বেদে কি লক্ষ্মী দেবীর কথা বর্ননা করা হয়েছে?

FB_IMG_1753267435134

বেদের বর্ণনায় লক্ষ্মী দেবীঃ

শাস্ত্রজ্ঞানহীন কিছু ব্যক্তি বেদ অধ্যয়ন না করে জনসমাজে প্রচার করছে যে,বেদে নাকি লক্ষ্মী দেবীর কোন কথা লেখা নাই।আবার আর এক ধরনের শাস্ত্রজ্ঞানহীন অন্ধ আছে, যারা প্রচার করছে যে,বেদে বর্ণিত লক্ষ্মী নাকি পরমেশ্বর ভগবান শ্রীবিষ্ণুর নিত্য পত্নি নন,লক্ষ্মী ঈশ্বরের একটি নাম মাত্র।
তাই তারা অষ্টাদশ পুরান, মহাভারত,রামায়ন উক্ত লক্ষ্মী দেবীকে মানবে না।অথচ আমরা বেদের বহু বহু মন্ত্রে লক্ষ্মী দেবীর পরিচয় পায়, সেই সাথে লক্ষ্মী যে বিষ্ণুর নিত্য পত্নি তারও উল্লেখ পায়।।নিম্নে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হল….

ঋগ্বেদের আশ্বলায়ন শাখার শ্রীসুক্তে লক্ষ্মীদেবীর মহিমা বর্ণনা করে লক্ষ্মীদেবীকে বিষ্ণুপত্মি বলা হয়েছে…

ওঁ হিরণ্যবর্ণাং হরিণীং সুবর্ণরজতস্রজাম্ ।
চন্দ্রাং হিরণ্ময়ীং লক্ষ্মীং জাতবেদো ম আবহ ॥
তাং ম আবহ জাতবেদো লক্ষ্মীমনপগামিনীম্ ।
যস্যাং হিরণ্যং বিন্দেয়ং গামশ্বং পুরুষানহম্ ॥
অশ্বপূর্বাং রথমধ্যাং হস্তিনাদপ্রবোধিনীম্ ।
শ্রিয়ং দেবীমুপহ্বয়ে শ্রীর্মাদেবীর্জুষতাম্ ॥
কাং সোস্মিতাং হিরণ্যপ্রাকারামার্দ্রাং
জ্বলন্তীং তৃপ্তাং তর্পয়ন্তীম্ ।
পদ্মে স্থিতাং পদ্মবর্ণাং তামিহোপহ্বয়ে শ্রিয়ম্॥
চন্দ্রাং প্রভাসাং যশসা জ্বলন্তীং
শ্রিয়ং লোকে দেবজুষ্টামুদারাম্ ।
তাং পদ্মিনীমীং শরণমহং
প্রপদ্যেঽলক্ষ্মীর্মে নশ্যতাং ত্বাং বৃণোমি॥

ঋগ্বেদ সংহিতাঃ

আশ্বলায়ন শাখা- মন্ডল ৫.সুক্ত ৮৮.মন্ত্র ১-৫

অনুবাদঃ হে জাতবেদ অগ্নিদেব! সুবর্ণবর্ণা, হরিণীর মত চঞ্চল, স্বর্ণ এবং রোপ্যের বিবিধ মালায় বিভূষিতা, পূর্ণিমার চন্দ্রের মত প্রকাশমানা, হিরণ্ময়ী লক্ষ্মীকে আমার জন্য আহ্বান করুন।

হে জাতবেদ অগ্নিদেব! নিম্নগমনরোধকারী সেই লক্ষ্মীকে আমার জন্য আহ্বান করুন। যিনি আহূতা হলে আমি স্বর্ণ, গো, অশ্ব, পুত্র মিত্রাদি প্রাপ্ত হব।

অশ্ব যাঁর পুরােভাগে, রথাসীনা হস্তীর বৃংহণ নাদ দ্বারা যিনি প্রকৃষ্টরূপে জ্ঞাপিকা; সেই শ্রীদেবীকে আমার নিকট আহ্বান করুন, তিনিই আমাকে কৃপা অনুগ্রহ করবেন।

ব্রহ্মরূপা, স্মিতহাস্যকারিনী, সুবর্ণাদির দ্বারা পরিবেশিষ্টা, আর্দ্রা, প্ৰকাশমানা, প্রসন্নবদনা, ভক্তের মনােবাঞ্ছাপূর্ণকারিণী, পদ্মাসীনা, পদ্মবর্ণা সেই শ্রীদেবীকে আহ্বান করি।

চন্দ্রের ন্যায় প্রভাসম প্রকাশমানা, নিজ যশে প্রজ্জ্বলিত, জগতের শ্রীস্বরূপা, ইন্দ্রাদিদেবসেবিতা, পদ্মিনীর শরণ গ্রহণ করছি। হে শ্রীদেবি! আমার দুর্ভাগ্যসূচক অলক্ষ্মী বিনষ্ট হােক, আমি তোমার শরণ নিলাম।

বিষ্ণুপত্নীং ক্ষমাং দেবীং মাধবীং মাধবপ্রিয়াম্।

লক্ষ্মীং প্রিয়সখীং দেবীং নমাম্যচ্যুতবল্লভাম্।।
মহালক্ষ্মীং চ বিদ্মহে বিষ্ণুপত্নী চ ধীমহি।
তন্নো লক্ষ্মীঃ প্রচোদয়াৎ।।

-(ঋগ্বেদঃসংহিতাঃ আশ্বলায়ন শাখা ৫. ৮৯. ৮-৯)

অনুবাদঃ হে ক্ষমারূপিনী, মহাদেবী, মাধবী,মাধবপ্রিয়া লক্ষ্মী! তুমি অচ্যুত নারায়ণের প্রিয়সখী অচ্যুতবল্লভা, তোমায় নমস্কার করি।আমরা মহালক্ষ্মীকে জানতে বিষ্ণুপত্নীকে ধ্যান করি, সেই মহালক্ষ্মী যেন আমাদের শুভ কার্যে প্রেরণ করেন।

হরে কৃষ্ণ।জয় লক্ষ্মী নারায়ন।

স্বধর্মম্ : Connect to the inner self.

Sadgun Madhav Dash

Writer & Admin

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments