গর্ভপাত বা এবরশন কি অপরাধ?
গর্ভপাত বা এবরশন কি অপরাধ? এ সম্পর্কে সনাতন ধর্মে কি বলা হয়েছে ? গর্ভপাত বা গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করা ভয়ানক অপরাধ, এ সম্পর্কে গরুড় পুরাণে, উত্তরখণ্ডের ৫ম অধ্যায়ে ৪নং শ্লোকে বলা হয়েছে, “গর্ভপাতী চ পুলিন্দো রোগবান্ ভবেন্” অর্থাৎ যে ব্যক্তি গর্ভপাত তথা গর্ভের বাচ্চা-নষ্ট করে ঐ পাপী পরবর্তী জন্মে নিম্নযোনীতে জন্মগ্রহণ করে বিভিন্ন রোগে নিমজ্জিত থাকে। এ বিভৎস হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে পরাশর স্মৃতিতে বলা হয়েছে: যৎ পাপং ব্রহ্মহত্যায়া দ্বিগুণং গর্ভপাতনে। প্রায়শ্চিত্তং ন তস্যাস্তি তস্যস্ত্যাগো বিধিয়তে।। [ পরাশর স্মৃতি ৪।২০ ] অনুবাদ: ব্রহ্মহত্যায় যে পাপ হয়, গর্ভপাতে তার দ্বিগুণ পাপ হয়। এ পাপের কোন প্রায়শ্চিত্ত নেই। যে গর্ভপাত করাবে তাকে অবশ্যই সমাজ থেকে ত্যাগ করতে হবে। তাই গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করার মতো মহাপাপ কখনোই করা উচিত নয়। ।। হরে কৃষ্ণ ।। নিবেদক- ° স্বধর্মম্: প্রশ্ন করুন | উত্তর পাবেন °
একাদশী কি ও কেন?
↔️ একাদশী Vs রোজা ↔️ সবার প্রতি কৃষ্ণপ্রীতি ও ভালোবাসা। আমরা বিশেষ করে বাংলাদেশী হিন্দুরা একাদশী ব্রত পালনকালে যখন সংখ্যাগুরু মুসলমান সিনিয়র-জুনিয়র, বন্ধুবান্ধবদের কাছে থেকে একাদশী নিয়ে এক ধরনের ব্যাঙ্গাত্মক বাক্য ব্যবহার করতে শুনি। তাদের এই বিভ্রান্তিকর মন্তব্যের দ্বারা অনেক হিন্দুরা লজ্জায় পড়ে যান। আজকের এই লিখাটি ঐ সমস্ত বিভ্রান্তি দূর করতে একটু হলেও সাহায্য করবে। 👤জনৈকঃ “তোমরা তো খেয়ে দেয়ে একাদশী উপবাস থাকো। আমাদের রোজা দেখছো একদম কিছু না খেয়ে সারাদিন পার করতে হয়। খেয়ে দেয়ে উপবাস এটা হইলো কিছু” 🧘♂️পি. চৈতন্যচন্দ্র দাসঃ আপনার এবং আপনাদের সংস্কৃতিকে সম্মান জানিয়ে বলছি শুনুন, একাদশী ব্রত ও রোজাকে কোনো মতেই কম্পেয়ার করা যায় না। যারা মিলাতে চায় তারা আসলেই বোকা। তাই প্রথমত বলতে চাই আমরা হিন্দুরা বেদের নির্দেশিত ধর্ম পালন করি যা পরম সত্য। আধুনিক বিজ্ঞান ক্রমেই সেই সত্যের কাছে পৌঁছাচ্ছে মাত্র। একাদশী কেবল এক ব্রতের নাম নয়। এটি এক মহাজাগতিক বিষয়। এটি কেবল একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী কিংবা সম্প্রদায় বিশেষের বর্ষ ক্যালেন্ডারের মতো নয় যে, বছরের কোনো এক মাসেই কেবল পালিত হবে। 👉 একাদশী মূলত কি? একাদশী একটি তিথি, যা প্রত্যেক মাসে দুইবার করে আবর্তিত হয়। আমরা প্রত্যেকেই জানি, ০১ দিন = ০৮ প্রহর ০১ সপ্তাহ = ০৭ দিন ০১ মাস = ০২ পক্ষ ০১ পক্ষ = ১৫ দিন/তিথি উক্ত দুটি পক্ষের নাম হল- শুক্লপক্ষ ও কৃষ্ণপক্ষ। ০১টি পক্ষে যে ১৫টি তিথি থাকে তার ভিন্ন ভিন্ন নাম রয়েছে। যেমন- ০১. প্রতিপদ, ০২. দ্বিতীয়া, ০৩. তৃতীয়া, ০৪. চতুর্থী ০৫. পঞ্চমী ০৬. ষষ্ঠী ০৭. সপ্তমী ০৮. অষ্টমী ০৯. নবমী ১০. দশমী ১১. একাদশী ১২. দ্বাদশী ১৩. ত্রয়োদশী ১৪. চতুর্দশী ১৫.পূর্ণিমা/অমাবস্যা (শুক্লপক্ষ/কৃষ্ণপক্ষ) এখন দেখেন তো এই পৃথিবীতে পুর্নিমা ঘটে কি না? অমাবস্যা হয় কি না? পূর্ণিমা/অমাবস্যার সাথে সমুদ্রের জোয়ার-ভাটা সম্পর্কিত কি না? 