সোমরস কি? সোমরস আর মদিরা বা সুরা কি এক?

Svadharmam Q&A

সোমরস কি? সোমরস আর মদিরা বা সুরা কি এক? এ সম্পর্কে রসেন্দ্রচূড়ামণিতে বলা হয়েছে- পঞ্চাঙ্গযুত্পঞ্চদশচ্ছদাঢ্যা সর্পাকৃতিঃ শোণিতপর্বদেশা। সা সোমবল্লী রসবন্ধকর্ম করোতি একাদিবসোপনীতা। করোতি সোমবৃক্ষোহপি রসবন্ধবধাদিকম্। পূর্ণিমাদিবসানীতস্তযোবল্লী গুণাধিকা।। কৃষ্ণে পক্ষে প্রগলতি দলং প্রত্যহং চৈকমেকং। শুক্লেহপ্যেকং প্রভবতি পুনর্লন্বমানা লতাঃ স্যুঃ। তস্যাঃ কন্দঃ কলয়তিতরাং পূর্ণিমায়াং গৃহীতো। বদ্ধা সূতং কনকসহিতং দেহলোহং বিধত্তে।।ইয়ং সোমকলা লক্ষবেধী বদ্ধসূতেন্দ্রো নাম বল্লী পরমদুর্লভা। অনয়া প্রজায়তে।। [ রসেন্দ্রচূড়ামণি ৬।৬-৯] বঙ্গানুবাদ: সর্পের আকৃতির ন্যায় যার পনেরোটি পাতা, পাতা বেরোবার স্থানটি যার লালবর্ণ, পূর্ণিমার দিন সংগ্রহ করা এরই পঞ্চাঙ্গ (মূল, শাখা, পাতা, ফুল ও ফল) দ্বারা যুক্ত সোমবল্লী পারদকে বদ্ধ করে। পূর্ণিমার দিনে সংগ্রহ করা পঞ্চাঙ্গ (মূল, বল্কল, পাতা, ফুল ও ফল) যুক্ত সোমবৃক্ষও পারদকে সংযুক্ত করা, পারদকে ভস্মে পরিণত করা ইত্যাদি কাজ করে দেয়। কিন্তু সোমবল্লী এবং সোমবৃক্ষ-এই দুটির মধ্যে সোমবল্লী অধিক গুণসম্পন্ন। কৃষ্ণপক্ষে প্রতিদিন এই সোমবল্লীর একটি করে পাতা খসে যায় এবং শুক্লপক্ষে প্রতিদিন একটি করে নতুন পাতা গজায়। এইভাবে এই লতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। পূর্ণিমার দিন যদি এই লতার কন্দ বার হয়, তবে সেটি খুব ভালো হয়। ধুতরার সঙ্গে এই কন্দে আবদ্ধ পারদ শরীরকে লোহার মতো মজবুত করে এবং এর দ্বারা আবদ্ধ পারদ লক্ষবেধী হয় অর্থাৎ একগুণ বদ্ধ পারদ লক্ষগুণ লোহাকে সোনায় পরিণত করে। সোম নামক এই লতা অত্যন্ত দুর্লভ। সোমলতা নামক এই ওষধি গাছের রস থেকে তৈরি হয় সোমলতার রস বা সোমরস। সোমলতার কথা পাওয়া যায় আশ্বলায়ন শ্রৌতসূত্র (৫।১২)-তে যেখানে বলা হচ্ছে, সোমযাগে সোমলতা ছেঁচা হত। সোমলতা ও মদিরা এক নয়।শতপথ ব্রাহ্মণ (৫।১।২)-এ সরাসরিই মদ্যপান করতে নিষেধ করা হয়েছে। তাই সোমরস কোন মদিরা বা নেশাদ্রব্য নয়। ।। হরে কৃষ্ণ ।। [ বি:দ্র: স্বধর্মম্-এর অনুমোদন ব্যাতীত এই লেখার কোনো অংশ পুনরুৎপাদন, ব্যবহার, কপি পেস্ট নিষিদ্ধ। স্বধর্মম্-এর সৌজন্যে শেয়ার করার জন্য উন্মুক্ত ] নিবেদক- ° স্বধর্মম্: প্রশ্ন করুন | উত্তর পাবেন °

বৈষ্ণব সম্প্রদায় কি পরমেশ্বর ভগবানের “নির্গুণ ও সগুণ” উভয় সত্তাকেই স্বীকার করেন?

20241026 023104 Svadharmam

প্রশ্নঃ বৈষ্ণব সম্প্রদায় কি পরমেশ্বর ভগবানের নির্গুণ ও সগুণ উভয় সত্তাকেই স্বীকার করেন? উত্তরঃ হ্যাঁ। তারা এই উভয় দর্শনকেই স্বীকার করেন। প্রশ্নঃ তবে তা কিভাবে, ব্যাখ্যা করুন। উত্তরঃ এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন কৃষ্ণকৃপাশ্রীমূর্তি শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ তাঁর ‘শ্রীঈশোপনিষদের’ ৫ম মন্ত্রের ভক্তিবেদান্ত ভাষ্যে। আপনাদের সুবিধার্থে উক্ত ভাষ্য এখানে তুলে ধরা হলো। শ্রীঈশোপনিষদঃ মন্ত্র-৫ তদেজতি তন্নৈজতি তদ্‌ দূরে তদ্বন্তিকে। তদন্তরস্য সর্বস্য তদু সর্বস্যাস্য বাহ্যতঃ ॥ তৎ-সেই পরমেশ্বর ভগবান; এজতি-সচল; তৎ-তিনি; ন-না; এজতি-সচল; তৎ-তিনি; দূরে-দূরে; তৎ-তিনি; উ-ও; অন্তিকে-অতি নিকটে; তৎ-তিনি; অন্তঃ-অন্তরে; অস্য-এর; সর্বস্য-সব কিছুর; তৎ-তিনি; উ-ও; সর্বস্য-সব কিছুর; অস্য– এর; বাহ্যতঃ-বাইরেও। অনুবাদঃপরমেশ্বর ভগবান সচল এবং অচল। তিনি বহু দূরে রয়েছেন, আবার সন্নিকটেও অবস্থান করছেন। তিনি সকল বস্তুর অন্তরে এবং বাইরে অবস্থান করেন। তাৎপর্যঃ এই শ্লোকে ভগবান অচিন্ত্য শক্তির দ্বারা যে অপ্রাকৃত কার্যকলাপ প্রদর্শন করেন তার ব্যাখ্যা করা হয়েছে। পরস্পর-বিরোধী কথা উল্লেখ করে ভগবানের অচিন্ত্য শক্তির প্রমাণ করা হয়েছে। তিনি সঞ্চরণশীল এবং সঞ্চরণশীল নন। এই প্রকার পরস্পর-বিরোধী বৈশিষ্ট্য ভগবানের অচিন্ত্য শক্তিকে ইঙ্গিত করে। আমাদের সীমাবদ্ধ জ্ঞানের দ্বারা আমরা এই ধরনের পরস্পর-বিরোধী উক্তির সমন্বয় সাধন করতে পারি না। আমাদের সীমিত জ্ঞান দ্বারা আমরা কেবল ভগবান সম্বন্ধে কিছু কল্পনা করতে পারি। মায়াবাদ সম্প্রদায়ের নির্বিশেষবাদী দার্শনিকেরা ভগবানের নির্বিশেষ কার্যকলাপ মাত্র গ্রহণ করেন এবং তাঁর সবিশেষ রূপকে বাতিল করে দেন। কিন্তু ভাগবত সম্প্রদায় ভগবানের সবিশেষ ও নির্বিশেষ উভয় রূপকেই স্বীকার করেন। ভাগবতগণ তাঁর অচিন্ত্য শক্তিসমুহকেও স্বীকার করেন, কেন না এই শক্তিসমূহ ব্যতিরেকে ‘পরমেশ্বর’ কথাটির কোন অর্থই হয় না। যেহেতু আমরা ভগবানকে স্বচক্ষে দর্শন করতে পারি না, আমাদের মনে করা উচিত নয় যে, তাই ভগবানের কোনও সবিশেষ সত্তা নেই। এই যুক্তি খণ্ডন করে শ্রীঈশোপনিষদ আমাদের সতর্ক করেছেন যে, ভগবান যেমন আমাদের থেকে অতি দূরে তেমনি তিনি অতি নিকটেও অবস্থান করেন। ভগবানের ধাম জড় আকাশ থেকে বহু দূরে এবং এমন কি এই জড় আকাশ পরিমাপ করার কোন উপায় আমাদের জানা নেই। জড় আকাশ যদি বহু বহু দূর বিস্তৃত হয়, তা হলে জড় আকাশের অতীত চিদাকাশকে জানার কোন প্রশ্নই ওঠে না। চিদাকাশ যে জড় ব্রহ্মাণ্ডের বহু দূরে অবস্থিত, তা ভগবদ্গীতায়ও (১৫/৬) প্রতিপন্ন হয়েছে। কিন্তু ভগবান এত দূরে অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও, মুহূর্তমধ্যে তিনি বায়ু অথবা মন অপেক্ষা দ্রুত গতিতে আমাদের কাছে আবির্ভূত হতে পারেন। তিনি এত দ্রুত চলতে পারেন যে, কেউ তাঁকে অতিক্রম করতে পারে না। এই বিষয়টি পূর্বোক্ত মন্ত্রে বর্ণনা করা হয়েছে। তবুও ভগবান যখন আমাদের কাছে আবির্ভূত হন তখন আমরা তাঁকে অবজ্ঞা করি। ভগবদ্গীতায় পরমেশ্বর ভগবান এই বিচার- বুদ্ধিহীন অবস্থার নিন্দা করে বলেছেন যে, মূর্খরাই কেবল তাঁকে মরণশীল ব্যক্তি বলে অনুমান করে উপহাস করে। (গীতা ৯/১১) তিনি মরণশীল ব্যক্তি নন, তেমনই তিনি আমাদের সামনে জড়া প্রকৃতিজাত দেহ নিয়ে আবির্ভূত হন না। তথাকথিত অনেক পণ্ডিত আছেন যাঁরা মনে করেন, ভগবান যখন জগতে আবির্ভূত হন, তখন তিনি সাধারণ মানুষের মতোই জড়দেহ ধারণ করেন। তাঁর অচিন্ত্য শক্তির কথা না জেনেই, মূর্খরা ভগবানকে সাধারণ মানুষের সমপর্যায়ভুক্ত বলে বিবেচনা করে। অচিন্ত্য শক্তিসম্পন্ন বলে ভগবান যে কোন উপায়েই আমাদের সেবা গ্রহণ করতে পারেন, এবং তাঁর বিভিন্ন শক্তিকে স্বেচ্ছায় রূপান্তরিত করতে পারেন। অবিশ্বাসীরা তর্ক করে যে, ভগবান-স্বয়ং কোন মতেই মূর্তি পরিগ্রহ করতে পারেন না এবং যদি তিনি সক্ষম হন, তবে তিনি জড়া প্রকৃতিজাত রূপ নিয়ে অবতরণ করেন। ভগবানের অচিন্ত্য শক্তিকে বাস্তব বলে স্বীকার করলেই এই যুক্তির অসারতা প্রতিপন্ন হয়। এমন কি ভগবান যদি জড়া প্রকৃতির আকার নিয়ে আমাদের কাছে উপস্থিতও হন, তবুও তাঁর পক্ষে সেই জড় শক্তিকে চিন্ময় শক্তিতে রূপান্তরিত করা খুব সহজ। যেহেতু জড়া ও পরা শক্তি উভয়েরই উৎস এক, তাই উৎসের ইচ্ছা অনুসারেই শক্তিগুলির যথাযথ ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন, ভগবান মাটি, পাথর কিংবা কাঠের অর্চা-বিগ্রহের মধ্যে আবির্ভূত হতে পারেন। এই সমস্ত শ্রীবিগ্রহ কাঠ, পাথর বা অন্য কোন পদার্থ থেকে প্রকাশিত হলেও তা দেবমূর্তি নয়, যা অপৌত্তলিকরা দাবি করেন। আমাদের বর্তমান অসম্পূর্ণ প্রাকৃত অবস্থায় ত্রুটিযুক্ত দর্শন-শক্তির কারণে আমরা পরমেশ্বর ভগবানকে দর্শন করতে পারি না। কিন্তু ভগবৎ-দর্শনে ইচ্ছুক জড় দৃষ্টিসম্পন্ন ভক্তবৃন্দের কাছে তিনি কৃপা করে তথাকথিত জড় বিগ্রহ-রূপে তাঁদের সেবা গ্রহণের জন্য আবির্ভূত হন। কারও মনে করা উচিত নয় যে, যারা পৌত্তলিক তাঁরা ভগবদ্ভক্তির নিম্নতম পর্যায়ে বিরাজ করছেন। প্রকৃতপক্ষে তাঁরা ভগবৎ উপাসনাই করছেন এবং তিনি তাঁদের কাছে সহজগম্যভাবে আবির্ভূত হতে সম্মত হয়েছেন। অর্চা-বিগ্রহ উপাসকের মনগড়া নয়, তা তাঁর সকল আনুষঙ্গিক সহ নিত্য বর্তমান। একমাত্র শুদ্ধ অন্তঃকরণ- বিশিষ্ট ভক্তই এই সত্য অনুধাবন করতে পারেন, নাস্তিকের দ্বারা তা সম্ভব নয়। ভগবদ্গীতায় (৪/১১) শ্রীভগবান বলেছেন যে, ভক্তের শরণাগতির মাত্রা অনুসারেই তিনি তাঁর ভক্তের সঙ্গে সম্পর্কিত হন। তাঁর শরণাগত ভক্ত ভিন্ন অন্য কারও কাছে তিনি আত্মপ্রকাশ করেন না। সুতরাং শরণাগত ভক্তের কাছে তিনি অত্যন্ত সুলভ, কিন্তু যারা শরণাগত নয়, তাদের কাছ থেকে তিনি বহু বহু দূরে অবস্থান করেন এবং তাদের কাছে তিনি একান্তই দুর্লভ। এই প্রসঙ্গে শাস্ত্রে বর্ণিত সগুণ এবং নির্গুণ শব্দ দুটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সগুণ শব্দের অর্থ এই নয় যে, ভগবান যখন এই জগতে আবির্ভূত হন, তখন তিনি জড়া প্রকৃতির নিয়মের অধীন হন, যদিও তিনি উপলভ্য এবং প্রাকৃত রূপেই আবির্ভূত হন। সকল শক্তির উৎস হওয়ায়, তাঁর কাছে জড়া শক্তি ও চিন্ময় শক্তির মধ্যে কোন ভেদ নেই। সকল শক্তির নিয়ন্তা বলে, আমাদের মতো তিনি কখনও সেই শক্তিগুলির দ্বারা প্রভাবিত হন না। জড় শক্তি তাঁর নির্দেশেই কাজ করে; তাই তিনি তাঁর উদ্দেশ্য সাধনের জন্য জড় শক্তিকে চালনা করতে পারেন, কিন্তু তিনি স্বয়ং কখনও এই জড় শক্তির গুণদ্বারা প্রভাবিত হন না। আবার পরিশেষে তিনি কখনও নিরাকার হয়ে যান না। প্রকৃতপক্ষে তিনি নিত্য শ্রীবিগ্রহ-সম্পন্ন আদিপুরুষ। তাঁর নির্বিশেষ রূপ বা ব্রহ্মজ্যোতি হচ্ছে তাঁর দেহনিঃসৃত জ্যোতি, ঠিক যেমন-সূর্যরশ্মি হচ্ছে সূর্যদেবতার দেহনিঃসৃত জ্যোতি। প্রহ্লাদ মহারাজ শৈশবে যখন তাঁর ঘোর নাস্তিক পিতা হিরণ্যকশিপুর সম্মুখে ছিলেন, তখন তাঁর পিতা তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিল, “তোমার ভগবান কোথায়?” প্রহ্লাদ মহারাজ যখন উত্তর দিলেন, ভগবান সর্বত্র বিরাজমান, তখন তাঁর পিতা ক্রুদ্ধস্বরে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তাঁর ঈশ্বর এই রাজপ্রাসাদের কোন একটি স্তম্ভের মধ্যে আছে কি না। এবং শিশু প্রহ্লাদ বললেন, “হ্যাঁ আছেন।” তৎক্ষণাৎ সেই নাস্তিক অসুর তাঁর সম্মুখে স্তম্ভটি ভেঙ্গে চূর্ণবিচূর্ণ করলে তার ভিতর থেকে তৎক্ষণাৎ অর্ধ নর, অর্ধ সিংহ অবতার নৃসিংহ মূর্তিতে আবির্ভূত হয়ে হিরণ্যকশিপুকে বধ করেন। এভাবেই ভগবান সমস্ত কিছুর মধ্যে রয়েছেন এবং তাঁর বিভিন্ন শক্তির দ্বারা তিনি সব কিছু সৃষ্টি করেন। তাঁর ঐকান্তিক ভক্তকে কৃপা প্রদর্শন করার জন্য তাঁর অচিন্ত্য শক্তির দ্বারা তিনি যে কোন স্থানে আবির্ভূত হতে পারেন। ভগবান নৃসিংহ ফটিক স্তম্ভের মধ্যে থেকে আবির্ভূত হয়েছিলেন তাঁর ভক্ত প্রহ্লাদের মনোবাঞ্ছা পূরণ করবার জন্যে, নাস্তিক হিরণ্যকশিপুর আদেশে নয়। একজন নাস্তিক ভগবানকে আবির্ভূত হওয়ার জন্য আদেশ করতে পারে না, কিন্তু ভগবান তাঁর ভক্তকে কৃপা প্রদর্শনের জন্য সব সময়, সর্বত্র আবির্ভূত হন। তেমনই, ভগবদ্গীতায় (৪/৮) বলা হয়েছে যে, বিশ্বাসীদের রক্ষা এবং অবিশ্বাসীদের বিনাশ করবার জন্য ভগবান আবির্ভূত হন। অবশ্যই নাস্তিকদের

