বেদে কি শ্রীকৃষ্ণের কথা বলা হয়েছে? বেদ অনুসারে শ্রীকৃষ্ণ কি পরমেশ্বর ?

20250617_093003~2

আজকাল কিছু শাস্ত্রজ্ঞানহীন ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার করছে যে, শ্রীকৃষ্ণ নাকি কখনো স্বয়ং পরমেশ্বর ভগবান নন,তাঁর কথা নাকি বেদে কোথাও উল্লেখ করা হয় নি।তিনি  নাকি শুধুই একজন মহাত্মা। অথচ বেদ, রামায়ন,মহাভারত, অষ্টাদশ পুরান, পঞ্চরাত্র ইত্যাদি সমগ্র সনাতনী শাস্ত্রে শ্রীকৃষ্ণকে পরমেশ্বর ভগবান বলা হয়েছে,তাকে চতুর্ভূজ ভগবান শ্রীবিষ্ণু বলা হয়েছে। নিমোক্ত আলোচনায় তাদের অপপ্রচারের খন্ডন পরিবেশিত হল।

আমাদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ হল বেদ।বেদের অপর নাম  -শ্রুতি।তাই বেদকে শ্রুতি শাস্ত্রও বলা হয়। বেদ চার প্রকার- ঋগ্,সাম,যজু(শুক্ল,কৃষ্ণ) এবং অথর্ব।
আবার প্রতিটি বেদ চারটি অংশে বিভক্ত -সংহিতা,ব্রাহ্মন, আরন্যক এবং উপনিষদ।বেদের এ চারটি অংশকে একত্রে  বেদ বা শ্রুতি বলা হয়।বেদের সর্বশেষ ভাগ যেহেতু উপনিষদ,তাই উপনিষদকে বেদান্ত বা বেদের অন্তভাগও বলা হয়।

বেদসহ সমগ্র সনাতনী  শাস্ত্র অনুসারে শ্রীকৃষ্ণ হলেন পরমেশ্বর। তিনি হলেন সমগ্র সৃষ্টির মূল কারন।পবিত্র  বেদে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা বলা হয়েছে। ভগবদগীতা শাস্ত্রে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেন- আমি  সমস্ত জীবের হৃদয়ে অবস্থিত পরমাত্মা(“সর্বস্য চাহং হৃদি সন্নিবিষ্টো”- গীতা১৫/১৫),আমার থেকে সমগ্র জগৎ সৃষ্টি হয়েছে (“অহং সর্বস্য প্রভবো মত্তঃ সর্বং প্রবর্ততে।” গীতা ১০/৮),আমি সমগ্র বেদে আলোচনার বিষয় (“বেদৈশ্চ সর্বৈরহমেব বেদ্যো- গীতা ১৫/১৫)।বেদে বিষ্ণু, কৃষ্ণ,গোপাল, দেবকীপুত্র,শিব,রুদ্র,ইন্দ্র  ইত্যাদি বহু নামে সম্বোধন করা হয়েছে। এ বিষয়ে মহাভারত, শান্তিপর্ব, মোক্ষধর্ম ৩২৭ অধ্যায়ে অর্জুন ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেন, ঋষিরা পরমেশ্বরের যেসমস্ত নাম( ইন্দ্র, অগ্নি, রুদ্র, বিষ্ণু আদি..)উল্লেখ করেন সেগুলি প্রকৃতপক্ষে কার নাম?এর উত্তরে পরমাত্মা ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেন

শ্রীকৃষ্ণ উবাচঃ
ঋগ্বেদে সযজুর্বেদে তথৈবথর্বসামসু পুরাণে।
সোপনিষদে তথৈব জ্যোতিষে অর্জুন।। ৮।।
সাংখ্যে চ যোগশাস্ত্রে চ আয়ুর্বেদে তথৈব চ।
বহুনি মম নামানি কীর্তিতানি মহার্ষিভিঃ।। ৯।।
গৌণানি তত্র নামানি কর্মজানি চ কানি চিত।
নিরুক্তম কর্মজ্ঞম চ শৃণুস্ব প্রয়াতো অনঘ।। ১০।।

   –(মহাভারতঃ শান্তিপর্ব,মোক্ষধর্ম ৩২৭/৮-১০)

অনুবাদঃ শ্রীকৃষ্ণ বললেন, হে অর্জুন! ঋগ্বেদ, যজুর্বেদ, অথর্ববেদ, সামবেদ, পুরাণ, উপনিষদ, জ্যোতিষ, সাংখ্য শাস্ত্র, যোগশাস্ত্রে, আয়ুর্বেদে ঋষিরা অসংখ্য যেসব নাম উল্লেখ করেছেন, কিছু নাম আমার স্বরূপ সম্পর্কিত কিছু আমার কার্য্য সম্পর্কিত।হে পাপরহিত অর্জুন ! আমি তোমার কাছে সেই সব নাম ও তাদের মাহাত্ম্য বর্ণনা করছি, তুমি তা মনোযোগ সহকারে শ্রবণ কর।

    নরাণাময়নং খ্যাতমঽমেকঃ সনাতনঃ।
আপো নারা ইতি প্রোক্তা আপো বৈ নরসূনবঃ।
অয়নং মম তৎপূর্বমতো নারায়ণো হ্যহম্।।৩৭।।

    –(মহাভারতঃ শান্তিপর্ব,মোক্ষধর্ম ৩২৭/৩৭)

অনুবাদঃ মুক্তিকালে প্রাণিগণের জীবাত্মার আমিই আশ্রয়স্থান ; এইজন্য এক সনাতন আমিই নারায়ণ। অথবা, নার শব্দের অর্থ জল। যেহেতু জল নরের অর্থাৎ ব্রহ্মের পুত্র। সৃষ্টির পূর্বে সেই নার অর্থাৎ জল আমার আশ্রয় ছিল, এইজন্য আমি নারায়ণ

    ছাদয়ামি জগদ্বিশ্বং ভূত্বা সূর্য্য ইবাংশুভিঃ।
সর্বভূতাধিবাসশ্চ বাসুদেবস্ততো হ্যহম্।। ৩৮।।
গতিশ্চ সর্বভূতানাং প্রজনশ্চাপি ভারত!।
ব্যাপ্তা মে রোদসী পার্থ ! কান্তিশ্চাভ্যধিকা মম।। ৩৯।
অধিভূতানি চান্তেষু তদিচ্ছংশ্চাস্মি ভারত।

ক্রমণাচ্চাপ্যহং পার্থ!বিষ্ণুরিত্যভিসংজ্ঞিতঃ।। ৪০।।

  –(মহাভারতঃ শান্তিপর্ব,মোক্ষধর্ম ৩২৭/৩৮-৪০)

অনুবাদঃ আমি সূর্যের ন্যায় হয়ে কিরণ দ্বারা সমগ্র জগৎ আচ্ছাদন করি, এই জন্য আমি বাসুদেব। অথবা আমি সর্বভূতের বাসস্থান বলে “বাসুদেব”। হে ভরতবংশীয় পৃথানন্দন ! আমি সর্বভূতের গতি বলে ” বিষ্ণু” ; কিংবা আমা হতেই সর্বভূত উৎপন্ন হয় বলে আমি “বিষ্ণু” ; অথবা আমি স্বর্গ ও মর্ত্য ব্যাপিয়া রয়েছি বলে “বিষ্ণু” কিংবা প্রলয়কালে আমি নিজদেহে সমস্ত ভূত প্রবেশ করাতে ইচ্ছা করি বলে আমি “বিষ্ণু” ; অথবা আমি বামন রূপে সমগ্র জগৎ আক্রমণ করেছিলাম বলে আমি বিষ্ণু নামে অভিহিত হয়ে থাকি।