👤জনৈকঃ হ্যাঁ। 🧘♂পি. চৈতন্যচন্দ্র দাসঃ হুম, এর সবই বাস্তব এবং বিজ্ঞানসম্মত। এমন তো নয় যে পূর্ণিমার চাঁদ কেবল হিন্দুদের আলোকিত করে 😀, আর অমাবস্যার অন্ধকার কেবল মুসলমান, খ্রিস্টান, ইহুদি ইত্যাদিদের অন্ধকারাচ্ছন্ন রাখে 😐! তাহলে একাদশী তিথিও তো সবার জন্যই প্রযোজ্য ঠিক যেমনটা পূর্ণিমা থেকে অমাবস্যা সবার জন্য সমানভাবে আবর্তিত হয়। অতএব, একাদশী তিথি সবার জন্য প্রযোজ্য এটা চাক্ষুষ প্রমাণিত বিজ্ঞান। এটি তেমন কোনো রকেট সাইন্স নয় যে বুঝতে অসুবিধা হবে। 👤জনৈকঃ 🤐 🧘♂️পি. চৈতন্যচন্দ্র দাসঃ এবার আসুন, অন্যান্য এতোগুলো তিথি থাকলেও প্রত্যেক মাসে আসা নিয়মিত দুটি একাদশী তিথি’তেই কেন আমাদের ব্রত পালন করা আবশ্যক এই বিষয়ে কিছু জানা যাক। 👉 বৈদিক শাস্ত্রে একাদশী ব্রত উৎপত্তি বিষয়ে পদ্মপুরাণ, ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ, বরাহপুরাণ, স্কন্দপুরাণ ও বৈষ্ণবস্মৃতিরাজ শ্রীহরিভক্তিবিলাস আদি গ্রন্থে বর্ণিত আছে। ⚠️ একাদশীর আবির্ভাবঃ পদ্মপুরাণে একাদশী প্রসঙ্গে বলা হয়েছে একসময়- “জৈমিনি ঋষি তাঁর গুরুদেব মহর্ষি ব্যাসদেবকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে গুরুদেব! একাদশী কি? একাদশীতে কেন উপবাস করতে হয়? একাদশী ব্রত করলে কি লাভ? একাদশী ব্রত না করলে কি ক্ষতি? এ সব বিষয়ে আপনি দয়া করে বলুন। মহর্ষি ব্যাসদেব তখন বলতে লাগলেন-সৃষ্টির প্রারম্ভে পরমেশ্বর ভগবান এই জড় সংসারে স্থাবর জঙ্গম সৃষ্টি করলেন। মর্ত্যলোকবাসী মানুষদের শাসনের জন্য একটি পাপপুরুষ নির্মাণ করলেন। সেই পাপপুরুষের অঙ্গগুলি বিভিন্ন পাপ দিয়েই নির্মিত হল। পাপপুরুষের মাথাটি ব্রহ্মহত্যা পাপ দিয়ে, চক্ষুদুটি মদ্যপান, মুখ স্বর্ণ অপহরণ, দুই কর্ণ-গুরুপত্নী গমন, দুই নাসিকা-স্ত্রীহত্যা, দুই বাহু-গোহত্যা পাপ, গ্রীবা-ধন অপহরণ, গলদেশ-ভ্রুণহত্যা, বক্ষ-পরস্ত্রী-গমন, উদর-আত্মীয়স্বজন বধ, নাভি-শরণাগত বধ, কোমর-আত্মশ্লাঘা, দুই উরু-গুরুনিন্দা, শিশ্ন-কন্যা বিক্রি, মলদ্বার-গুপ্তকথা প্রকাশ পাপ, দুই পা- পিতৃহত্যা, শরীরের রোম-সমস্ত উপপাতক। এভাবে বিভিন্ন সমস্ত পাপ দ্বারা ভয়ঙ্কর পাপপুরুষ নির্মিত হল। পাপপুরুষের ভয়ঙ্কর রূপ দর্শন করে ভগবান শ্রীবিষ্ণু মর্ত্যের মানব জাতির দুঃখমোচন করবার কথা চিন্তা করতে লাগলেন। একদিন গরুড়ের পিঠে চড়ে ভগবান চললেন যমরাজের মন্দিরে। ভগবানকে যমরাজ উপযুক্ত স্বর্ণ সিংহাসনে বসিয়ে পাদ্য অর্ঘ্য দিয়ে যথাবিধি তাঁর পূজা করলেন। যমরাজের সঙ্গে কথোপকথনকালে ভগবান শুনতে পেলেন দক্ষিণ দিক থেকে অসংখ্য জিবের আর্তক্রন্দন ধ্বনি। প্রশ্ন করলেন-এ আর্তক্রন্দন কেন? যমরাজ বললেন, হে প্রভু, মর্ত্যের পাপী মানুষেরা নিজ কর্মদোষে নরকযাতনা ভোগ করছে। সেই যাতনার আর্ত চীৎকার শোনা যাচ্ছে। যন্ত্রণাকাতর পাপাচারী জীবদের দর্শন করে করুণাময় ভগবান চিন্তা করলেন-আমিই সমস্ত প্রজা সৃষ্টি করেছি, আমার সামনেই ওরা কর্মদোষে দুষ্ট হয়ে নরক যাতনা ভোগ করছে, এখন আমিই এদের সদগতির ব্যবস্থা করব। ভগবান শ্রীহরি সেই পাপাচারীদের সামনে একাদশী তিথি রূপে এক দেবীমুর্তিতে প্রকাশিত হলেন। সেই পাপীদেরকে একাদশী ব্রত আচরণ করালেন। একাদশী ব্রতের ফলে তারা সর্বপাপ মুক্ত হয়ে তৎক্ষণাৎ বৈকুন্ঠ ধামে গমন করল। শ্রীব্যাসদেব বললেন, হে জৈমিনি! শ্রীহরির প্রকাশ এই একাদশী সমস্ত সুকর্মের মধ্যে শ্রেষ্ট এবং সমস্ত ব্রতের মধ্যে উত্তম ব্রত। কিছুদিন পরে ভগবানের সৃষ্ট পাপপুরুষ এসে শ্রীহরির কাছে করজোড়ে কাতর প্রার্থনা জানাতে লাগল-হে ভগবান! আমি আপনার প্রজা! আমাকে যারা আশ্রয় করে থাকে, তাদের কর্ম অনুযায়ী তাদের দুঃখ দান করাই আমার কাজ ছিল। কিন্তু সম্প্রতি একাদশীর প্রভাবে আমি কিছুই করতে পারছি না, বরং ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছি। কেননা একাদশী ব্রতের ফলে প্রায় সব পাপাচারীরা বৈকুন্ঠের বাসিন্দা হয়ে যাচ্ছে। হে ভগবান, এখন আমার কি হবে? আমি কাকে আশ্রয় করে থাকব? সবাই যদি বৈকুন্ঠে চলে যায়, তবে এই মর্ত্য জগতের কি হবে? আপনি বা কার সঙ্গে এই মর্ত্যে ক্রীড়া করবেন? পাপপুরুষ প্রার্থনা করতে লাগল- হে ভগবান, যদি আপনার এই সৃষ্ট বিশ্বে ক্রীড়া করবার ইচ্ছা থাকে তবে, আমার দুঃখ দূর করুন। একাদশী তিথির ভয় থেকে আমাকে রক্ষা করুন। হে কৈটভনাশন, আমি একমাত্র একাদশীর ভয়ে ভীত হয়ে পলায়ন করছি। মানুষ, পশুপাখী, কীট-পতঙ্গ, জল-স্থল, বন-প্রান্তর, পর্বত- সমুদ্র, বৃক্ষ, নদী, স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল সর্বত্রই আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু একাদশীর প্রভাবে কোথাও নির্ভয় স্থান পাচ্ছি না দেখে আজ আপনার শরণাপন্ন হয়েছি। হে ভগবান, এখন দেখছি, আপনার সৃষ্ট অনন্ত কোটি ব্রহ্মান্ডের মধ্যে একাদশীই প্রাধান্য লাভ করেছে, সেইজন্য আমি কোথাও আশ্রয় পেতে পারছি না। আপনি কৃপা করে আমাকে একটি নির্ভয় স্থান প্রদান করুন। পাপপুরুষের প্রার্থনা শুনে ভগবান শ্রীহরি বলতে লাগলেন- হে পাপপুরুষ! তুমি দুঃখ করো না। যখন একাদশী তিথি এই ত্রিভুবনকে পবিত্র করতে আবির্ভুত হবে, তখন তুমি অন্ন ও রবিশস্য মধ্যে আশ্রয় গ্রহণ করবে। তা হলে আমার মূর্তি একাদশী তোমাকে বধ করতে পারবে না।” 👉 সবমিলিয়ে ছাব্বিশটি একাদশী রয়েছে। সাধারণত বার মাসে চব্বিশটি একাদশী। এইগুলি হচ্ছে- ১. উৎপন্না একাদশী ২. মোক্ষদা একাদশী ৩. সফলা একাদশী ৪. পুত্রদা একাদশী ৫. ষটতিলা একাদশী ৬. জয় একাদশী ৭. বিজয়া একাদশী ৮. আমলকী একাদশী ৯. পাপমোচনী একাদশী ১০. কামদা একাদশী ১১. বরুথিনী একাদশী ১২. মোহিনী একাদশী ১৩. অপরা একাদশী ১৪. নির্জলা একাদশী ১৫. যোগিনী একাদশী ১৬. শয়ন একাদশী ১৭. কামিকা একাদশী ১৯. অন্নদা একাদশী ১৮. পবিত্রা একাদশী ২০. পরিবর্তিনী বা পার্শ্ব একাদশী ২১. ইন্দিরা একাদশী ২২. পাশাঙ্কুশা একাদশী ২৩. রমা একাদশী ২৪. উত্থান একাদশী কিন্তু যে বৎসর পুরুষোত্তমাস, অধিমাস বা অনেকের মতে মলমাস থাকে, সেই বৎসর ২৫. পদ্মিনী ও ২৬. পরমা এই নামে আরও দুটি একাদশীর আবির্ভাব হয়। 🧘♂️পি. চৈতন্যচন্দ্র দাসঃ আসলে এতসব আপনার মাথার উপর দিয়ে যাবে। তবুও
সোমরস কি? সোমরস আর মদিরা বা সুরা কি এক?