বিবাহে কোষ্ঠিবিচার কতটুকু যৌক্তিক?

FB IMG 1726161235973 Svadharmam

⭕বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ ⭕বিবাহে কোষ্ঠিবিচার কতটুকু যৌক্তিক❓ বৈদিক প্রথায় পিতা-মাতা বিবাহের পূর্বে পাত্র এবং পাত্রীর কোষ্ঠি বিচার করেন। জ্যোতির্গণনায় পাত্র এবং পাত্রী যদি সর্বোতভাবে সুসঙ্গত হয়, তা হলে সেই সংযোগকে বলা হয় যোটক এবং তখন তাদের বিবাহ হয়। এমন কি পঞ্চাশ/একশো বছর আগেও হিন্দুসমাজে এই প্রথা প্রচলিত ছিল। পাত্র যতই ধনী হোক না কেন অথবা কন্যা যতই সুন্দরী হোক না কেন, জ্যোতির্গণনায় মিল না হলে বিবাহ হত না। তিনটি শ্রেণীতে মানুষের জন্ম হয় — দেবগণ, মনুষ্যগণ এবং রাক্ষসগণ। ব্রহ্মাণ্ডের বিভিন্ন ভাগে দেবতা এবং রাক্ষসেরা রয়েছে। মানব সমাজেও কোন কোন মানুষ দেবতাদের মতো এবং কোন কোন মানুষ আবার রাক্ষসের মতো। জ্যোতির্গণনাতেও তেমন দেবগণের সঙ্গে রাক্ষসগণের মিল না হওয়ায় তাদের মধ্যে বিবাহ হয় না। তেমনই প্রতিলোম(উচ্চ গুণসম্পন্ন/বর্ণের কন্যার সহিত নিম্ন গুণসম্পন্ন/বর্ণের পাত্রের বিবাহ) এবং অনুলোমের(উচ্চ গুণসম্পন্ন/বর্ণের পাত্রের সহিত নিম্ন গুণসম্পন্ন/বর্ণের কন্যার বিবাহ) বিচার রয়েছে। মূল কথা হচ্ছে, পাত্র এবং পাত্রী যদি সমান স্তরের হয় তা হলে বিবাহ সুখের হয়, কিন্তু বৈষম্য হলে তা চরমে দুঃখদায়ক হয়। যেহেতু আজকাল আর সেইভাবে বিচার বিবেচনা করা হয় না, তাই এত বিবাহ-বিচ্ছেদ হচ্ছে। বস্তুতপক্ষে, আজকাল বিবাহ-বিচ্ছেদ একটি সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে, যদিও পূর্বে পতি-পত্নীর সম্পর্ক ছিল সারা জীবনের সম্পর্ক, এবং এই সম্পর্ক এতই প্রীতির ছিল যে, পতির মৃত্যু হলে পত্নী স্বেচ্ছায় সহমৃতা হতেন অথবা আজীবন পতির অনুগত থেকে বৈধব্যদশা বরণ করতেন। আজকাল আর তা সম্ভব হচ্ছে না, কারণ মানব-সমাজ পশু-সমাজের স্তরে অধঃপতিত হয়েছে। এখন কেবল পরস্পরের প্রতি অভিরুচির ফলে বিবাহ হচ্ছে। দাম্পত্যেহভিরুচির্হেতুঃ (শ্রীমদ্ভাগবত ১২/২/৩)। অভিরুচির অর্থ হচ্ছে ‘সম্মতি’। পুরুষ এবং স্ত্রী যদি কেবল বিবাহ করতে সম্মত হয়, তা হলেই বিবাহ হতে পারে। কিন্তু বৈদিক প্রথা যদি নিষ্ঠা সহকারে পালন না করা হয়, তা হলে প্রায়ই সেই বিবাহের সমাপ্তি হয় বিবাহ-বিচ্ছেদে। ©️শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ, ভা: ৯/১৮/২৩    

জগন্নাথের পুরীধামে প্রকাশ (পর্ব ২)

3f8ef817-268e-4812-aeb8-e99fff4899fa

স্কন্দ পুরাণ অনুসারে, বিষ্ণুভক্ত ইন্দ্রদ্যুম্ন পুরুষোত্তমক্ষেত্র পুরীধামে কিভাবে জগন্নাথদেব, বলদেব,সুভদ্রা ও সুদর্শনের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সে সমন্ধে আলোচনা করুন???( ২য় পর্ব) ১ম পর্বের পর- স্কন্দ পুরাণ,বিষ্ণুক্ষেত্র, পুরুষোত্তমক্ষেত্র মাহাত্ম্য, সপ্তম অধ্যায়ের ৭৯-৯৮ নং শ্লোকের বর্ণনা অনুযায়ী “ক্রমে বিদ্যাপতি পর্বতের সন্নিকট ভূমিতে আরোহন করলেন( নামলেন),কিন্তু সেই মুকুন্দদেব দর্শনোৎসুক বিপ্র চারিদিকে অনুসন্ধান করেও পথ প্রাপ্ত হলেন না।এরপর কুশপত্র বিছিয়ে মুকুন্দদেবের( বিষ্ণু) দর্শন আকাঙ্ক্ষায় তার শরনাগত হলেন।বিদ্যাপতি পর্বতের পঞ্চিমভাগ থেকে পরষ্পর ভগবদ্ভক্তি বিষয়ক আলাপ করছিলেন,তাদের সেই অলৌকিক বাক্য শ্রবণ করেন।এরপর বিদ্যাপতি আনন্দিত হয়ে সেই বাক্য অনুসরন করে গমন করেন।সে স্থান শবরজাতির বাসগৃহসমূহে চতুর্দিকে বেষ্টিত,তা তিনি দর্শন করেন।তিনি ক্রমে সেই স্থানে বিনীতভাবে প্রবেশ করে, সে স্থানের বৈষ্ণবদের দর্শন করেন।পরে বিশ্বাবসু নামে একজন বৃদ্ধ শবর হরিপূজা সমাপন করে পূজাবশিষ্ঠ চন্দনাদি দ্বারা শোভিত হয়ে গিরি মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন,তাকে বিদ্যাপতির নয়নগোচর হল।বিশ্বাবসু সে ব্রাহ্মন বিদ্যাপতিকে জিজ্ঞেস করেন,হে বিপ্র আপনি কোথা থেকে এই দুর্গম কাননে এসেছেন? আপনি ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় কাতর ও শ্রান্ত।অতত্রব কিছুসময় এই স্থানে সুখে অবস্থান করুন।বিশ্বাবসু দ্বিজকে পাদ্য,আসন, অঘ্য অর্পন করে বিনয়বাক্যে বললেন,হে বিপ্র আপনি ফল দ্বারা, না পাক করে আহার করবেন?আপনার যা অভিরুচি তাই প্রস্তুত করে দিব।শবর এই কথা বললে বিদ্যাপতি বললেন, আমার ফল ও পাকে কোন প্রয়োজন নাই।হে সাধো!যে কারনে দূর থেকে এসেছি তা সফল করুন।আমি অবন্তী পুরবাসী ইন্দ্রদ্যুম্ন রাজার পুরোহিত।বিষ্ণুর দর্শন মানসে এসেছি।রাজসন্নিধানে তীর্থপর্য্যটকদিগের সমাজে তীর্থক্ষেত্রপ্রসঙ্গে এই তীর্থের একটি প্রস্তাব করেন।রাজা উৎকন্ঠিত হয়ে আমাকে এই স্থানে অবস্থিত নীলমাধব হরিকে দর্শন করতে প্রেরণ করেন। আমি তাকে দর্শন করে সংবাদ নিয়ে যতক্ষণ তার কাছে যাচ্ছি না,ততক্ষণ অনাহারে থাকব।এই কারনে আমাকে সেই বিষ্ণুর দর্শন করাও।” অষ্টম অধ্যায় ১-৭৮ নং শ্লোকের বর্ণনা অনুযায়ী, জৈমিনি বললেন,বিদ্যাপতি এই কথা বললে শবর চিন্তিত হলেন যে,আহা! আমাদের দুর্দিন উপস্থিত হল।ব্রাহ্মণ যদি নীলমাধবকে দর্শন করে তাহলে সকলেই জানতে পারবে, যদি না দেখায় ব্রাহ্মণ আমাকে অভিশাপ দিয়ে চলে যাবে।সকল জাতির মধ্যে ব্রাহ্মণ শ্রেষ্ঠ, বিশেষত ইনি অতিথি, এনার অভিলাষ পূর্ণ না হলে আমার উভয় লোকই বিফল হবে।বিশ্বাবসু এই বিবেচনা করে ব্রাহ্মণকে বললেন,ইন্দ্রদ্যুম্ন নামে নরপতি এই ক্ষেত্রে বাস করবেন, এই বৃত্তান্ত আমরা পূর্বেই শুনেছি।আপনি যেহেতু তার পূর্বে নীলমাধবকে দর্শন করলেন তখন আপনি তার থেকেও অধিক ভাগ্যবান।অতত্রব হে ব্রাহ্মণ,আসুন আমরা পর্বতের উপরিভাগে গমন করি।এই কথা বলে শবরপতি বিদ্যাপতির হাত ধরে অতি সঙ্কীর্ণ একটি মাত্র পথ দিয়ে পাথর ও কাটাতে আবৃত দুর্গম ও প্রায় অন্ধকারময় পথে চলতে লাগলেন।এই পথে যেতে যেতে শবর কুন্ডের তটে উপস্থিত হলেন।কুন্ড দর্শন করে ব্রাহ্মণকে ( বিদ্যাপতি) বললেন, হে দ্বিজোত্তম, এই মহাতীর্থের নাম রৌহিন।তার পূর্বে এক মহৎ অক্ষয় বৃক্ষ আছে।তার ছায়া প্রাপ্ত হলে ব্রহ্মহত্যার পাপ ক্ষয় হয়।নিকুঞ্জের(পুষ্পবাগানে শোভিত) ভিতরে ঐ দেখ সাক্ষাৎ জগন্নাথ( বিষ্ণু)।তাকে দর্শন করে সঞ্চিত পাপ হতে মুক্ত হও। জৈমিনি বললেন, অত্যন্ত বুদ্ধিমান বিদ্যাপতি শ্রীহরিকে দর্শন করে নত মস্তকে প্রনাম করে একাগ্রমনে ও অত্যন্ত আনন্দিত চিত্তে হরিকে স্তব করলেন।এরপর শবর বিশ্বাবসুকে বললেন, হে দ্বিজশ্রেষ্ঠ, প্রভুকে দর্শন করে আপনি কৃতার্থ হয়েছেন,এক্ষণে আমরা গৃহে গমন করি।বনমধ্যে হিংস্র জন্তুর বসবাস,তাই এখানে থাকা আমাদের উচিত হবে না।সূর্যাস্থ হওয়ার পূর্বে গৃহে গমন করি। হে দ্বিজগণ,বিশ্বাবসু এই বলে ব্রাহ্মণের হস্ত ধারন ধরে গৃহে গমন করলেন।ব্রাহ্মণ অতিথিকে প্রাপ্ত হয়ে বিবিধ ভোজ্যদ্রব্য দ্বারা ভোজন করালেন।এরপর বিদ্যাপতি ( ব্রাহ্মণ) বিশ্বাবসুকে বললেন,আমি এখান থেকে গমন করলে ইন্দ্রদ্যুম্ন রাজা এখানে এসে বাস করবেন।তিনি ভগবানের প্রীতিবিধানের নিমিত্তে এখানে বৃহৎ প্রাসাদ নির্মাণ করবেন।এরপর শবর বললেন,হে সখে, আপনি ইন্দ্রদ্যুম্ন নৃপতির আগমন বিষয়ে যা বললেন তা এ ক্ষেত্রে বহু পূর্ব থেকে জনশ্রুতি আছে।কিন্তু মাধবকে এই নৃপতি( ইন্দ্রদ্যুম্ন রাজা) দর্শন করতে পারবেন না,যেহেতু কিছুদিনের মধ্যে ভগবান স্বর্ণবালুকা দ্বারা আবৃত হবেন।ভগবান অন্তর্হিত হবেন, যমের কাছে এই প্রতিজ্ঞা করেন।কিন্তু আপনি মহাভাগ্যবান,তাই আপনি ভগবানকে দর্শন করলেন।হে মিত্র, ইন্দ্রদ্যুম্ন নৃপতির আগমনের পূর্বে তিনি যে অন্তর্হিত হবেন,রাজার নিকট এ বিষয়ে কখনো বলবেন না।সেই রাজা এখানে আগমন করে পরমেশ্বরকে দর্শন করতে না পেয়ে প্রয়োগপবেশন ব্রতে ব্রতী হয়ে গদাধরকে(বিষ্ণু)স্বপ্নে দর্শন করবেন।তিনি তার আদেশক্রমে ব্রহ্মার দ্বারা প্রভুর চারটি রুপ প্রতিষ্ঠিত করে ভক্তিসহকারে পূজা করবেন।এরপর বিদ্যাপতি ও বিশ্বাবসু শয্যায় গমন করলেন।প্রভাত( সকাল) হলে বিদ্যাপতি মাধবকে দর্শন করে ইন্দ্রদ্যুম্নের প্রাসাদ অভিমুখে যাত্রা করলেন।” চলবে… জয় জগন্নাথ হরে কৃষ্ণ। প্রণাম সদগুন মাধব দাস। প্রচারে- স্বধর্মম্ : Connect to the inner self And, ° স্বধর্মম্ : প্রশ্ন করুন | উত্তর পাবেন।

জগন্নাথের পুরীধামে প্রকাশ (পর্ব ১)

897736a9-c0a5-4c77-a6c6-aeb4fdd01536

স্কন্দ পুরাণ অনুসারে, বিষ্ণুভক্ত ইন্দ্রদ্যুম্ন পুরুষোত্তমক্ষেত্র পুরীধামে কিভাবে জগন্নাথদেব, বলদেব,সুভদ্রা ও সুদর্শনের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সে সমন্ধে আলোচনা করুন???( ১ম পর্ব) সামবেদীয় ছান্দোগ্য উপনিষদ ৭/১/২ অনুসারে পুরাণসমূহ হল পঞ্চম বেদ “ইতিহাসপুরাণং পঞ্চমং বেদানাং” ইতিহাস (রামায়ন ও মহাভারত) এবং পুরাণসমূহ(অষ্টাদশ পুরাণ) হল পঞ্চম বেদ।বেদের লিপিকার পরমেশ্বর ভগবানের শক্ত্যাবেশ অবতার শ্রীল ব্যাসদেব অষ্টাদশ পুরাণ শাস্ত্র লিপিবদ্ধ করেন।স্কন্দ পুরাণ হল অষ্টাদশ পুরাণ শাস্ত্রের মধ্যে একটি। স্কন্দ পুরাণ,বিষ্ণুক্ষেত্র, পুরুষোত্তম ক্ষেত্র মাহাত্ম্য, প্রথম অধ্যায় থেকে সপ্তবিংশ অধ্যায় পর্যন্ত বিষ্ণুভক্ত রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন পুরুষোত্তম ক্ষেত্র পুরীধামে কিভাবে জগন্নাথদেব (শ্রীকৃষ্ণ),বলদেব (বলরাম),সুভদ্রা ও সুদর্শনের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তার বিস্তৃত বর্ণনা রয়েছে।আমরা অধ্যায়ভিত্তিক ধারাবাহিক ভাবে তা জানার প্রচেষ্টা করব। স্কন্দ পুরাণ,বিষ্ণুক্ষেত্র, পুরুষোত্তম ক্ষেত্র মাহাত্ম্য, প্রথম অধ্যায়ের ১- ৫ নং শ্লোকের বর্ণনা অনুসারে, “একসময় মুনিগণ মহর্ষি জৈমিনি ঋষিকে সম্বোধন করে প্রশ্ন করেন, হে মহাত্মা, আপনি সকল শাস্ত্রজ্ঞ ও সমুদয় তীর্থের মাহাত্ম্য অবগত। ইতিপূর্বে তীর্থকতন প্রস্তাবে পরম পবিত্র পুরুষোত্তম ক্ষেত্রের কথা উল্লেখ করেছেন। এই ক্ষেত্রে স্বয়ং নারায়ণ দারুময় কলেবর পরিগ্রহপূর্বক বিরাজমান আছেন। সে ক্ষেত্রটি কোন ব্যাক্তি নির্মাণ করেন, তা সবিস্তারে আমাদের কাছে বর্ণনা করুন?সেই সাক্ষাৎ নারায়ণ স্বয়ং ভগবান পরমপুরুষ হয়েও কি কারনে দারুময়রুপে সেই ক্ষেত্রে বিরাজমান আছেন?আপনার নিকট তা শ্রবনে আমাদের কৌতুহল হয়েছে,সে কারনে আপনি পরমবাগ্মী ও সর্বলোকের গুরু।এরপর জৈমিনি ঋষি মুনিগনকে সম্বোধন করে বলতে লাগলেন, “জৈমিনি উবাচ।শৃনুধ্বং মুনয় সর্বেব রহস্যং পরমং হি তৎ।অবৈষ্ণনাং শ্রবণে ভক্তিস্তত্র ন জায়তে।। ৬।।যস্য সঙ্কীর্ত্তনাদেব সকলং লীয়তে তম।স্কন্দেন কথিতং পূর্ব্বং শ্রুত্বা শম্ভোমুখাম্বুজাৎ।।৭।।সমক্ষৎ সিদ্ধদেবৌব সভায়াং মন্দরোদরে।অহমপ্যগমং তত্র দেবদেবং সমচ্চির্তুম।যথাশ্রুতং কথয়তো দেবানাং পুরতো ময়া।।৮।।” অনুবাদঃ “জৈমিনি বললেন,হে মুনিগণ,সেই পরমরহস্য ক্ষেত্রের বিবরন শ্রবণ করে অবৈষ্ণব বা অভক্তদের ভক্তি লাভ হয় না।পুরাকালে কার্তিকেয় মহাদেবের মুখপদ্ম হতে শ্রবণ করে মন্দরপর্বতে সিদ্ধগণ দেবগণের সভাতে তা বর্ণনা করেন,যা শ্রবণ করে তমগুণ দূরীভূত হয়।আমি তখন সেই দেবদেব মহাদেবের পূজা করার নিমিত্তে সেখানে গমন করেছিলাম।তাই আমি তা কার্তিকের মুখ থেকে শ্রবণ করেছিলাম,তা এখন অবিকল বর্ণনা কর়ছি,শ্রবণ করুন।” এরপর ৯-৪৪ নং শ্লোক পর্যন্ত প্রথম অধ্যায়,২য়-৫ম অধ্যায় পর্যন্ত পুরুষোত্তম ক্ষেত্রের মাহাত্ম্য বর্ণিত হয়েছে। ৬ষ্ঠ অধ্যায়ে মুনিগণ জৈমিনি ঋষিকে বললেন,হে দ্বিজশ্রেষ্ঠ! কোন দেশে সেই পুরুষোত্তম ক্ষেত্রটি বিদ্যমান,যেখানে নারায়ন সাক্ষাৎ দারুরুপী প্রকাশিত? এর উত্তরে জৈমিনি বললেন,উৎকল ( বর্তমান নাম উড়িশ্যা বা পুরী) নামে একটি পরমপবিত্র বিখ্যাত দেশ আছে,তাতে অনেক তীর্থ ও পূণ্যস্থান বর্তমান।সেই দেশটি দক্ষিণ সমুদ্রের তীরে অবস্থিত।সেখানের লোকসকল সদাচারে বিখ্যাত। ৭ম অধ্যায়ের ১-৭৮ শ্লোকের বর্ণনা অনুযায়ী, মুনিরা জৈমিনি ঋষিকে প্রশ্ন করেন,হে মহর্ষি কোন যুগে ইন্দ্রদ্যুম্ন রাজা ছিলেন? কোন দেশে ওনার নগর? তিনি কি প্রকারে পুরুষোত্তম ক্ষেত্রে গমন করেন? কি নিমিত্তে বিষ্ণুবিগ্রহ নির্মাণ করেন? এই সকল যথার্থরুপে বিস্তৃত ভাবে বর্ণনা করুন। “জৈমিনি উবাচ।আসীৎ কৃতযুগে বিপ্রা ইন্দ্রদ্যুম্নো মহানৃপ।সূর্য্যবংশে স ধর্ম্মাত্মা সৃষ্ট পঞ্চমপুরুষ।।৬।।” অনুবাদঃ “জৈমিনি বললেন,সত্যযুগে সূর্য্যবংশে জাত ইন্দ্রদ্যুম্নো নামে এক রাজা ছিলেন।সেই ধর্মাত্মা ব্রহ্মার পঞ্চম পুত্র।” তিনি সত্যবাদী,সদাচারী, নিষ্পাপ ও সাত্ত্বিকশ্রেষ্ঠ।তিনি প্রজাদেরকে সন্তানের ন্যায় প্রতিপালন করতেন।তিনি ছিলেন জিতেন্দ্রিয় এবং বৈষ্ণব। পারমার্থিক মুক্তিকামনায় ইন্দ্রদ্যুম্ন রাজসূয় মহাযজ্ঞ এবং শত অশ্বমেধ যজ্ঞ করেছিলেন।এইরুপ সকল গুনবিশিষ্ট পৃথিবীপালক সেই রাজা দ্বিতীয় অমরাবতীর ন্যায় সর্বরত্নযুক্ত সুবিখ্যাত অবন্তী নগরীতে বাস করতেন।তিনি সে নগরে বাস করে কায় মনো বাক্যে বিষ্ণুর প্রতি অচলাভক্তি প্রদর্শন করেছিলেন। একদা নরপতি ( ইন্দ্রদ্যুম্ন রাজা) দেবার্চ্চনগৃহে শ্রীপতি বিষ্ণুর পূজার সময়ে পন্ডিত এবং তীর্থযাত্রা প্রস্তাবকারীগণসহ পুরোহিতকে সমাদরে জিজ্ঞাসা করলেন, “আদৃতো ব্যাজহারেদং জ্ঞায়তাং ক্ষেত্রমুত্তমম। যত্র সাক্ষাৎ জগন্নাথং পশ্যাম্যেতেন চক্ষুষা।।”১৮।। অনুবাদঃজানেন উত্তম ক্ষেত্রধাম কোথায়? যেখানে সাক্ষাৎ জগন্নাথদেবকে এই চর্মচক্ষুদ্বারা দর্শন করা যায়? পুরোহিত সেই বিষ্ণুভক্ত নৃপশ্রেষ্ঠ কতৃর্ক এইপ্রকার জিজ্ঞসিত হয়ে তীর্থযাত্রিদের প্রতি দৃষ্টিপাতপূর্বক প্রশ্ন করেন,হে তীর্থযাত্রীগণ,আপনারা সর্বদা তীর্থ পর্যতন করেন,আপনারা ধার্মিক ও বহুদেশদর্শী,এই রাজা যা আদেশ করছেন, তা কি আপনারা শ্রবণ করেছেন? “রাজন্ননেকতীর্থানি ব্যচাবিষমহং প্রভো।আশৈশবাৎ ক্ষিতিতলে শ্রুতান্যন্যৈশ্চ তীর্থগেঃ।।২২।।ওড্রদেশ ইতি খ্যাতে বর্ষে ভারতসংজ্ঞকে দক্ষিনস্যোদধেস্তীরে ক্ষেত্র পুরুষোত্তম।।২৩।।” অনুবাদঃ” তীর্থযাত্রীগনের মধ্যে একজন বললেন,হে রাজন, আমি শিশুকাল থেকে এই ভূমন্ডলে বহু তীর্থ ভ্রমন করে়ছি এবং অন্যান্য তীর্থগামী ব্যাক্তির নিকটেও শুনে়ছি যে,এই ভারতবর্ষের বিখ্যাত ওড্রদেশের ( বর্তমান নাম উড়িষ্যা/পুরী) দক্ষিণ সমুদ্রের তীরে শ্রীপুরুষোত্তম নামে উত্তম ক্ষেত্র আছে।” তার মধ্যে নীলগিরি নামে এক পর্বত আছে।তার চতুর্দিক বনে আবৃত।তার অগ্রভাগে চতুর্দিকে একক্রোশ পরিমাণ এক কল্পবৃক্ষ আছে,ঐ বৃক্ষের ছায়াস্পর্শে ব্রহ্মহত্যার পাপ বিনষ্ট হয়।তার পঞ্চিমে রৌহিন নামে বিখ্যাত এক কুন্ড আছে। “তস্য প্রাকৃতমাস্থায় নীলেন্দ্র মনিনির্ম্মিতা।। ২৬।। তনু শ্রীবাসুদেবস্য সাক্ষন্মুক্তি প্রদায়িনী।২৭।।” অনুবাদঃ “সেখানে অথাৎ ঐই কুন্ডের তীরে নীলকান্তমণি নির্মিত ভগবান বাসুদেবের মুর্তি বিদ্যমান।।তা সাক্ষাৎ মুক্তিপ্রদ।” যে ব্যাক্তি সেই কুন্ডে স্নান করে পুরুষোত্তমকে সেবা করে, সে সহস্র অশ্বমেধ যজ্ঞের ফল প্রাপ্ত হয়ে মুক্তিলাভ করে।তার পঞ্চিমদিকে শবরদীপক নামে বিখ্যাত একটি শ্রেষ্ঠ আশ্রম আছে,যেখানে সাক্ষাৎ জগন্নাথ ( বিষ্ণু)শঙ্খ,চক্র,গদা ধারণপূর্বক অবস্থান করছেন।হে রাজন,আপনি বিষ্ণুভক্ত এবং সতত দৃঢ়ব্রত,এজন্য আপনাকে উপদেশ দেওয়ার নিমিত্তে এ স্থানে আমি আগমন করেছি।এক্ষণে আপনার নিকট ধন ও ভূমি প্রার্থনা করতে আসিনি।আমার এ কথা অলীক বিবেচনা না করে পুরুষোত্তমস্থ পুরুষোত্তমের ভজনা করুন।সেই জটিল তপস্বী এই উপদেশ দান করে সকল দর্শকদের নিকট হতে সত্ত্বর অন্তর্ধান হলেন।রাজা নিতান্ত বিস্ময়ে ব্যাকুল হলেন যে,আমি এখন কিরুপে জীবন নির্বাহ করব? এইরুপ চিন্তা করে রাজা পুরোহিতকে বললেন,হে ব্রাহ্মণশ্রেষ্ঠ আমি বিস্ময়কর এ বৃত্তান্ত শ্রবন করে যে স্থলে সেই গদাধর আছেন, সেখানে আমার বুদ্ধি সত্ত্বরগামিনী হয়েছে।পুরোহিত বললেন, আমি প্রতিজ্ঞা করছি,যাতে সেই সাক্ষাৎ মুক্তিদাতা কেশবকে চর্মচক্ষু দ্বারা দর্শন করতে আপনি পারেন,তা আমি অবশ্যই করব।সেই মহাপূণ্য পুরুষোত্তম ক্ষেত্রে আমরা সকলে গমন করে তাতে বাস করতে পারি,সেরুপ যত্ম করব।ব্রাহ্মণের সেই বাক্য শ্রবণ করে রাজা বললেন,আপনার নিকট এরুপ বাক্য শ্রবণ করে সেইক্ষেত্রে ভগবানের নিকট বাস করব,এই প্রতিজ্ঞা করছি।অতত্রব আপনার ভ্রাতা সেখানে গমন করে আমাদের মঙ্গল বিধান করুন।রাজা এ কথা বলে অন্তঃপুরে অত্যন্ত আনন্দচিত্তে গমন করেন। এরপর পুরোহিত সেই সকল ব্যাক্তিকে রাজার আজ্ঞাক্রমে যথাযোগ্য সন্মান সহকারে স্বীয় আশ্রমে বিদায় দিলেন।এরপর ভ্রাতা বিদ্যাপতিকে স্বস্ত্যায়নপূর্বক শুভক্ষণে প্রেরণ করেন। জৈমিনি বললেন,হে বিপ্রগণ, বিদ্যাপতি রথে আরোহন করে জগন্নাথদেবকে চিন্তা করতে করতে বায়ুবেগে গমন করতে লাগলেন।হে বিপ্রগণ, বহুদিন গত হলে অপরাহ্ণে পথিমধ্যে ভূমন্ডলের পবিত্রতাজনক ও ভূবনের মঙ্গলজনক ওড্রদেশ( বর্তমান উড়িষ্যা) দর্শন করলেন।এই প্রকারে বন,গিরি,দূর্গ ও পথসকল দর্শন করতে করতে সূর্যাস্ত্র সময়ে মহানদীর তীরে উপস্থিত হলেন।হে বিপ্রগণ! বিদ্যাপতি রথ থেকে ভূমিতে আরোহন করে আহ্নিক ক্রিয়া সমাপন করে,সন্ধ্যা উপাসনা সম্পন্ন করে মধুসূদনকে চিন্তা করলেন এবং রথপৃষ্টে স্থিতিপূর্বক রাত্রিযাপন করেন।এরপর বিদ্যাপতি প্রাতঃকৃত্য সমাপন করে গোবিন্দকে চিন্তা করতে করতে রথে আরোহন করে সে স্থান প্রস্থান করলেন।তারপর উভয়দিক পথ দর্শন করতে করতে শ্রোত্রিয়,যাজ্ঞিক ও ব্রহ্মতেজস্বীদিগের যুপকাষ্ঠ দ্বারা শোভিত গ্রামে আগমন করেন।হে দ্বিজগন!ব্রাহ্মণ( বিদ্যাপতি) কিছুদূর গিয়ে নীলাচল পর্বত দেখলেন,ঐই পর্বতটি কল্পবটশোভিত,চতুর্পাশ্বে কাননশ্রেণী।ঐই পর্বতে সাক্ষাৎ মুর্তিমান বিষ্ণুর বাসস্থান। “ … চলবে। জয় জগন্নাথ। হরে কৃষ্ণ। প্রনাম। সদগুন মাধব দাস। সেবক – স্বধর্মম্ : Connect to the inner self And, ° স্বধর্মম্ : প্রশ্ন করুন | উত্তর পাবেন।

