেন।যখন মাতাজী প্রসাদ নিয়ে যাচ্ছেন তখন হটাৎ প্রভুপাদ তার দিকে আঙুল দিয়ে তাঁর গুরুভ্রাতাদের দেখাচ্ছিলেন যে “এই দেখো ও আমার মেয়ে, তোমরা জানো সে আমাকে কতটা ভালোবাসে সে আমার জন্য নিজের জীবন দিতে পারবে এবং আমি ওর জন্য নিজের গলা কাটাতেও প্রস্তুত।” তখন মালতি মাতাজী হটাৎ আলাদা স্থানে গিয়ে কান্না শুরু করলেন- “প্রভুপাদ আমার জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত আর আমি এটা কি চিন্তা করছিলাম।” তখন তিনি ঠিক করলেন যা কিছুই হোক তিনি প্রভুপাদকে ছেড়ে এই মায়াপুর কে ছেড়ে কোথাও যাবেন না। এবং প্রভুপাদ পুরুষের কথাও উল্লেখ্য করছেন যে, শ্রীমদ্ভাগবতে উল্লেখ রয়েছে যদি কোনো পুরুষ কোনো নারীর দিকে কুদৃষ্টিতে তাকায় তাহলে তা ধর্ষনের সমতুল্য। প্রভুপাদ আরো বলেছেন, যদি কোনো পুরুষ চারটি বিধিনিষেধ