সোমরস কি? সোমরস আর মদিরা বা সুরা কি এক? এ সম্পর্কে রসেন্দ্রচূড়ামণিতে বলা হয়েছে- পঞ্চাঙ্গযুত্পঞ্চদশচ্ছদাঢ্যা সর্পাকৃতিঃ শোণিতপর্বদেশা। সা সোমবল্লী রসবন্ধকর্ম করোতি একাদিবসোপনীতা। করোতি সোমবৃক্ষোহপি রসবন্ধবধাদিকম্। পূর্ণিমাদিবসানীতস্তযোবল্লী গুণাধিকা।। কৃষ্ণে পক্ষে প্রগলতি দলং প্রত্যহং চৈকমেকং। শুক্লেহপ্যেকং প্রভবতি পুনর্লন্বমানা লতাঃ স্যুঃ। তস্যাঃ কন্দঃ কলয়তিতরাং পূর্ণিমায়াং গৃহীতো। বদ্ধা সূতং কনকসহিতং দেহলোহং বিধত্তে।।ইয়ং সোমকলা লক্ষবেধী বদ্ধসূতেন্দ্রো নাম বল্লী পরমদুর্লভা। অনয়া প্রজায়তে।। [ রসেন্দ্রচূড়ামণি ৬।৬-৯] বঙ্গানুবাদ: সর্পের আকৃতির ন্যায় যার পনেরোটি পাতা, পাতা বেরোবার স্থানটি যার লালবর্ণ, পূর্ণিমার দিন সংগ্রহ করা এরই পঞ্চাঙ্গ (মূল, শাখা, পাতা, ফুল ও ফল) দ্বারা যুক্ত সোমবল্লী পারদকে বদ্ধ করে। পূর্ণিমার দিনে সংগ্রহ করা পঞ্চাঙ্গ (মূল, বল্কল, পাতা, ফুল ও ফল) যুক্ত সোমবৃক্ষও পারদকে সংযুক্ত করা, পারদকে ভস্মে পরিণত করা ইত্যাদি কাজ করে দেয়। কিন্তু সোমবল্লী এবং সোমবৃক্ষ-এই দুটির মধ্যে সোমবল্লী অধিক গুণসম্পন্ন। কৃষ্ণপক্ষে প্রতিদিন এই সোমবল্লীর একটি করে পাতা খসে যায় এবং শুক্লপক্ষে প্রতিদিন একটি করে নতুন পাতা গজায়। এইভাবে এই লতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। পূর্ণিমার দিন যদি এই লতার কন্দ বার হয়, তবে সেটি খুব ভালো হয়। ধুতরার সঙ্গে এই কন্দে আবদ্ধ পারদ শরীরকে লোহার মতো মজবুত করে এবং এর দ্বারা আবদ্ধ পারদ লক্ষবেধী হয় অর্থাৎ একগুণ বদ্ধ পারদ লক্ষগুণ লোহাকে সোনায় পরিণত করে। সোম নামক এই লতা অত্যন্ত দুর্লভ। সোমলতা নামক এই ওষধি গাছের রস থেকে তৈরি হয় সোমলতার রস বা সোমরস। সোমলতার কথা পাওয়া যায় আশ্বলায়ন শ্রৌতসূত্র (৫।১২)-তে যেখানে বলা হচ্ছে, সোমযাগে সোমলতা ছেঁচা হত। সোমলতা ও মদিরা এক নয়।শতপথ ব্রাহ্মণ (৫।১।২)-এ সরাসরিই মদ্যপান করতে নিষেধ করা হয়েছে। তাই সোমরস কোন মদিরা বা নেশাদ্রব্য নয়। ।। হরে কৃষ্ণ ।। [ বি:দ্র: স্বধর্মম্-এর অনুমোদন ব্যাতীত এই লেখার কোনো অংশ পুনরুৎপাদন, ব্যবহার, কপি পেস্ট নিষিদ্ধ। স্বধর্মম্-এর সৌজন্যে শেয়ার করার জন্য উন্মুক্ত ] নিবেদক- ° স্বধর্মম্: প্রশ্ন করুন | উত্তর পাবেন °
বিভীষণ !! যিনি ধর্মকে হৃদয়ে ধারন বা অধর্মকে ত্যাগ করার পর ওহ কেনো, নামটি অস্মানের সহিত নেওয়া হয়??