বেদে কি পরমেশ্বর দারুব্রহ্ম জগন্নাথদেবের কথা বর্ণিত আছে?!

fb396541-cd74-40df-8f43-d82b94c901c4

ঋগ্বেদের আশ্বলায়ন শাখা ০৭.৫৬.০৪-০৫, সামবেদীয় ছান্দোগ্য উপনিষদ৩.১৭.৬-৭, কৃষ্ণ যজুর্বেদীয় নারায়ন উপনিষদ ৪, অথর্ববেদীয় গোপালতাপনী উপনিষদ ১/২১,১/২৪, কৃষ্ণ উপনিষদ এবং কৃষ্ণ যজুর্বেদীয় কলির্সন্তরন উপনিষদ ২ ইত্যাদি বেদ বা শ্রুতি শাস্ত্রে পরমেশ্বর ভগবান গোলকপতি শ্রীকৃষ্ণের মহিমা বর্ণিত আছে। অথর্ববেদীয় গোপালতাপনী উপনিষদে বলা হয়েছে, “একো বশী সর্বগঃ কৃষ্ণ ঈড্যঃ” অর্থাৎ, সেই একমাত্র শ্রীকৃষ্ণই পরম পুরুষোত্তম ভগবান,তিনিই আরাধ্য। – গোপালতাপনী উপনিষদ ১/২১(অথর্ববেদ) বেদসহ সমগ্র সনাতনী শাস্ত্রের শিক্ষা অনুযায়ী শ্রীকৃষ্ণ হলেন পরমেশ্বর ভগবান। সমগ্র বেদ শাস্ত্রে শ্রীকৃষ্ণের মহিমা আলোচিত হয়েছে।এ বিষয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গীতায় (১৫/১৫) বলেন, वेदैश्च सर्वैरहमेव वेद्यो “বেদৈশ্চ সবৈররহমেব বেদ্যো” অর্থাৎ, আমি সমগ্র বেদে জ্ঞাতব্য। শ্রীকৃষ্ণকে বেদে বিষ্ণু, কৃষ্ণ,গোপাল ( চিন্ময় জগতের গোলক বৃন্দাবনে তিনি গোচারন করেন, তাই শ্রীকৃষ্ণের এক নাম গোপাল), দেবকীপুত্র ইত্যাদি নামে সম্বোধন করা হয়েছে। ঋগ্বেদীয় পুরুষসুক্ত,বিষ্ণু সুক্ত, এবং কৃষ্ণ যজুর্বেদীয় নারায়ন সুক্তে সমগ্র জগৎব্যাপী বিষ্ণুর বিরাটরূপ বা বিশ্বরূপের বর্ণনা করা হয়েছে,যে বিশ্বরূপটি গীতার বর্ণনা অনুসারে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে দর্শন দান করেন (গীতা ১১/৫-৪৪)। এবং একই গীতা শাস্ত্রে অর্জুনের ইচ্ছা অনুসারে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে চতুর্ভূজ বিষ্ণুরুপ প্রদর্শন করেন (গীতা ১১/৪৬,৫০)।তাই মহাভারতে বহুবার শ্রীকৃষ্ণকে শ্রীবিষ্ণু নামে সম্বোধন করা হয়েছে, (“অনুগ্রহার্থং লোকানাং বিষ্ণুলোক নমস্কৃতঃ।বসুদেবাত্তু দেবক্যাং প্রাদুর্ভূতো মহাযশাঃ।।” – “ত্রিজগতের পূজনীয় মহাযশস্বী স্বয়ং বিষ্ণু লোকের প্রতি অনুগ্রহ করিবার জন্য বসুদেব-দেবকীতে আবির্ভূত হইয়া ছিলেন৷” – মহাভারত আদিপর্ব, ৫৮/১৩৮)। সে শ্রীকৃষ্ণ বা বিষ্ণু হলেন স্বয়ং দারুব্রহ্ম জগন্নাথ।দারুব্রহ্ম জগন্নাথ রুপে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ উৎকল বা উড়িষ্যায় সমুদ্রের তীরবর্তী শ্রীক্ষেত্র পুরুষোত্তম ধাম জগন্নাথ পুরীতে নিত্য বিরাজমান।স্কন্দ পুরাণ শাস্ত্রের বিষ্ণু খন্ড,পুরুষোত্তমক্ষেত্র মাহাত্ম্য,১-২১ তম অধ্যায়ের বর্ণনা অনুযায়ী, বিষ্ণুভক্ত ইন্দ্রদ্যুম্নের প্রার্থনায় স্বয়ং বিষ্ণু দারুরুপে উড়িষ্যার দক্ষিণ সাগরের তটে অবস্থান করেন। পরে ইন্দ্রদ্যুম্ন সেবকগন কতৃর্ক সেই দারুকে মহাবেদীতে স্থাপন করেন।ইন্দ্রদ্যুম্নের প্রার্থনায় ভগবান বিষ্ণু যিনি স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ তিনি দারু থেকে জগন্নাথ( শ্রীকৃষ্ণ), বলদেব (বলরাম), সুভদ্রা এবং সুদর্শনরুপে প্রকাশিত হয়েছিলেন। বেদ শাস্ত্রে সমুদ্রের তীরবর্তী দারুব্রহ্ম জগন্নাথের কথা বর্ণিত আছে। यद्दारु॒ प्लव॑ते॒ सिन्धो॑: पा॒रे अ॑पूरु॒षम्। तदा र॑भस्व दुर्हणो॒ तेन॑ गच्छ परस्त॒रम्॥ “যদ্ দারু প্লবতে সিন্ধোঃ পারে অপূরুষম্। তদা রভস্ব দুর্হণো তেন গচ্ছ পরস্তরম্।। অনুবাদঃ ঐ দূরদেশে, সমুদ্রের পারে কোন প্রযত্ন ছাড়াই প্রকাশিত অপৌরুষেয় দারু ভাসছে– হে চিরঞ্জীবী স্তুতিকর্তা– তাঁর উপাসনা কর। সেই দারুময় বিগ্রহের উপাসনায় তুমি শ্রেষ্ঠতর দিব্যলোক প্রাপ্ত করবে। – ঋগ্বেদ সংহিতাঃ ১০/১৫৫/৩ ।।জয় জগন্নাথ।। ।।হরে কৃষ্ণ।। ।।প্রনাম।। – সদগুন মাধব দাস

চন্ডীতে কি দূর্গা বা কালীপূজায় পশুবলির কথা আছে?