বিভীষণ !! যিনি ধর্মকে হৃদয়ে ধারন বা অধর্মকে ত্যাগ করার পর ওহ কেনো, নামটি অস্মানের সহিত নেওয়া হয়?? এর প্রধান দায় হিন্দুধর্মত্যাগী খ্রিস্টান কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের। তিনি তার তথাকথিত সাহিত্যগ্রন্থে ভগবান শ্রীরাম, লক্ষ্মণ, হনুমান, বিভীষণকে ভিলেইন; নারীর অপমানকারী রাবণকে দেশপ্রেমিক, তার পুত্র মেঘনাদকে মহাবীর এভাবে দেখিয়েছেন; ইমোশনাল প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছেন এবং পরিশেষে সেক্যুলার হিন্দুসমাজে বাহবা কুড়িয়েছেন। পরবর্তীতে তার অনুসরণে হিন্দু শাস্ত্রের ইতিবাচক চরিত্রদের ভিলেইন আর অসুরদের হিরো হিসেবে দেখানোর ট্রেন্ড শুরু হয়েছিল। তবে এর মধ্যে বিভীষণকে নিয়ে অপপ্রচার লোকমুখে বেশি প্রচলিত হয়েছে। বিভীষণ দেশদ্রোহী বা ঘরের শত্রু নন। তিনি শিক্ষা দিয়েছেন সবসময় সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে থাকতে, ভগবৎকেন্দ্রীক জীবনযাপন করতে। তিনি রাবণকে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেছেন কিন্তু রাবণ তাঁকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। তখন তিনি অন্তিম আশ্রয় পরমেশ্বর ভগবান শ্রীরামের আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। ।। হরে কৃষ্ণ ।। নিবেদক- ° স্বধর্মম্: প্রশ্ন করুন | উত্তর পাবেন °
ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের ইতিহাস মুছে ফেলার ব্যর্থ চেষ্টা কি সফল হবে?
ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের জয় হউক!ভক্ত শিরোমণি বজ্রংবলী হনুমানের জয় হউক! জগদ্গুরু শ্রীল প্রভুপাদের জয় হউক। বিষ্ণুবিদ্বেষী অসুরদের ভগবানের দিব্যনাম শ্রবণ কীর্তনের প্রতি স্বভাবতই অনিহা কাজ করে, এমনকি আমরা বৈদিক শাস্ত্রাদি সহ বর্তমান কলিযুগে স্বচক্ষেই দেখতে পাই অসুরেরা ভগবানের দিব্যনাম গ্রহণকারী ভক্তদের কিভাবে বাঁধা প্রদান করে, শারিরীক মানসিক অত্যাচার নিপীড়ন করে। কিন্তু ভগবান যেমন সনাতন-চিরন্তন, তাঁর সাথে সম্পৃক্ত সবকিছুই তেমনি সনাতন। যেমন ধরুন রাক্ষসের দল শ্রীরাম নামের ধ্বনি কোনোভাবেই সহ্য না করতে পেরে তাঁর বিরোধিতা করতো কিন্তু অবশেষে তাদের উদ্দেশ্য সফল হতো না। এভাবে আজকালও সেইসকল অসুরেরা যারা “জয় শ্রীরাম” ধ্বনি নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তারা উৎসন্নে যাবে। তাদের সকল প্রয়াস অচিরেই ব্যর্থতায় পরিপূর্ণ হবে। শুধু পরমেশ্বর ভগবান রামচন্দ্রের ভক্তদের উচিত দৃঢ়নিষ্ঠভাবে যেকোনো অবস্থাতেই হাল ধরে রাখা। এ প্রসঙ্গে বাল্মিকী রামায়ণ বালকাণ্ড দ্বিতীয় স্বর্গ ষড়ত্রিংশতি শ্লোকে প্রমাণ নিম্নরূপ 👇 যাবৎ স্থাস্যন্তি গিরয়ঃ সরিতশ্চ মহীতলে। তাবদ্ রামায়ণকথা লোকেষু প্রচরিষ্যতি।। “যতকাল এই পৃথিবীতে পর্বতসমূহ ও নদীসমূহ থাকবে ততকাল এই সংসারে (পৃথিবীতে) রামায়ণ কথা প্রচারিত থাকবে।” ❤️ জয় শ্রীরাম ❤️ আমাদের সাথেই থাকুন 👇 www.svadharmam.com
ধর্ম কি? সনাতন ধর্ম বলতে কি বোঝায়?