398558377_362174873046272_7374750911678333198_n

অনেকে প্রশ্ন করছিলেন- চন্ডীতে কি দূর্গা বা কালীপূজায় পশুবলির কথা আছে? রাজা সুরথ কি দূর্গাপূজায় পশুবলি দিয়েছিলেন? ( চণ্ডী, মার্কেন্ডপুরাণ, কালীকাপুরাণদি শাস্ত্র বিশ্লেষণ) ====================================== সপ্তশতশ্লোকী শ্রীশ্রীচণ্ডী হলো রাজসিক মার্কেন্ডপুরাণের অন্তর্গত একটি অত্যন্ত চমৎকার শাস্ত্র, যেখানে বৈষ্ণবী মাতা দূর্গার বিস্তৃত স্তুতি রয়েছে। এ জড় জগতে সর্বপ্রথম দেবী দূর্গার আনুষ্ঠানিক পূজা করেছিলেন রাজা সুরথ ও সমাধি বৈশ্য। তাই সুরথ রাজার দূর্গাপূজার কথা এখনো লোকের মুখে মুখে। সে সুরথ রাজা কিভাবে দেবীদূর্গার পূজা করেছিলেন তা মার্কেন্ড ঋষি বর্ণনা করেছেন চণ্ডীতে। কিছু কপট ধর্মব্যবসায়ী চণ্ডীর মাঝখান থেকে দুই একটি শ্লোক তুলে এনে, শুদ্ধ শাস্ত্র সিদ্ধান্ত গোপণ করে- দাবী করেন চণ্ডীতে নাকি পশুবলির বিধান আছে, এবং এ যুক্তিতে তারা সরল ধর্মপ্রাণ সনাতনীদের পথভ্রষ্ট করে নিজেদের মৌসুমী ব্যবসা হাসিল করে। তাদের দাবীকৃত অপপ্রচার সমূহের খন্ডন নিমিত্তে আজকের লিখনি- ——————– অপযুক্তি- ১: ——————— তথাকথিত ধর্মব্যবসায়ী জাতবামুনগণ চন্ডী হতে নিম্নোক্ত শ্লোক উদ্ধৃতি করে দাবী করেন, চন্ডীতে পশুবলির নির্দেশিকা আছে! বলি-প্রদানে পূজায়াম্, অগ্নি-কাৰ্য্যে মহোৎসবে। সৰ্ব্বং মম-এতৎ-চরিতম্, উচ্চার্য্যং শ্রাব্যমেব চ ॥ জানতা-অজানতা বাপি, বলি-পূজাং তথা কৃতাম্ । প্রতীচ্ছিষ্যামি-অহং প্রীত্যা, বহ্নি-হোমং তথা কৃতম্ ॥ [ #চন্ডী ১২।১০-১১; #মার্কেন্ডপুরাণ ৯২।৯-১০] বঙ্গানুবাদঃ বলিদানে, পূজায়, অগ্নি-কার্য্যে (যজ্ঞ ও হোমাদিতে) এবং মহোৎসবে আমার এই মাহাত্ম্য পাঠ ও শ্রবণ করবে। পূজা জেনে বা না জেনেও যদি এই মাহাত্ম্য পাঠপূর্ব্বক বলিদান, পূজা এবং হোমাদি করে তা অতি প্রীতিসহকারে আমি গ্রহণ করি । অপযুক্তি_খন্ডনঃ যাদের চেতনা দূষিত, তাদের চিন্তাধারা দূষিত হবে- এতে আর অবাক হওয়ার কি আছে?! দাবীকৃত উক্ত শ্লোকে ‘বলি’ শব্দ দেখেই মাংসলোলুপগণ লাফিয়ে পড়েন, অথচ তারা ‘বলি’ শব্দের অর্থ কি সেটাই জানে না। ‘বলি’ শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো উপহার। এ উপহার সাত্ত্বিকী, রাজসিক ও তামসিক – তিন প্রকার। তাহলে প্রশ্ন, চন্ডীতে কোন প্রকার বলির কথা আছে? চন্ডীতে ‘বলি’ শব্দের দ্বারা যে পশুবলিকে বুঝানো হচ্ছে? চলুন, চন্ডী থেকেই দেখে নিই- নিরাহারৌ যত-আহারৌ, তন্মনস্কৌ সমাহিতৌ । দদতুঃ তৌ #বলিং চৈব, #নিজ_গাত্র_অসৃগ_উক্ষিতম ॥ এবং সম-আরাধয়তোঃ, ত্রিভিঃ বর্ষৈ যত-আত্মনোঃ । পরিতুষ্টা জগদ্ধাত্রী, প্রত্যক্ষং প্ৰাহ চণ্ডিকা ॥ [ #চন্ডী ১৩।১১-১২; #মার্কেন্ডপুরাণ ৯৩।৮ ] বঙ্গানুবাদঃ সুরথ রাজা ও সমাধি বৈশ্য নিরাহারে, অল্প আহারে, সমাহিত চিত্তে #নিজ_গাত্র_সিক্ত #রক্ত_বলিরূপে প্রদান করেন। এরূপ সংযতচিত্তে তিন বৎসর আরাধনা করলে পরিতুষ্টা জগদ্ধাত্রী প্রত্যক্ষ রূপে আবির্ভূতা হয়ে বললেন। #সিদ্ধান্তঃ উক্ত শ্লোকে ‘ বলিং চৈব নিজ গাত্র অসৃগ উক্ষিতম’ দ্বারা বুঝানো হয়েছে #পূজারীর_শরীরের_রক্ত-ই দেবীকে #বলিরূপে নিবেদন করতে হবে। এতে দেবী পরিতুষ্ট হয়ে দর্শন দিবেন! কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, চন্ডীর মধ্যে উল্লেখিত এ শ্লোক লুকিয়ে তথাকথিত মাংসলোলুপ রাক্ষসগণ ভন্ডামী করে। এরা নিজের রক্ত দিয়ে পূজা দিতে ভয়ে ভীরু, এরা নাকি আবার শক্তির উপাসক!! নিজের রক্ত দিয়ে পূজা করার সাহস হয় না এদের, তাই অবলা পশুর উপর ছুরী চালিয়ে নিজের মিথ্যা বীরত্ব প্রকাশ করে! ছি! —————— অপযুক্তি ২: ——————- নিজেদের অপকর্মের সাফাই গাইতে তথাকথিত এ সকল ধর্মব্যবসায়ী মাংসলোলুপগণ চন্ডী হতে আরেকটি অপযুক্তি দেখায়- পশু-পুষ্প-অর্ঘ্য-ধূপৈঃ চ, গন্ধ-দীপৈঃ তথা-উত্তমৈঃ। বিপ্ৰাণাং ভোজনৈঃ হোমৈঃ, প্রোক্ষণীয়ৈঃ অহর্নিশম্ ॥ অন্যৈঃ চ বিবিধৈঃ ভোগৈঃ, প্রদানৈঃ বংসরেণ যা। প্রীতিঃ মে ক্রিয়তে সাম্মিন্, সকৃৎ সুচরিতে শ্রুতে ॥ [ চন্ডী ১২।২১-২২; মার্কেন্ডপুরাণ ১৯-২১ ] বঙ্গানুবাদঃ উত্তম পশু, পুষ্প, অর্ঘ্য, ধূপ, দীপ, গন্ধ, ব্রাহ্মণ ভোজন, দিবা-রাত্রি প্রোক্ষণীয় দ্রব্যাদি দিয়ে বিধিপূর্ব্বক অগ্নিতে হোম, অন্যান্য নানাবিধ উপচার প্রদান করতঃ একবৎসর পূজাতে যেরূপ প্রসন্ন হই একবার মাত্র এই মাহাত্ম্য শ্রবণে সেরূপ প্রীতিলাভ করি। অপপ্রচারকগণের দাবী এ শ্লোকে ‘পশু’ শব্দ দ্বারা পশুবলির কথা বলা হচ্ছে! অপযুক্তি_খন্ডন: প্রথমত উক্ত শ্লোকে ‘বলি’ শব্দের উল্লেখ নেই। যাদের চেতনা অখাদ্য-কুখাদ্যে নিমজ্জিত, সে সকল মাংসলোভীগণই ‘পশু’ শব্দ দেখলেই, তাদের চোখে ‘মাংস’ এর দৃশ্য ভাসমান হয়! কিন্তু আদৌ উক্ত শ্লোকে পশুবলি কিংবা পশুমাংসের কথা বলাই হয় নি। চন্ডীর উক্ত শ্লোকে ‘পশু’ শব্দ দ্বারা যজ্ঞে পশু ব্যবহারকে বুঝানো হয়েছে। যজ্ঞকালে যজ্ঞাহুতি শেষে যজমান ভগবানের প্রতিনিধি তথা যাজ্ঞিক ব্রাহ্মণকে পশুদান করে যজ্ঞকালে জ্ঞাতে অজ্ঞাতে হয়ে যাওয়া পাপ হতে মুক্ত হয়। দূর্গাপূজায় অষ্টমী ও দশমী তিথিতে অগ্নিহোম যজ্ঞ শেষে ব্রাহ্মণকে গো-দান, অশ্ব-দান, হস্তি-দান প্রভৃতি পশুদানের বিধান আছে এবং একেক দানে একেক ফল লাভ হয়। যজ্ঞ প্রারম্ভে যেমন যজমান চুল, নখ কর্তন করে স্নানান্তে শুচি হয়, তেমনি যজ্ঞের পূর্বে যজ্ঞে ব্যবহৃত সকল সামগ্রীকে শুচি করে নিতে হয়। যজ্ঞে ব্যবহৃত পশুভেদে তাদের নখ, খুর, পশম, চুল ইত্যাদি অঙ্গ (বিজ্ঞানের ভাষায় বহিঃকঙ্কালতন্ত্র) চ্ছেদন করে তাদের স্নান করিয়ে যজ্ঞের জন্য শুচি করা হয়। শ্রীল বিশ্বনাথ চক্রবর্তী ঠাকুর যজ্ঞে পশুব্যবহার সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন- ‘পশোরালভন কিঞ্চিদঙ্গচ্ছেদনমের ন তু হিংসা বধঃ।’ অর্থাৎ, পশুর কিঞ্চিৎ অঙ্গচ্ছেদনই যজ্ঞে দেবতার উদ্দেশ্য বিধান, একে বারে বধ নহে। (#সারার্থদর্শিন্যাখা-টীকয়া, ভা.১১।৫।১৩) এভাবে অশ্ব,গর্দভ,মহিষাদি পশুর খুর/নখ ও লম্বা কেশ চ্ছেদন, ভেড়া, মেষাদি পশুর পশম চ্ছেদন দ্বারা এ সমস্ত পশুকে যজ্ঞের জন্য সংস্কার করা হয়, তখন এ সকল পশুকে শাস্ত্রীয় ভাষায় বলে ‘প্রোক্ষিপ্ত পশু’। যেহেতু বেদমন্ত্র দ্বারা এ সকল পশুকে প্রক্ষেপণ করা হয়, তাই এ সকল পশুর উপর যজ্ঞপতি বিষ্ণুর অধিকার থাকে, যজমান যজ্ঞ শেষে এ সকল পশুকে বিষ্ণুর প্রতিনিধি যাজ্ঞিক ব্রাহ্মণ/ বৈষ্ণবকে দান করেন। বেদমন্ত্র দ্বারা প্রোক্ষিপ্ত এ সকল পশু স্বয়ং ব্রহ্মতুল্য ( অর্থাৎ, বিষ্ণুর ন্যায় জ্ঞাত)। তাই, যদি কেউ যজ্ঞে সংস্কৃত পশুকে হত্যা করে, তবে তিনি ব্রহ্মহত্যা মহাপাপে জর্জরিত হয় এবং ইহলোক ও পরলোকে অতিশয় দুঃখ-যাতনা ভোগ করতে থাকে। কালিকা উপপুরাণে বলা হয়েছে- হস্তেন ছেদয়েদ যস্তু প্রোক্ষিতং সাধকঃ পশুম। পক্ষিণং বা ব্রহ্মবধ্যামবাপ্লোতি সুদঃসহাম। [ #কালিকাপুরাণ, ৬৭ অধ্যায়, শ্লোক ২৮] অনুবাদ- যে সাধক প্রোক্ষিপ্ত(যজ্ঞের জন্য সংস্কারকৃত) পশু বা পক্ষীকে স্বহস্তে ছেদ করেন, তিনি ব্রহ্মহত্যা পাপে আক্রান্ত হন প্রাপ্ত হয়ে অতিশয় দুঃখ ভোগ করেন। তাই কেউ যদি এরূপ পাপকর্ম হতে বাঁচতে চায় তবে সে মায়ের উদ্দেশ্য কোন প্রকার পশুবলি দিবে না। কিন্তু বলি ব্যতীত মায়ের পূজা হয় না। তাই উক্ত কালিকাপুরাণে বিধান দেওয়া হয়েছে, যারা পশুবলির পাপ হতে বাঁচতে চায় এবং একই সাথে কালীকে প্রসন্ন করতে চান তারা #কুমড়া_ও_ইক্ষু(আখ)-কেই_সাত্ত্বিকী_বলি হিসেবে দেবীকে নিবেদন করবেন। দেখুন কি বলা আছে কালিকা উপপুরাণে কুষ্মান্ডমিক্ষুদগুঞ্চ মদ্যমাসব‌মেবচ। এ‌তে ব‌লি সমাঃ প্রোক্তাস্তৃ‌প্তৌ ছাগসমাঃ সদা।। [#কা‌লিকাপুরাণ-৬৭ অধ্যায়, শ্লোক ২৫] অনুবাদঃ কুষ্মান্ড(কুমড়া) ও ইক্ষুদন্ড, মদ্য(পুষ্পমধু) ও আসব(পুষ্প আসব) ইহারাও ব‌লি এবং ছাগসমা তৃ‌প্তিকারক।। কালীকাপুরাণে আরো বলা হয়েছে- “হে ভৈরব! ঘৃতময় পিষ্টক(পীঠা) বা যবচুর্ণ দিয়ে ব্যাঘ্র, মনুষ্য অথবা সিংহাদি পশুর প্রতিমূর্তি নিৰ্মাণ করে তাহাকে পূর্বোক্ত মন্ত্র দ্বারা সংস্কৃত করবে এবং চন্দ্রহাস অস্ত্র দ্বারা তাহার ছেদ করিবে। “ [#কা‌লিকাপুরাণ-৬৭ অধ্যায়, শ্লোক ৫৫] কালীকাপুরাণে ‘পশুবলি’ সম্পর্কে বলতে গিয়ে উক্ত শ্লোকগুলো উদ্ধৃত হলেও ধর্মব্যবসায়ীগণ সুকৌশলে উক্ত শ্লোকগুলো গোপণ করে কপটচারীটা করে!!! চন্ডী তথা রাজসিক মার্কেন্ড পুরাণে সুরথ রাজার দূর্গাপূজার যে উপাখ্যানটি বর্ণিত আছে, সে একই উপাখ্যান সবিস্তারে আরেক রাজসিক পুরাণ- শ্রীব্রহ্মবৈবর্তপুরাণে উল্লেখ আছে। ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ হলো রাজসিক পুরাণসমূহের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। সেখানে সুরথ রাজার দূর্গাপূজা সম্পর্কে বলতে গিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে- বলিদানেন বিপ্রেন্দ্র দূর্গাপ্রীতির্ভবেন্নৃণাং হিংসাজন্যঞ্চ পাপঞ্চ লভতে নাত্রসংশয়ঃ।।১০ উৎসর্গকৰ্ত্তা দাতা চ ছেত্তা পোষ্টা চ রক্ষকঃ। অগ্রপশ্চান্নিবদ্ধা চ সপ্তৈ তে বধভাগিনঃ ॥১১ যো যং হন্তি সতং