ধর্ম কি? সনাতন ধর্ম বলতে কি বোঝায়? ধর্ম: অনেকে ধর্ম বলতে বিশ্বাস বলে থাকেন কিন্তু সনাতন শাস্ত্র অনুসারে ধর্ম শব্দের অর্থ কখনো বিশ্বাস নয়। কারণ বিশ্বাস নিয়ত পরিবর্তনশীল। তাই যা পরিবর্তিত হয় তা কখনো ধর্ম হতে পারে না। ধর্ম শব্দটি একটি তৎসম বা সংস্কৃত শব্দ, যার উৎপত্তি √ধৃ ধাতু থেকে, ধৃ ধাতুর অর্থ ধারণ করা অথবা বহন করা। অর্থাৎ যাকে ধারণ বা বহন করা হয় সেটিই হল ধর্ম। এ জগতে প্রাণহীন স্থাবর এবং প্রাণযুক্ত অস্থাবর যা কিছু আমরা চোখে দেখছি সবকিছুরই ধর্ম রয়েছে। ধর্ম ব্যতীত বস্তু বা প্রাণীর কোন অস্তিত্ব থাকতে পারে না। যেমন, জলের ধর্ম হল তরলতা, জল তার তরলতা শক্তিকে বহন করছে। জল থেকে যদি তার তরলতা শক্তিকে বিভক্ত করা হয় তাহলে জলের কোন অস্তিত্ব থাকে না। ঠিক সেরুপ অগ্নি বা আগুন। আগুনের ধর্ম হল তাপ, আগুন তার তাপশক্তিকে বহন করছে। আগুন থেকে যদি তার তাপশক্তিকে বিভক্ত করা হয় তাহলে আগুনের কোন অস্তিত্ব থাকে না, তেমনই ঠিক এ জগতের সবকিছু। সুতরাং ধর্ম হল কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর গুণ বা ক্ষমতা, যা ঐ ব্যক্তি বা বস্তু থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায় না। ঠিক সেরুপ সনাতন শাস্ত্র অনুসারে ধর্ম শব্দের অর্থ হল পরমেশ্বর ভগবানের প্রতি জীবের ( মনুষ্য এবং দেবতাকূল) সেবাভাব, যা তার থেকে আলাদা করা যায় না। শ্রীমদ্ভাগবত ৬/৩/১৯ নং শ্লোকে বর্ণিত রয়েছে, “ধর্ম তু সাক্ষাদ্ভগবৎপ্রনীতং, অর্থাৎ ধর্ম সাক্ষাৎ পরমেশ্বর ভগবান দ্বারা প্রনীত বা নির্ধারিত আইন”। সুতরাং ধর্ম শব্দের অর্থ হল সনাতন শাস্ত্র অনুসারে পরমেশ্বরের দেয়া কিছু নির্দেশ বা আদেশ, যা মনুষ্য এবং দেবতাগণ যথাযথ ভাবে পালন করে পরমাত্মা ভগবানের প্রতি প্রেমময়ী সেবায় নিয়ত যুক্ত থাকতে পারেন। সনাতন ধর্ম: সনাতন শব্দের অর্থ হ’ল চিরন্তন বা শ্বাশ্বত, আবার চিরন্তন বা শ্বাশত শব্দের অর্থ হল যা পূর্বে ছিল, বর্তমানে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। সুতরাং সনাতন ধর্মের অর্থ হল এই জগৎ সৃষ্টির সূচনা থেকে বর্তমান কাল-অব্দি এবং ভবিষ্যতেও মনুষ্য এবং দেবতাগণের উপর সনাতন শাস্ত্রে উল্লেখিত পরমেশ্বর ভগবানের দেয়া এমন কিছু নির্দেশ যা যথাযথ ভাবে পালন করে পরমাত্মা ভগবানের প্রতি প্রেমময়ী সেবায় সর্বদা যুক্ত থাকতে পারে। অনেক শাস্ত্রজ্ঞানহীন পাষণ্ডী অল্প বিস্তর সনাতন শাস্ত্র পাঠ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার করছে যে, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যে সনাতন ধর্ম পালন করেন, সেই সনাতন ধর্মের কথা তাদের শাস্ত্রে নাকি লেখা নেই। অথচ রামায়ণ,অযোধ্যাকাণ্ড ৩০/৩৮ নং শ্লোকে বর্ণিত রয়েছে “তথা বর্তিতুমিচ্ছামি স হি ধর্ম সনাতন।” মনুস্মৃতি ৭/৯৮ নং শ্লোকে বর্ণিত রয়েছে ,”এষোহনুপষ্কৃত প্রোক্তো যোগঃ ধর্ম সনাতন।” এবং শ্রীমদ্ভাগবত ৩/১৬/১৮ নং শ্লোকে বর্ণিত রয়েছে, “ত্বত্তঃ সনাতনো ধর্মো রক্ষ্যতে তনুভিস্তব।” ।।হরে কৃষ্ণ।। সংকলন: শ্রীমান সদগুণ মাধব দাস [ বি:দ্র: স্বধর্মম্-এর অনুমোদন ব্যাতীত এই লেখার কোনো অংশ পুনরুৎপাদন, ব্যবহার, কপি পেস্ট নিষিদ্ধ। স্বধর্মম্-এর সৌজন্যে শেয়ার করার জন্য উন্মুক্ত ] নিবেদক- ° স্বধর্মম্: প্রশ্ন করুন | উত্তর পাবেন °
মনকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়?
মনকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়? মন সম্পর্কে অর্জুন পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে বললেন – হে কৃষ্ণ ! মন অত্যন্ত চঞ্চল, শরীর ও ইন্দ্রিয় আদির বিক্ষেপ উৎপাদক, দুর্দমনীয় এবং অত্যন্ত বলবান, তাই তাকে নিগ্রহ করা বায়ুকে বশীভূত করার থেকেও অধিকতর কঠিন বলে আমি মনে করি।– [গীতা ৬।৩৪ ] . পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মন কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এ সম্পর্কে বললেন- হে মহাবাহো ! মন যে দুর্দমনীয় ও চঞ্চল তাতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু হে কৌন্তেয় ! ক্রমশ অভ্যাস ও বৈরাগ্যের দ্বারা মনকে বশীভূত করা যায়।-[ গীতা ৬।৩৫ ] অর্থাৎ প্রতিদিন মালাতে নিয়মিত নির্দিষ্ট সংখ্যক হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপের অভ্যাস এবং শাস্ত্রীয় অনুশাসন মেনে চলার তথা চার নিয়ম (সত্যম্, শৌচম্, দয়া ও তপ) পালনের বৈরাগ্যের দ্বারা মন কে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। দয়া= আমিষাহার বর্জন না করলে দয়া নষ্ট হয়। তপ= সকল প্রকার নেশা বর্জন না করলে তপস্যা করার গুণ নষ্ট হয়। শৌচম্= অবৈধ যৌনসঙ্গ বর্জন না করলে শুচিতা গুণ নষ্ট হয়। সত্যম্= দ্যূতক্রীড়া বা জুয়া খেলা বর্জন না করলে সত্য গুণ নষ্ট হয়। এই ৪ নিয়ম পালনের বৈরাগ্য এবং হরে মহামন্ত্র জপের অভ্যাস দ্বারা মন কে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। নিবেদক- ° স্বধর্মম্: প্রশ্ন করুন | উত্তর পাবেন °
“জয় শ্রীরাম” কি কোনো রাজনৈতিক স্লোগান?
“জয় শ্রীরাম” কি কোনো রাজনৈতিক স্লোগান? না, এটি সকল সনাতনীদের সর্বজনীন স্লোগান। এ সম্পর্কে শ্রীমদবাল্মিকী রামায়ণে সুন্দরকাণ্ডের, ৪২ সর্গের ৩৩ শ্লোকে ভক্তশ্রেষ্ঠ হনুমান উচ্চস্বরে ঘোষণা করলেন, “জয়ত্যতিবলো রামো অর্থাৎ, প্রভু শ্রীরামের জয় হোক”। রামায়ণে আরো উল্লেখ রয়েছে, প্রভু শ্রীরামচন্দ্রের রাজত্বকালেও প্রজাদের মুখে কেবল শ্রীরামের জয়ধ্বনি শোনা যেতো- রামাে রামাে রাম ইতি প্রজানামভবৎ কথা। রামভূতং জগদভূদ্ রামে রাজ্যং প্রশাসতি।। [ শ্রীমদবাল্মিকী রামায়ণ, যুদ্ধকাণ্ড, ১২৮।১০২] বঙ্গানুবাদ: রামরাজ্যে প্রজাবর্গের মুখে-মুখে কেবল রাম, রাম নাম এবং রামকথাই শোনা যেত। অখিল রাজ্য রামময় হয়েই থাকতো। . পদ্মপুরাণে এ সম্পর্কে উল্লেখ রয়েছে – জয় রাঘব রামেতি জয় সূর্য কুলাঙ্গদঃ। জয় দাশরথে দেব জয়তাল্লোকনায়ক।। ইতি শূণ্বচ্ছুভাং বাচং পৌরানাং হর্ষিতাঙ্গিনাম্। রামদর্শনসচ্জাত পুলকোদ্ধেদশোভিনাম্।। [ পদ্মপুরাণ, পাতালখণ্ড, ২।৬৭,৬৮ ] বঙ্গানুবাদ: সকলেই সমস্বরে “জয় শ্রীরাঘব”, “জয় শ্রীরাম”, “জয় সূর্য বংশভূষণের জয়”, “জয় দশরথ নন্দন রাঘবের জয়”, “জয় লোকনায়ক রামচন্দ্রের জয়” ইত্যাদি প্রকারে রামচন্দ্রের জয় ঘোষণা করিতে লাগিল। অতএব “জয় শ্রীরাম” সনাতনীদের সর্বজনীন স্লোগান, এতে কোনো সন্দেহ নেই। ।। হরে কৃষ্ণ ।। নিবেদক- ° স্বধর্মম্: প্রশ্ন করুন | উত্তর পাবেন °
কোন দিকে মাথা রেখে ঘুমানো উচিত?
অনেকেই প্রশ্ন করেন দৈনন্দিন জীবনে প্রায়োগিক কিছু কি বৈদিক শাস্ত্রে আছে। কোন দিকে মাথা রেখে ঘুমানো উচিত ও কেন ঘুমানো উচিত? তাদের জন্য বিষ্ণুপুরাণ বর্ণনা দিচ্ছেন- “হে নৃপ! শোবার সময় সর্বদা দক্ষিণ বা পূর্ব দিকে মাথা করে শোবে। এর বিপরীত দিকে মাথা করলে রোগের উৎপত্তি হয়৷৷” (শ্রীবিষ্ণুপুরাণ: ৩/১১/১১৩) এখানে এটি কোনো এক তথাকথিত ধর্মের গতানুগতিক নিয়মের মতো বলা হয়নি, ঐদিকে মাথা দেওয়া যাবে না পাপ হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। ভাবা যায়! এটি কমপক্ষে পাঁচ হাজার বছর পূর্বের একটি বৈদিক বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব। আজকের আধুনিক বিজ্ঞানও বলছে পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠ উত্তর মেরুর দিকে ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে। অর্থাৎ, উত্তর মেরুর দিকে অনবরত একটা চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। তাই আমরা যখন উত্তর দিকে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছি তখন দীর্ঘক্ষণ উত্তর দিকে মাথা সমান্তরালভাবে থাকায় আমাদের শরীরেও সেই চাপ প্রভাব বিস্তার করে। এতে উচ্চরক্তচাপের মতো রোগব্যাধি দেখা দেয়। একবার ভেবে দেখুন এই একই কথা আমাদের বৈদিক শাস্ত্রে বহু পূর্ব হতেই নির্দেশিত রয়েছে। কিন্তু আমরা এসবের অনেক কিছুই কুসংস্কার ভেবে পালন করছি না। অতএব, আসুন লোকের কথায় বিভ্রান্ত না হয়ে স্বধর্মের আচরণবিধি অনুসরণ করি। ভূপৃষ্ঠ সরে যাওয়া নিয়ে আর্টিকেলটি পড়তে এই লিংকে ক্লিক করুন https://www.bigganchinta.com/physics/earth-magnetic-point সম্পাদনায়: প্রবীর চৈতন্য চন্দ্র দাস। [লেখার স্বত্ব স্বধর্মম্ কর্তৃক সংরক্ষিত। কেবল স্বধর্মম্ এর স্বত্ব উল্লেখ পূর্বক হুবহু কপি ও লিংক শেয়ারের জন্য অনুমোদিত।]
পরমাত্মার ইচ্ছা ছাড়া কোনো কিছু ঘটে না, তাহলে আমাদের পাপকর্মের জন্য পরমাত্মাই দায়ী?
বৈদিক শাস্ত্রে বর্ণিত রয়েছে- “দুটি পাখি (জীবাত্মা ও পরমাত্মা) একই গাছে বসে আছে, কিন্তু যে পাখিটি (জীবাত্মা) ফল আহারে রত সে গাছের ফলের ভোক্তারূপে সর্বদাই শোক, আশঙ্কা ও উদ্বেগের দ্বারা মুহ্যমান। কিন্তু যদি সে একবার তার নিত্যকালের বন্ধু অপর পাখিটির (পরমাত্মার) দিকে ফিরে তাকায়, তবে তৎক্ষণাৎ তার সমস্ত শোকের অবসান হয়, কারণ তার বন্ধু হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবান এবং তিনি সমগ্র ঐশ্বর্যের দ্বারা মহিমান্বিত।” [শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ ৪।৭ ; মুণ্ডক উপনিষদ ৩।১।১,২] অতএব, বোঝাই যাচ্ছে যিঁনি পরম ব্রহ্ম-পরমাত্মা-পরমেশ্বর ভগবান, তিঁনি আপনার আমার সমস্ত জীবাত্মার ব্যক্তিগত স্বাতন্ত্র্যবোধে কখনোই হস্তক্ষেপ করেন না। ভগবদ্গীতায়ও (১৮/৬৩, ৭৩) আমরা দেখতে পাই- পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে গীতার জ্ঞান প্রদানের পর বলছেন, “….যথেচ্ছসি তথা কুরু” “এভাবেই আমি তোমাকে গুহ্য থেকে গুহ্যতর জ্ঞান বর্ণনা করলাম। তুমি তা সম্পূর্ণরূপে বিচার করে যা ইচ্ছা হয় তাই কর।” অর্জুন বুদ্ধিমান তাই তিনি বললেন- “…করিষ্যে বচনম্ তব” “আমার সমস্ত সন্দেহ দূর হয়েছে এবং যথাজ্ঞানে অবস্থিত হয়েছি। এখন আমি তোমার আদেশ পালন করব।” এখানে স্পষ্টতই বোঝা যায় পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জীবকে স্বাধীনতা দিয়েছেন। তাই এই স্বাধীনতার সদ্ব্যবহার করে আমাদের জড় জগতের কর্মবন্ধন থেকে মুক্ত হওয়া উচিত। নইলে আপনার আমার দুস্কর্মের ফল আমাদেরই ভোগ করতে হবে। ভগবানকে দোষারোপ করা নাস্তিকদের কাজ! ।।হরে কৃষ্ণ।। সম্পাদনায়: প্রবীর চৈতন্য চন্দ্র দাস।