মেয়েদের অর্থপূর্ণ শাস্ত্রীয় নাম

20240627_113111

🌱শিশুদের অর্থপূর্ণ  নাম সংগ্রহে:  সুনন্দন কানাইয়া দাস  রঞ্জন রাসেশ্বর দাস ▫ এই পর্বে থাকছে মেয়েদের নাম ▫️ 🌱অ ▫️ অগ্নিজিতা (অগ্নিতে প্রবেশ করেও যে দগ্ধ হয়নি) অঙ্কিতা অঙ্গনা  অঞ্চিতা (পূজিতা) অঞ্জনা (হনুমানের মাতা) অঞ্জলি  অণু অণুপ্রভা অণিমা অতসী (পুষ্পবিশেষ) অতীন্দ্রিলা অতুল্যা অথই/অথৈ অদিতি  অধরা অনন্যা (অদ্বিতীয়া) অনামিকা  অনিন্দিতা  অনুপমা অনুরাধা (ললিতা দেবী, নক্ষত্রবিশেষ)  অনুসূয়া (ঈর্ষাশূন্য) অন্তরা  অন্বেষা অপরাজিতা অপরূপা  অপর্ণা (পার্বতী দেবী) অপূর্বা অবন্তি/অবন্তী  (উজ্জয়িনী) অবন্তিকা অভয়া অমিয়া  অম্বা  (মা, দুর্গা)  অম্বালিকা  (দুর্গা) অম্বিকা (মা, দুর্গা) অমৃতা অরুণা (অরুণবর্ণ বিশিষ্টা)  অরুণি অরুণিমা (গোলাপী আভা) অরুন্ধতী (নক্ষত্রবিশেষ,  বশিষ্ঠের স্ত্রী) অর্চনা অর্চি   (শিখা) অর্চিতা অর্পিতা অলকা  (কুবেরের পুরী) অলকানন্দা (স্বর্গের গঙ্গা) অলি (ভ্রমর)  অসিতা (শ্যামলী) অহল্যা অহৈতুকী ▫️ 🌱আ ▫️ আকুতি আঁখি আঁচল (সং. অঞ্চল) আভা (দীপ্তি) আরতি আরাধনা আরাধিতা (পূজিতা) আরাধ্যা (উপাস্য) আল্পনা (সং. আলেপন) আলো (সং. আলোক) আশা আশাবরী (রাগিণীবিশেষ)  আশালতা  ▫️ 🌱ই ▫️ ইতি ইন্দিরা (লক্ষ্মীদেবী)  ইন্দুকান্তি ইন্দুমতী (পূর্ণিমা) ইন্দুমুখী (চন্দ্রমুখী)  ইন্দুলেখা (চন্দ্রকলা)  ইন্দ্রা ইন্দ্রাণী (ইন্দ্রপত্নী)  ইরাবতী (নদীবিশেষ) ▫️ 🌱ঈ ▫️ ঈপ্সিতা ঈশানী (দুর্গা)  ঈশিতা  ঈশ্বরী  ঈশা (ঈশ্বরী) ঈষা (সীতা) ঈষিকা/ঈষীকা (তুলি) ▫️ 🌱উ ▫️ উত্তমা  উত্তরা উপমা উমা উর্বশী  উলুপী (অর্জুনের স্ত্রী)  উষা ▫ 🌱ঊ ঊর্জস্বী (তেজস্বী) ঊর্মি  (তরঙ্গ)  ঊর্মিলা  ঊষা ▫ 🌱ঋ ঋজুতা (সরলতা)  ঋতু ঋতি (গতি) ঋত্বিকা ঋদ্ধিমা ▫ 🌱এ একা (সং. একাকিন্) একেশ্বরী  ▫ 🌱ঐ  ঐকান্তি ঐন্দ্রিলা  ঐশী ঐশ্বর্য  ▫ 🌱ও ওজস্বিনী (তেজস্বিনী)  ওজস্বিতা  ▫ ঔ ❌ ▫️ 🌱ক ▫️ কণা কণিকা কথা কবরী (খোঁপা) কবিতা কমলা (লক্ষ্মী)  কমলাক্ষী কমলিনী (পদ্মিনী)  কল্যাণী  কাকলী কাজরী (ভারতীয় পল্লীগীতি-বিশেষ) কাজল কাত্যায়নী  কাদম্বরী (সরস্বতী,  কোকিলা, শারিকা) কাদম্বিনী (মেঘপুঞ্জ)   কান্তা কান্তি  কাবেরী (সপ্তগঙ্গার অন্যতম) কামদা (সুরভী) কামিনী (ফুলবিশেষ)  কালিন্দী কিশোরী (রাধারাণী)  কীর্তিদা কুন্তী  কুমুদিনী (লাল/শ্বেতপদ্ম-শোভিত সরোবর) কুমুদী (লাল/শ্বেতপদ্ম)  কুসুম কুসুমিতা (পুষ্পিতা) কৃত্তিকা (নক্ষত্রবিশেষ)  কৃষ্টি কৃষ্ণকলি (ফুলবিশেষ)  কৃষ্ণকান্তি কৃষ্ণপ্রিয়া কৃষ্ণবর্ণা  কৃষ্ণময়ী কৃষ্ণা কেতকী (কেয়া) কেশবী কৌমুদী (জ্যোৎস্না)  কৌশল্যা কৌশিকী (মহামায়ার রূপবিশেষ) ▫ খ ❌ ▫️ 🌱গ ▫️ গঙ্গা গায়ত্রী  গীতা গীতাঞ্জলি গীতিকা (গাথা) গীতেশ্বরী গুণময়ী গোধূলি  গোপিকা গোপিনী গোমতী ( অযোধ্যার নদীবিশেষ)  গৌতমী (দুর্গা)  গৌরাঙ্গী  গৌরী  ▫ ঘ, ঙ ❌ ▫️ 🌱চ ▫️ চঞ্চলা (লক্ষ্মীদেবী) চন্দনা (নদীবিশেষ)  চন্দ্রকান্তা  চন্দ্রকান্তি  চন্দ্রপ্রভা  চন্দ্রমল্লিকা (পুষ্পবিশেষ)  চন্দ্রা চন্দ্রাবতী  চন্দ্রাবলী  চন্দ্রিকা (জোৎস্না) চন্দ্রিমা  চম্পকলতা চম্পা (সং. চম্পক) চয়নিকা ( সঙ্কলিত রচনা বা কবিতাবলি)  চারুলতা  চিত্রলেখা চিত্রা (নক্ষত্রবিশেষ)  চিত্রাঙ্গদা (অর্জুনের স্ত্রী) চিন্ময়ী  চেতনা চৈতালি/চৈতালী চৈতি/চৈতী (চৈত্রমাসের)  ▫ 🌱ছ ছন্দা ছবি (দ্যুতি) ▫️ 🌱জ ▫️ জগদম্বা  জয়তি জয়দা জয়প্রদা জয়শ্রী জয়ন্তী (পতাকা, দুর্গা)  জয়া (দুর্গা, হরীতকী) জানকী জাহ্নবা জাহ্নবী (গঙ্গানদী)  জুঁই (সং. যূথিকা)  জ্যোতি জ্যোতিকা জ্যোতির্ময়ী  জ্যোৎস্না  ▫ 🌱ঝ ঝর্ণা  ঝুমুর (সং. ঝুমরি)  ▫ ঞ, ট, ঠ, ড, ঢ, ণ  ❌ ▫️ 🌱ত ▫️ তটিনী (নদী) তনয়া তনিমা তনু তনুশ্রী  তন্দ্রা তন্বী  তপতী (নদীবিশেষ)  তপস্বিনী  তমালিকা (তেজপাতা) তমালিনী (তমালবহুল স্থান) তরঙ্গিণী  তরী  তরু  তরুণিমা তাপসী (তপস্বিনী)  তিতিক্ষা ( সহিষ্ণুতা)  তিথি তিলোত্তমা (তিল তিল করে উত্তমরূপে নির্মিতা) তুঙ্গবিদ্যা তুলনা তুলসী তুলি (সং. তূলি) তৃণা তৃপ্তা তৃপ্তি তৃষা (পিপাসা)  তৃষিতা তৃষ্ণা  ত্রপা (লজ্জা)  ত্রয়ী  ত্রিনয়না (দুর্গা) ত্রিনয়নী  ▫ থ ❌ ▫️ 🌱দ ▫️ দময়ন্তী (বিদর্ভ রাজকন্যা) দয়ানিধি দয়িতা (প্রিয়া) দামিনী (বিদ্যুৎ)  দিঠি (দৃষ্টি) দিবা দিব্যরূপা দিব্যা দিশা দিয়া (সং. দ্বারা) দীপা দীপাঞ্জনা দীপালি দীপাবলি দীপিকা  দীপ্তি  দুর্গা দুহিতা (নন্দিনী)  দৃষ্টি দেবকী দেবযানী দেবহূতি দেবী  দোলা, দুলা (সং. দুল্) দ্যুতি  দ্রৌপদী ▫ 🌱ধ ধনিষ্ঠা (নক্ষত্রবিশেষ)  ধরিত্রী  ধর্মিষ্ঠা (ধার্মিক) ▫️ 🌱ন ▫️ নদী নন্দনা নন্দিতা (আনন্দিত)  নন্দিনী (দুহিতা, আনন্দদায়িনী)  নবমী  নয়না নয়নী  নর্মদা  নাভাদেবী নারায়ণী  নিপুণ নিবেদিতা  নিরঞ্জনা (নির্মলা, পূর্ণিমা) নিরুপমা নির্মলা নিশুতি/নিষুতি (গভীর রাত) নিষ্ঠা নীরজা (পদ্ম) নীরদা (মেঘ) নীরাজনা (আরতি) নীলা (নীলকান্তমণি)  নীলাঞ্জনা নীলাম্বরী (নীল শাড়ি) নীলিমা  নূপুর  নোলক (সং. লোলক) ▫️ 🌱প ▫️ পঞ্চমী  পদ্মগন্ধা পদ্মমুখী  পদ্মা (লক্ষ্মীদেবী) পদ্মাবতী পদ্মিনী (পদ্মবিশিষ্ট, সুলক্ষণা নারী) পবিত্রা পরমা পরমেশ্বরী  পরিণীতা  পর্ণী (পত্রযুক্ত)  পল্লবী  পাঞ্চালী পান্না (মণিবিশেষ,  পারণা-র কথ্যরূপ)  পাপড়ি (সং. পর্ব) পাবনী (গঙ্গানদী)  পার্বতী  পিপাসা পুণ্যা পুষ্প পুষ্পিকা পুষ্পিতা (কুসুমিতা)  পূজা পূরবী/পুরবী (রাগিনীবিশেষ) পূর্ণা পূর্ণিমা পূর্বা  পূর্বাশা (পূর্বদিক) পূর্বিতা (অগ্রগণ্যতা)  পৃথা পৌলোমী (ইন্দ্রপত্নী)  পৌষী প্রকৃতি  প্রজ্ঞা (গভীর জ্ঞান) প্রণতি প্রতিভা প্রতিমা প্রতীক্ষা  প্রত্যাশা প্রথমা প্রভা প্রভাতী  প্রভাবতী  প্রভাময়ী প্রমা (যথার্থ জ্ঞান) প্রমীলা (তেজী স্ত্রী) প্রশান্তি  প্রাচী (পূর্বদিক) প্রাপ্তি প্রার্থনা প্রিয়মঞ্জরী প্রিয়ংবদা  প্রিয়তোষিণী প্রিয়দর্শিনী  প্রিয়সখী  প্রিয়া প্রীতি প্রীতিলতা  প্রেমদা প্রেমা প্রেরণা প্রেয়সী প্রেষ্ঠা (প্রিয়তমা) প্লাবিতা  ▫ 🌱ফ ফাল্গুনী ▫️ 🌱ব ▫️ বকুল বনলতা বন্দনা বর্ণালি/বর্ণালী  বর্ষা বসুমতী  বাঁধন বারি (জল) বাসন্তী (দুর্গা) বাসুলী, বাশুলী (বিশালাক্ষী দেবী) বিচিত্রা বিজয়া (দুর্গা) বিদ্যা বিনতা (গরুড়ের মাতা) বিনোদিনী  বিন্দু বিন্ধ্যা বিপাশা (নদীবিশেষ) বিভা (প্রভা) বিভাবরী (রাত্রি)  বিমলা বিরজা বিশাখা বিশালাক্ষী (দুর্গাদেবী)  বিশালী  (অতিশয় উদারতা) বিষ্ণুপ্রিয়া  বীণা বীণাপাণি বীথি, বীথি (সারি, পঙক্তি)  বীথিকা বৃন্দা বৃষ্টি বৈজয়ন্তী (পতাকা, মালা) বৈশাখী (বিশাখা-নক্ষত্রযুক্ত পূর্ণিমা) ব্রজেশ্বরী ▫️ 🌱ভ ▫️ ভক্তি ভক্তিদেবী ভক্তিমতী  ভক্তিময়ী ভগবতী ভবতারিণী  ভবানী  ভাগীরথী  ভানুমতী (সুন্দরী)  ভুবনেশ্বরী  ভৈরবী  ▫️ 🌱ম ▫️ মঙ্গলা (শুভদায়িনী)  মঞ্জরি, মঞ্জরী (মুকুল)  মঞ্জু (সুন্দর) মঞ্জুলালী  মঞ্জুষা (ঝাঁপি)  মণি মণিকা মণিময়ী মধুছন্দা মধুপ্রিয়া মধুরা  মধুরিমা মনমোহিনী  মনীষা (প্রজ্ঞা)  মনোহারিণী মনোরমা মনোলোভা  মন্দাকিনী মন্দিরা (বাদ্যযন্ত্রবিশেষ) মমতা মল্লিকা  মহামায়া মহালক্ষ্মী মহাশ্বেতা (সরস্বতী)  মহিমা মাদ্রী মাধবী মাধুরী মাধুর্য মানসী মালতী মালা মিতা (মিত্র) মিতালি/ মিতালী  মিত্রবিন্দা মিত্রা (বান্ধবী) মিথিলা মিনতি মিষ্টি মীনাক্ষী  মুক্তা মুক্তি মুগ্ধা মৃণালিনী  মৃত্তিকা  মৃন্ময়ী  মেধা মৈত্রী  মৈথিলী (সীতা, মিথিলার ভাষা) মোহনা মোহিনী  মৌনী (মৌনব্রতী) মৌলি/মৌলী (মুকুট, মস্তক) ▫️ 🌱য ▫️ যমুনা যশোদা যশোমতী  যামিনী (রাত্রি)  যূথী (জুঁইফুল)  যূথিকা (জুঁইফুল)  যোগমায়া  ▫️ 🌱র ▫️ রঙ্গদেবী রঙ্গিণী  রচনা রজনী  রঞ্জিতা রত্নপ্রভা রত্নময়ী  রত্না রত্নাবতী রত্নাবলী  রমা (লক্ষ্মীদেবী)  রম্যা (মনোরমা) রসমঞ্জরি রাই রাইকিশোরী রাকা (পূর্ণিমার চাঁদ)  রাখি/রাখী (মঙ্গলসূত্র)  রাজনন্দিনী  রাজলক্ষ্মী  রাজশ্রী  রাজেশ্বরী রাত্রি রাধা রাধারাণী রাধিকা রামা (প্রিয়া) রাসমণি রাসেশ্বরী রাহি (রাই) রুক্মিণী  রুচি (দীপ্তি) রূপমঞ্জরি  রূপশ্রী রূপা রূপালি/রুপালি  রূপিণী  রেখা রেণু (ধুলা) রেণুকা রেবতী ( বলরামের পত্নী,  নক্ষত্রবিশেষ)  রেবা (নর্মদানদী) রোহিণী  ▫️ 🌱ল ▫️ লক্ষণা  লক্ষ্মী লক্ষ্মীদেবী লক্ষ্মীপ্রিয়া লতা ললিতা লাবণি লাবণ্য লাবণ্যময়ী  লাস্যময়ী  লিপি লিপিকা (পত্র) লীলাময়ী  লীলেশ্বরী লোপামুদ্রা ▫️ 🌱শ ▫️ শচী শচীদেবী শচীমাতা শতরূপা শতাব্দী  শমিতা (প্রশমিতা) শম্পা (বিদ্যুৎ)  শর্বরী (রাত্রি) শর্মিলা শর্মিষ্ঠা  শশী শান্তা (শ্রীরামচন্দ্রের বড় বোন) শান্তি শারদা (দুর্গা, সরস্বতী)  শাশ্বতী শিখা শিপ্রা (উজ্জয়িনীতে প্রবাহিত শাখা নদী) শিবা (দুর্গা) শিবাঙ্গী  শিবানী  শিলা (প্রস্তর)  শিল্পা শিল্পী  শুক্লা শুভঙ্করী (দুর্গাদেবী)  শুভদা ( কল্যাণকারিণী) শুভ্রা শৈলী (রীতি) শোভা শ্যামবিনোদিনী শ্যামলা শ্যামলী শ্যামা শ্রবণা (নক্ষত্রবিশেষ) শ্রিয়া শ্রীদেবী  শ্রীময়ী  শ্রুতি শ্রুতিপ্রিয়া শ্রেয়সী (শ্রেষ্ঠ)  শ্রেয়া ▫ 🌱ষ ষষ্ঠী  ▫️ 🌱স ▫️ সংহিতা  সত্যভামা সন্তোষী সন্ধ্যা সন্মোহিনী সপ্তমী  সবিতা (জনয়িতা)  সমর্পিতা  সমাপ্তি সম্পূর্ণা সম্প্রীতি  সরস্বতী সর্বপূজ্যা সরোজিনী (কমলিনী)  সাধনা সাধিকা (সাধক) সাবিত্রী ( গায়ত্রী,  দুর্গা) সারদা সায়ন্তনী  সিঁথি সিক্তা সিঞ্চিতা সিতি ( শ্বেতবর্ণ,  নীলবর্ণ)  সিতিমা (নীলিমা) সিদ্ধিদা সীতা সীমন্তিনী (নারী) সীমা সুকন্যা  সুকেশা সুখদা সুগন্ধা  সুচরিতা সুচিত্রা  সুজাতা সুতন্বী সুতপা (কঠোর তপস্যায় অভ্যস্ত) সুদর্শনা  সুদেবী সুনন্দা সুনয়না

ছেলেদের অর্থপূর্ণ শাস্ত্রীয় নাম

20240627_112451

🌱শিশুদের অর্থপূর্ণ  নামসংগ্রহে:  সুনন্দন কানাইয়া দাস  রঞ্জন রাসেশ্বর দাস ▫ এই পর্বে থাকছে ছেলেদের নাম। ▫️ 🌱অ ▫️ অকিঞ্চন  অক্ষয় অখিল (সমস্ত) অখিলাত্মা অখিলেশ অগ্নিকুমার (কার্তিক)  অগ্নিদেব অঙ্কন অঙ্কুর  অঙ্গদ অংশু (প্রভা) অচিন্ত্য  অচ্যুত অচ্যুতানন্দ অজয় (নদবিশেষ) অজিত অজিতেশ্বর অজেয় অঞ্জন (চোখের প্রসাধনী)  অটল (দৃঢ়) অতনু অতুল  অত্রিমুনি অদ্বৈত  অনঙ্গমোহন (শ্রীকৃষ্ণ)  অনন্ত অনন্য  অনাদি অনিন্দ্য অনিমেষ (অপলক, স্থির) অনিরুদ্ধ  অনির্বাণ (নেভে না এমন) অনিল (বাতাস) অনীক (সৈন্যদল, সংগ্রাম) অনুজ অনুত্তম (সর্বোৎকৃষ্ট)  অনুপ (অনুপম) অনুপম অনুরাগ অন্তর অন্বয় (অনুবৃত্তি) অন্বেষ অন্বেষণ অপরাজেয়  অপরূপ  অপূর্ব অবনী, অবনি (পৃথিবী)  অবিনাশ  অভয় অভয়চরণ অভি (উপসর্গবিশেষ) অভিজিৎ (নক্ষত্রবিশেষ, জয়ী) অভিনন্দন অভিনব অভিমন্যু  অভিরাম (মনোহর) অভিলাষ অভিষেক অভী (সাহসী) অভীক, অভিক (সাহসী) অভ্র (মেঘ, আকাশ) অমিত (অপরিমেয়)  অমিতাভ (অসীম জ্যোতি যার) অমিয় অমৃত অম্বরীষ অম্লান অয়ন (পথ, শাস্ত্র, ভূমি, গৃহ, সূর্যের গতি) অরণ্য  অরবিন্দ (পদ্ম) অরিজিৎ অরিত্র (নৌকাদির হাল) অরিন্দম অরুণ অরূপ অর্ক (সূর্য) অর্ঘ (পূজা) অর্ঘ্য (পূজার উপকরণ) অর্চন অর্চিত (পূজিত) অর্জন অর্জুন অর্ণব (সমুদ্র) অর্পণ অলক (চুল, মেঘ) অশেষ অশোক অশ্বিনীকুমার  অসিত (শ্যামল) ▫️ 🌱আ ▫️ আকাশ আত্মারাম আত্রেয় আদিত্য আদিদেব  আদিনাথ  আদিপুরুষ  আদৃত (সমাদৃত)  আনন্দ আনন্দগৌর আনন্দবর্ধন আবির আরাধ্য  আশিস্  আশুতোষ (শিব) আশ্রয় আয়ুষ ▫️ 🌱ই ▫️ ইক্ষ্বাকু ইন্দুভূষণ (শিব) ইন্দ্র ইন্দ্রদ্যুম্ন ইন্দ্রনীল (নীলকান্তমণি) ইন্দ্রপতি ইন্দ্রপালক ইন্দ্রসুত (জয়ন্ত, অর্জুন, বানররাজ বালী) ইন্দ্রসেন (যুধিষ্ঠিরের সারথি) ইমন (রাগিণীবিশেষ) ইরাবান (অর্জুনপুত্র) ▫️ 🌱ঈ ▫️ ঈশপ্রকাশ ঈশান (শিব) ঈশ্বরচন্দ্র  ঈশ্বরপুরী  ▫️ 🌱উ ▫️ উচ্ছ্বাস  উজ্জ্বল  উৎকর্ষ (উৎকৃষ্টতা)  উৎকল (উড়িষ্যা)  উৎপল উৎস উত্তম উত্তমানন্দ উত্তানপাদ উত্তিষ্ঠ (ওঠো) উদয় উদ্ধব উন্মেষ উপেন্দ্র (বামন অবতার) উমাপতি উমেশ (শিব) ▫ 🌱ঊ ঊষাপতি  ▫️ 🌱ঋ ▫️ ঋতুজিৎ ঋতুদ্বীপ  ঋতুরাজ ঋদ্ধ (সমৃদ্ধিযুক্ত)  ঋদ্ধি (সর্বাঙ্গীণ উন্নতি) ঋদ্ধিমান (সমৃদ্ধ)  ঋভু (দেবতা) ঋষভ ঋষি ঋষ্য (সুনয়ন, হরিণ) ঋষ্যশৃঙ্গ  ▫ 🌱এ একনাথ একেশ্বর ▫ 🌱ঐ ঐক্য ঐন্দ্র ▫ 🌱ও ওম ▫ 🌱ঔ ঔদার্য  ▫️ 🌱ক ▫️ কজ্জল (কাজল) কনক (স্বর্ণ) কপিল কমল কমলাকর (পদ্মবহুল জলাশয়)  কমলাকান্ত  কমলাক্ষ  কমলাপতি  করুণা করুণাসিন্ধু কর্ণপুর কর্দমমুনি  কল্পতরু  কাঞ্চন কানন কানাই কানাইয়া কানুপ্রিয় কান্ত (কমনীয়, প্রিয়) কাব্য কার্তিক কার্তিকেয়  কিশোর কীর্তন কুমুদ (লাল/শ্বেতপদ্ম)  কুশল (মঙ্গল, দক্ষ) কৃপানিধি  কৃপাময়  কৃপালু কৃপাসিন্ধু  কৃষ্ণ কৃষ্ণকান্ত  কৃষ্ণকীর্তন  কৃষ্ণচন্দ্র  কৃষ্ণদাস কৃষ্ণানন্দ কেশব কৌশল কৌশিক (রেশমী, বিশ্বামিত্র)  ক্ষিতীশ (রাজা) ক্ষীরোদ (ক্ষীরসমুদ্র)  ▫ 🌱খ খোকা খোকন  ▫️ 🌱গ ▫️ গগন  গঙ্গাদাস গণেশ গদাধর গিরিধারী গিরিরাজ গিরীশ (শিব) গোকুল গোকুলপতি গোকুলানন্দ গোপবন্ধু গোপাল গোপীকান্ত গোপীনাথ গোবর্ধন  গোবিন্দ গোলকপতি গৌতম গৌর গৌরকিশোর  গৌরগোপাল গৌরগোবিন্দ  গৌরচন্দ্র গৌরব গৌরমোহন গৌরসুন্দর গৌরহরি গৌরা গৌরাঙ্গ গৌরীদাস ▫ 🌱ঘ ঘনশ্যাম  ▫ ঙ ❌ ▫️ 🌱চ ▫️ চকোর (পক্ষীবিশেষ)  চক্রপাণি  চতুরাত্মা চন্দন চন্দ্রকান্ত (মণিবিশেষ) চন্দ্রকিশোর  চন্দ্রবদন চন্দ্রমোহন  চন্দ্রমৌলি (শিব) চন্দ্রশেখর  চমক (বিষ্ময়) চম্পক (চাঁপাফুল) চয়ন (সংগ্রহ) চিত্রক (তিলক) চিত্রকর্মা (অদ্ভুত কার্য করে এমন) চিত্রকূট  চিত্রভানু (অগ্নি, সূর্য) চিন্ময়  চিরঞ্জীব  চেতক (চেতনা দানকারী) চৈতন্য ▫ ছ ❌ ▫️ 🌱জ ▫️ জগদানন্দ জগদীশ  জগদ্‌গুরু জগন্নাথ জগন্নিবাস  জগন্ময় (পরমেশ্বর) জগমোহন (পৃথিবীকে মুগ্ধ করে এমন) জনার্দন  জন্মেজয় (মহারাজ পরীক্ষিতের পুত্র) জয় জয়তীর্থ জয়দেব জয়ন্ত (ইন্দ্রপুত্র, শিব, ভীমের ছদ্মনাম) জয়াদ্বৈত জয়ানন্দ জিতেন্দ্রিয়  জিৎ (জয়কারী)  জিষ্ণু (বিজয়ী, বিষ্ণু, অর্জুন) জীবিতেশ (প্রাণেশ্বর)  জ্যোতির্ময়  ▫ 🌱ঝ ▫️ ঝলক (সং. জ্বলকা) ঝুলন ▫ ঞ, ট, ঠ, ড, ঢ, ণ  ❌ ▫️ 🌱ত ▫️ তনয় (পুত্র) তন্ময় তপন (সূর্য) তপস্বী  তপেশ্বর তমাল তরঙ্গ তরুণ তাপস (তপস্বী) তারক (উদ্ধারকারী)  তারকনাথ (শিব) তারণ  তিরুপতি তিলক তীর্থ  তীর্থঙ্কর (সিদ্ধপুরুষ)  তীর্থরাজ তুষ্টাত্মা তুষার তুহিন (তুষার) ত্রিনয়ন ত্রিবিক্রম ত্রিভঙ্গ ▫ থ ❌ ▫️ 🌱দ ▫️ দশরথ (যার রথ দশদিকেই চলতে পারে) দয়াময় দয়াসিন্ধু দামোদর দিগন্ত দিনমণি  দিনেশ (সূর্য) দিবাকর (সূর্য) দিব্য দিব্যজ্যোতি দিব্যদর্শন দিব্যদর্শী  দিব্যম্ দিব্যরূপ দিব্যশক্তি দিব্যসিংহ দীননাথ  দীনপাবন দীনবন্ধু  দীনেশ্বর দীপ (বাতি) দীপক (প্রদীপ) দীপন (দীপ্তকরণ) দীপ্ত দুর্জয় দুর্লভ দেব  দেবকীনন্দন  দেবদত্ত ( অর্জুনের শঙ্খ) দেবজ্যোতি  দেবদুলাল দেবধর্ম দেবপতি  দেবপ্রিয় দেবব্রত (ভীষ্ম) দেবর্ষি  দেবরাজ দেবল দেবাংশু দেবাত্মা দেবানন দেবানন্দ দেবামৃত দেবেন্দ্র (ইন্দ্র) দেবেশ (শ্রীকৃষ্ণ) দোলন দ্বারকা দ্বারকেশ দ্বারিকানাথ  দ্বিজপতি  দ্বিজমণি দ্বিজরাজ  দ্বিজেশ্বর দ্বৈপায়ন (ব্যাসদেব) ▫️ 🌱ধ ▫️ ধনঞ্জয় (অর্জুন) ধরণী ধরণীধারণ ধীমান (জ্ঞানী)  ধীর কানাই ধৃতিমান ধৃষ্টদ্যুম্ন  ধ্রুব ▫️ 🌱ন ▫️ নকুল (শিব) নক্ষত্র নচিকেতা  নদীয়া নন্দন (পুত্র, আনন্দদায়ক) নন্দসূত নবদ্বীপ  নবরূপ  নবীন  নয়ন নয়নানন্দ  নয়ান (নয়ন) নরহরি নরেন্দ্র (রাজা) নরেশ (রাজা) নরোত্তম  নারদ নারায়ণ  নিকুঞ্জ (লতাগৃহ)  নিকেতন  নিতাই নিত্য নিত্যসেবক নিত্যানন্দ  নিবাস নিমাই নিমেষ (মুহূর্তকাল) নিরঞ্জন  নিরুপম  নির্জন নির্ঝর নির্মল  নিলয় নীরাজন (আরতি) নীল নীলকণ্ঠ (শিব) নীলকান্ত  নীলকান্তমণি (দুর্লভ প্রস্তর বিশেষ) নীলমণি (শ্রীকৃষ্ণ) নীলমাধব নীলাচল  নীলাদ্রি (জগন্নাথপুরি) নীলাম্বর  নীলোৎপল নীহার (বরফ) নৃসিংহ ▫️ 🌱প ▫️ পঙ্কজ (পদ্ম) পঞ্চম পদ্মনয়ন পদ্মনাভ পদ্মনেত্র পদ্মপাণি পদ্মমুখ  পদ্মলোচন পবন পবিত্র পরম পরমদয়ালু পরমপতি পরমপুরুষ  পরমানন্দ পরমেশ্বর  পরশুরাম পরাগ (ফুলরেণু) পরাশর পরিতোষ  পরিমল (চন্দনাদির সুগন্ধ)  পরীক্ষিৎ পলাশ পল্লব পাঞ্চজন্য  পাণ্ডব পান্থ (পথিক) পাবন (পবিত্রকারী)  পারিজাত পার্থ পার্থসারথি  পার্বণ  পিনাক (শিবধনু, ত্রিশূল) পিনাকী (শিব) পীতাম্বর  পীযূষ (অমৃত) পুণ্ডরীক (শ্বেতপদ্ম)  পুণ্ডরীকাক্ষ পুণ্যশ্লোক পুরন্দর (ইন্দ্র) পুরুষোত্তম  পুলক পুষ্কর (পদ্ম, জল, আকাশ, তীর্থবিশেষ) পুষ্পক (রথবিশেষ) পূজন পূর্ণ পূর্ণচন্দ্র পূর্ণব্রহ্ম  পূর্ণানন্দ পূর্ণাবতার পূর্ণেন্দু (পূর্ণিমার চাঁদ) পৃথু (মহৎ) পুথ্বীরাজ প্রকর্ষ (উৎকর্ষ)  প্রকাশ প্রচেতা (প্রশান্তচিত্ত) প্রণব প্রণয় প্রতাপ প্রতীক প্রত্যয় (বিশ্বাস) প্রত্যুষ  প্রদীপ প্রদোষ (রাত্রির প্রথম ভাগ) প্রদ্যুম্ন  প্রদ্যোত (দীপ্তি)  প্রফুল্ল প্রবীর প্রবেশ প্রভাকর (সূর্য)  প্রভাত প্রভাস প্রমথেশ (শিব) প্রমিত প্রমোদ প্রয়াগ প্রয়াস প্রলয় প্রশান্ত প্রসন্ন প্রসাদ প্রসূন (ফুল) প্রহ্লাদ  প্রাঞ্জল  প্রাণকৃষ্ণ প্রাণনাথ প্রাণপ্রিয় প্রাণেশ প্রাণেশ্বর প্রান্ত প্রিয়দর্শন প্রিয়দর্শী প্রিয়ব্রত প্রিয়সখা প্রেম প্রেমময় প্রেমাঞ্জন প্রেমানন্দ  প্লাবন ▫ ফ ফটিক ফাল্গুন (অর্জুন) ▫️ 🌱ব ▫️ বংশী বংশীবদন বকুল বচন বরুণ বলদেব বলভদ্র বলরাম বলাই বসুদেব বাঁধন বাল্মীকি  বাসুদেব বিকাশ বিক্রম বিচিত্র  বিজন (নিভৃত) বিজয় বিদুর  বিদ্যাধর বিদ্যাপতি  বিদ্যাভূষণ (পণ্ডিত)  বিদ্যুৎ বিধান বিধু (চাঁদ) বিনম্র বিনয় বিনোদ বিপুল বিপ্র বিপ্লব বিভাস (উজ্জ্বল প্রকাশ) বিভু (পরমেশ্বর)  বিমল বিরাজ বিরাট বিরোচন (সূর্য, চন্দ্র, অগ্নি)  বিলাস বিশাই (বিশ্বকর্মা)  বিশাখ (কার্তিক) বিশাল বিশুদ্ধ বিশ্ব বিশ্বজিৎ বিশ্বনাথ বিশ্বপতি বিশ্বপ্রাণ বিশ্বম্ বিশ্বম্ভর  বিশ্বরূপ  বিশ্বাবসু বিষ্ণু বিষ্ণুজন বিষ্ণুদূত বীরচন্দ্র বীরভদ্র (নিত্যানন্দ প্রভুর পুত্র) বৃন্দাবন বৃষভানু বেণু বেণুধারী বেণুমাধব বৈজয়ন্ত (ইন্দ্রপুরী)  বৈকুণ্ঠ বৈয়াসকি (ব্যাসপুত্র শুকদেব) ব্যাস ব্যাসদেব ব্রজ ব্রজকিশোর ব্রজনাথ ব্রজবল্লভ  ব্রজমোহন  ব্রজরাজ ব্রজলীলা ব্রজেশ্বর  ব্রহ্মানন্দ ▫️ 🌱ভ ▫️ ভক্তকৃপা ভক্তপ্রাণ ভক্তপ্রিয় ভজন ভবানন্দ ভবেশ (শিব) ভরত ভরদ্বাজ  ভাগবত ভানু  ভাস্কর (সূর্য) ভীষ্ম ভুবন ভুবনেশ্বর  ভূষণ ভৃগুমুনি ভৃঙ্গ (ভ্রমর) ▫️ 🌱ম ▫️ মথুরা মথুরাপতি  মথুরেশ মধুদ্বিষ মধুমঙ্গল মধুসূদন মনমোহন  মনু মনোরম মনোহর মলয় (পর্বতমালাবিশেষ, স্বর্গীয় উদ্যান, স্নিগ্ধ দখিনা বাতাস) মহৎ মহাদেব মহানিতাই মহামন্ত্র মহাসংকীর্তন মহীন্দ্র (রাজা) মহেন্দ্র (ইন্দ্র,  পর্বতবিশেষ) মহেশ মাখন মাধব মাধবেন্দ্র মানস মানিক মিলন মিহির (সূর্য) মুকুন্দ মুকুল মুগ্ধ মুরলী মুরলীধর  মুরারি মৃণাল (পদ্মের নাল) মৃণ্ময়  মৃত্যুঞ্জয়  মৈত্রেয়  মৃদুল (কোমল) মোহন মোহনবাঁশী ▫️ 🌱য ▫️ যজ্ঞেশ্বর  যতীন্দ্র  যদুনন্দন যদুনাথ যদুপতি  যদুবর যাদব যুধিষ্ঠির  যুবরাজ যোগানন্দ যোগেশ যোগেশ্বর ▫️ 🌱র ▫️ রঘু (শ্রীরামচন্দ্রের প্রপিতামহ)  রঘুনন্দন  রঘুনাথ রঘুপতি রঘুমণি (শ্রীরামচন্দ্র) 

বৈদিক শাস্ত্রে কোথায় ঈশ্বরের সাকারত্ব এবং মূর্তিপূজার উল্লেখ আছে?

মূর্তিপূজা Svadharmam

[বি:দ্রঃ- কতিপয় দল ঈশ্বরের সাকারত্ব ও মূর্তি পুজা অস্বীকার করার জন্যে বিভিন্ন ভাবগম্ভী দেখাবে। যেমন এই ভাষ্য বিকৃত আমাদের ভাষ্যই স্বীকৃত। তাদের জানিয়ে রাখি এই আর্টিকেলটিতে সম্পূর্ণ ৬০+ উপরে শাস্ত্রীয় প্রমাণ সহ দেওয়া হয়েছে সেও একটি শাস্ত্র থেকে নয়, একাধিক শাস্ত্র থেকে (ঋগ্বেদ, যজুর্বেদ, অথর্ববেদ, উপনিষদ, ব্রাহ্মণ, পঞ্চরাত্র, স্মৃতিশাস্ত্র, ইতিহাস, নীতিশাস্ত্র, অন্যান্য অনুগামী শাস্ত্র)।]  বেদে ঈশ্বরকে সাকার বলা হয়েছে। আর আমরা তো জানি, দেবতারা সাকার। সুতারাং বেদ শাস্ত্রে যে ঈশ্বর এবং দেবতাদের শ্রীমূর্তি বা শ্রীবিগ্রহকে আরাধনা বা পূজা করার বিধান প্রদত্ত আছে, এটিই স্বাভাবিক। যদিও বেদ এবং অন্যন্যা সনাতনী শাস্ত্র অনুসারে পরমেশ্বর ভগবানের সুন্দর অপ্রাকৃত দেহ বিদ্যমান, কিন্তু আমরা সে অপ্রাকৃত দেহ প্রাকৃত চক্ষু দিয়ে দেখতে পাব না।তার জন্য চিন্ময় বা অপ্রাকৃত চক্ষু প্রয়োজন।তাই বেদে পরমেশ্বর ভগবান এবং দেবতাদের শ্রীমূর্তি/ শ্রীবিগ্রহ নির্মান করে, উপযুক্ত মন্ত্রের মাধ্যমে অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে, সে মুর্তিতে ভগবান ও দেবতা অধিষ্ঠান হয়েছেন,এরুপ চিন্তা করে তাদের পূজা ও বন্দনা করার নির্দেশ প্রদত্ত হয়েছে। ১। ঋগ্বেদ থেকে প্রমাণ~ इ॒दं विष्णु॒र्वि च॑क्रमे त्रे॒धा नि द॑धे प॒दम्। समू॑ळ्हमस्य पांसु॒रे ॥ ইদং বিষ্ণুর্বি চক্রমে ত্রেধা নিদধে পদং। সমূলহমস্য পাংসুওে॥ – [ঋগ্বেদ ১/ ২২/ ১৭] অর্থাৎ, “বিষ্ণু এ জগৎ পরিক্রমা করেছিলেন, তিন প্রকার পদবিক্ষেপ করেছিলেন, তাঁর ধুলিযুক্ত পদে জগৎ আবৃত হয়েছিল।” त्रीणि॑ प॒दा वि च॑क्रमे॒ विष्णु॑र्गो॒पा अदा॑भ्यः। अतो॒ धर्मा॑णि धा॒रय॑न् ॥ ত্রীণি পদা বি চক্রমে বিষ্ণু র্গোপা অদাভ্যাঃ। অতো ধর্মাণি ধারয়ন্॥ – [ঋগ্বেদ ১/ ২২/১৮] অর্থাৎ, “বিষ্ণু রক্ষক, তাঁকে কেহ আঘাত করতে পারে না, তিনি ধর্ম সমুদয় ধারণ করে তিন পদ পরিক্রমা করেছিলেন।” तद्विष्णो॑: पर॒मं प॒दं सदा॑ पश्यन्ति सू॒रय॑:। दि॒वी॑व॒ चक्षु॒रात॑तम् ॥ তদ্বিষ্ণো পরমং পদং সদা পশ্যন্তি সূরয়ঃ। দিবীব চক্ষুরাততম্॥ – [ঋগ্বেদ ১/২২/২০] অর্থাৎ, “আকাশে সর্বতো বিচারী যে চক্ষু যেরূপ দৃষ্টি করে, বিদ্বানেরা বিষ্ণুর পরমপদ সেরূপ দৃষ্টি করেন।” तद्विप्रा॑सो विप॒न्यवो॑ जागृ॒वांस॒: समि॑न्धते। विष्णो॒र्यत्प॑र॒मं प॒दम् ॥ তদ্বিপ্রাসো বিপন্যবো জাগৃবাংসঃ সমিন্ধতে। বিষ্ণো র্যৎ পরমং পদম॥ – [ঋগ্বেদ ১/২২/২১] অর্থাৎ, “স্তুতিবাদক ও সদাজাগরূক মেধাবী লোকেরা যে বিষ্ণুর পরমপদ প্রদীপ্ত করেন।” दि॒वश्चि॑दस्य वरि॒मा वि प॑प्रथ॒ इन्द्रं॒ न म॒ह्ना पृ॑थि॒वी च॒न प्रति॑ । भी॒मस्तुवि॑ष्माञ्चर्ष॒णिभ्य॑ आत॒पः शिशी॑ते॒ वज्रं॒ तेज॑से॒ न वंस॑गः ॥ divaś cid asya varimā vi papratha indraṃ na mahnā pṛthivī cana prati | bhīmas tuviṣmāñ carṣaṇibhya ātapaḥ śiśīte vajraṃ tejase na vaṃsagaḥ || – [ঋগবেদ:- ১/৫৫/১] অর্থাৎ, হে অধ্বর্যুগণ! তোমরা স্তুতিপ্রিয় মহাবীর ইন্দ্রের নিমিত্ত এবং বিষ্ণুর জন্য পানীয় সোমরস যত্নপূর্বক প্রস্তুত কর। তাঁর উভয়ে দুর্ধর্ষ ও মহীয়ান। তাঁরা মেঘের উপর ভ্রমণ করেন, যেন সুশিক্ষিত অশ্বের উপর আরোহণ করে ভ্রমণ করছেন। च॒तुर्भि॑: सा॒कं न॑व॒तिं च॒ नाम॑भिश्च॒क्रं न वृ॒त्तं व्यतीँ॑रवीविपत् । बृ॒हच्छ॑रीरो वि॒मिमा॑न॒ ऋक्व॑भि॒र्युवाकु॑मार॒: प्रत्ये॑त्याह॒वम् ॥ caturbhiḥ sākaṃ navatiṃ ca nāmabhiś cakraṃ na vṛttaṃ vyatīm̐r avīvipat | bṛhaccharīro vimimāna ṛkvabhir yuvākumāraḥ praty ety āhavam || – [ঋগ্বেদ:- ১/১৫৫/৬] অর্থাৎ, ঈশ্বরের বৃহৎ শরীর (बृहत्शरीरः । bṛhat-śarīraḥ |) আছে। यः पूर्व्याय वेधसे नवीयसे सुमज्जानये विष्णवे ददाशति । यो जातमस्य महतो महि ब्रवत्सेदु श्रवोभिर्युज्यं चिदभ्यसत् ॥ যঃ পূর্ব্যায় বেধসে নবীয়সে সুমজ্জানয়ে বিষ্ণবে দদাশতি। যঃ জাতমস্য মহতো মহি ব্রবৎ সেদূ শ্রবোভির্যূজ্যং চিদভ্যসৎ॥ yaḥ pūrvyāya vedhase navīyase sumajjānaye viṣṇave dadāśati | yo jātam asya mahato mahi bravat sed u śravobhir yujyaṃ cid abhy asat || – [ঋগ্বেদ :- ১/১৫৬/২] “যে মনুষ্য প্রাচীন, মেধাবী, নিত্য নতুন ও সূমজ্জানি বিষ্ণুকে হব্য প্রদান করেন; যিনি মহানুভব বিষ্ণুর পূজনীয় জন্ম (কথা) কীর্তন করেন, তিনিই যুজ্য (ভগবানের ধাম) প্রাপ্ত হন। অর্থাৎ, তিনি জন্ম নেন (यः । जातम् । अस्य । yaḥ | jātam | asya |)। प॒रो मात्र॑या त॒न्वा॑ वृधान॒ न ते॑ महि॒त्वमन्व॑श्नुवन्ति । उ॒भे ते॑ विद्म॒ रज॑सी पृथि॒व्या विष्णो॑ देव॒ त्वं प॑र॒मस्य॑ वित्से ॥ পরো মাত্রয়া তন্বা বৃধান ন তে মহিত্বমন্বশ্নুবন্তি। উভে তে বিদ্ম রজসী পৃথিব্যা বিষ্ণো দেব ত্বং পরমস্য বিৎসে॥ – [ঋগ্বেদ ৭/৯৯/১] অর্থাৎ, “হে বিষ্ণু, তুমি মাত্রার অতীত শরীরে বর্ধমান হলে তোমার মহিমা কেউ অনুব্যাপ্ত করতে পারে না, পৃথিবী হতে আরম্ভ করে উভয় লোক আমরা জানি, কিন্তু তুমিই কেবল হে দেব, পরমলোক অবগত আছ।” नू मर्तो॑ दयते सनि॒ष्यन्यो विष्ण॑व उरुगा॒याय॒ दाश॑त् । प्र यः स॒त्राचा॒ मन॑सा॒ यजा॑त ए॒ताव॑न्तं॒ नर्य॑मा॒विवा॑सात् ॥ নূ মর্তো দয়তে সনিষ্যন্যো বিষ্ণব উরুগায়ায় দাশ। প্র যঃ সত্রাচা মনসা যজাত এতাবন্তং নর্যমাবিবাসাৎ।। nū marto dayate saniṣyan yo viṣṇava urugāyāya dāśat | pra yaḥ satrācā manasā yajāta etāvantaṃ naryam āvivāsāt || – [ঋগবেদ:-৭/১০০/১] অর্থাৎ, যিনি বহুলোকের কীর্তনীয় বিষ্ণুকে হব্য দান করেন, যিনি যুগপৎ উচ্চারিত স্তোত্রের দ্বারা পূজা করেন এবং মনুষ্যগণের হিতকর বিষ্ণুর পরিচর্যা করেন সে মর্ত্যধন ইচ্ছা করে শীঘ্র প্রাপ্ত হন। বিশ্লেষণ: যদি বিগ্রহ বা শ্রীমূর্তি পূজা বেদবিহিত না হত,তাহলে এ মন্ত্রে পূজা,পরিচর্যার প্রসঙ্গই আসতো না। अर्च॑त॒ प्रार्च॑त॒ प्रिय॑मेधासो॒ अर्च॑त । अर्च॑न्तु पुत्र॒का उ॒त पुरं॒ न धृ॒ष्ण्व॑र्चत ॥ অচর্ত প্রার্চত প্রিয়মেধসো অচর্ত। অচন্তু পুত্রকা উত পুরং ন ধৃঞ্চবচর্ত।। arcata prārcata priyamedhāso arcata | arcantu putrakā uta puraṃ na dhṛṣṇv arcata || – [ঋগবেদ:- ৮/৬৯/৮] অর্থাৎ, হে প্রিয়মেধগণ! তোমরা ইন্দ্রক অর্চনা কর। বিশেষরূপে অর্চনা কর, পুত্রগণ পুরবিদারীকে যেরূপ অর্চনা করে, সেরূপ ইন্দ্রের অর্চনা করুক। বিশ্লেষণ: বেদে ঈশ্বরকে ইন্দ্র বলা হয়েছে। বিগ্রহ আরাধনা বা শ্রীমুর্তি পূজা বেদবিহিত না হতো তবে উক্ত মন্ত্রে ইন্দ্রকে বিশেষ রূপে অর্চনা বা পূজা করার প্রসঙ্গ আসতো না। কারন নিরাকার ঈশ্বরকে কখনো পূজা করার কথা শাস্ত্রে বলা হয় না। সুতারাং মুর্তি পূজা বেদবিহিত। विश्वतश्चक्षुरुत विश्वतोमुखो विश्वतोबाहुरुत विश्वतस्पात् । सं बाहुभ्यां धमति सं पतत्रैर्द्यावाभूमी जनयन्देव एकः ॥ viśvataścakṣur uta viśvatomukho viśvatobāhur uta viśvataspāt | sam bāhubhyāṃ dhamati sam patatrair dyāvābhūmī janayan deva ekaḥ || – [ঋগ্বেদ:- ১০/৮১/৩] অর্থাৎ, সর্বত্র তার হাত, পা, মূখ, চোখ (वि॒श्वत॑श्चक्षुरु॒त वि॒श्वतो॑मुखो वि॒श्वतो॑बाहुरु॒त वि॒श्वत॑स्पात् ।)। स॒हस्र॑शीर्षा॒ पुरु॑षः सहस्रा॒क्षः स॒हस्र॑पात्। स भूमिं॑ वि॒श्वतो॑ वृ॒त्वात्य॑तिष्ठद्दशाङ्गु॒लम् ॥ সহস্রাশীর্ষা পুরুষাঃ সহস্রাক্ষঃ সহস্রাপাৎ। স ভূমিং বিশ্বতো বৃহাত্যতিষ্ঠদ্দশাঙ্গুলম্ ॥ – [ঋগ্বেদ১০/৯০/১] অর্থাৎ, “পুরুষের সহস্র মস্তক, সহস্র চক্ষু ও সহস্র চরণ।…” कासी॑त्प्र॒मा प्र॑ति॒मा किं नि॒दान॒माज्यं॒ किमा॑सीत्परि॒धिः क आ॑सीत् । छन्द॒: किमा॑सी॒त्प्रउ॑गं॒ किमु॒क्थं यद्दे॒वा दे॒वमय॑जन्त॒ विश्वे॑ ॥ কাসীৎপ্রমা প্রতিমা কিং নিদানমাজ্যং কিমাসীৎপরিধিঃ ক আসীৎ। ছন্দঃ কিমাসীৎ প্রউগং কিমুকথং যদ্দেবা দেবমযজন্ত বিশ্বে।। kāsīt pramā pratimā kiṃ nidānam ājyaṃ kim āsīt paridhiḥ ka āsīt | chandaḥ kim āsīt praügaṃ kim ukthaṃ yad devā devam ayajanta viśve || – [ ঋগ্বেদ ১০/১৩০/৩ ] অর্থাৎ, যে কালে সকল দেবতা দেবপূজা করলেন তখন তাদের অনুষ্ঠিত যজ্ঞের পরিমাণ কি ছিল? দেব মূর্তি বা কি ছিল? সংকল্প কি ছিল? ঘৃত কি ছিল? পরিধি অর্থাৎ যজ্ঞস্থানের চতুর্দিকের বৃত্তি স্বরূপ সীমা বন্ধনই বা কি ছিল? ছন্দ প্রয়োগই বা কি ছিল? বিশ্লেষণ: উক্ত মন্ত্রে মন্ত্র দ্রষ্টা ঋষি বর্তমানের কথা অনুধাবন করে পূর্বের অবস্থা বুঝার জন্য প্রশ্ন করেছেন। এই মন্ত্রে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে, মন্ত্রদ্রষ্টা ঋষির সময় দেব মূর্তি বিদ্যমান ছিল এবং তাহার পূজাও করা হতো।এ বেদ মন্ত্র থেকে বুঝা যায় দেবতাদের শ্রীমূর্তির পূজা বেদবিহিত। ক্ষীরেণ স্নাপিতা দুর্গা