ঋগ্বেদীয় পুরুষসুক্তের বর্ণনা অনুসারে বিষ্ণু সমগ্র জগৎ ব্যাপী ব্যাপৃত।অথাৎ ঋগ্বেদের পুরুষসুক্তে বিষ্ণুর বিরাটরুপ বা বিশ্বরুপের বর্ণনা করা হয়েছে,যেরুপটি গীতার বর্ণনা অনুসারে  শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে দর্শন দান করেন( গীতা ১১/৫-৪৪)।এবং অর্জুনের ইচ্ছা অনুসারে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে চতুর্ভূজ বিষ্ণুরুপ প্রদর্শন করেন(গীতা ১১/৪৬,৫০)।

সংহিতাবেদে স্পষ্টভাবে পরমেশ্বর  ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাল্যকালীন কালীয় দমন  লীলা  উপস্থাপন করে শ্রীকৃষ্ণকে বিষ্ণু বলে সম্বোধন করা হয়েছে –

কালিকো নাম সৰ্পো নবনাগসহস্রবলঃ।

   যমুনহ্রদে হ সো জাতো অসৌ নারায়ণবাহনঃ॥
যদি কালিকদূতস্য যদি কাঃকালিকাদ্ ভয়ম্।
জন্মভূমিং পরিক্রান্তো নির্বিষো যাতি কালিকঃ।।

(ঋগ্বেদ সংহিতাঃ আশ্বলায়ন শাখা, ০৭.৫৬.০৪-০৫)

অনুবাদঃ যমুনার হ্রদে জন্মলাভ করা সহস্রহাতির ন্যায় বলশালী সেই কালিক নামক সর্প( নাগ) নারায়ণের বাহন( নারায়ন, যিনি হলেন কৃষ্ণ, তিনি তার চরনের মাধ্যমে কালিয় সর্পের উপর নৃত্য করেছিল,তাই কালিয় সর্পকে  নারায়নের বাহন বলা হয়েছে)।যদি ঐ কালিক সর্পের দূত কাঃকালিক নামক সর্পের থেকে ভয় পায়( নারায়নের বাহন হল গরুড়,গরুড়কে এখানে কাঃকালিক বলা হয়েছে, গরুড়ের ভয়ে কালিয়  যমুনা নদী সংলগ্ন একটি হ্রদে আশ্রয় নিয়েছিল), তাহলে জন্মভূমি অতিক্রম করে সেই কালিক সর্প বিষহীন হয়ে যায় ( যমুনার হ্রদে বসবাসকারী কালিয় কৃষ্ণের পাদস্পর্শে বিষহীন হয়েছিল)। 

উপরোক্ত ঋগ্বেদোক্ত যমুনা নদীতে বসবাস করত যে কালিয়,যাকে এখানে কালিক  বলা হয়েছে, তিনি গরুড়ের ভয়ে যমুনার  একটি হ্রদে বসবাস করত। সে যমুনার হ্রদের বসবাস করেছিল এ কারনে যে সে কাঃকালিক বা গরুড় থেকে ভয় প্রাপ্ত হয়েছিল,এ বিষয়টি শ্রীমদ্ভাগবত পুরান শাস্ত্রে খুব সুন্দরভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।

     সুপর্ণপক্ষাভিহতঃ কালিয়োহতীব বিহ্বলঃ
হ্রদং বিবেশ কালিন্দ্যাস্তদগম্যং দুরাসদম্।।

           -( শ্রীমদ্ভাগবত পুরান ১০/১৭/৮)

অনুবাদঃ গরুড়ের পক্ষাঘাতে কালিয় অত্যন্ত বিহবল হয়ে যমুনা নদী ( কালিন্দ্যা) সংলগ্ন একটি হ্রদে আশ্রয় গ্রহণ করল।  গড়ুর সেই হ্রদে প্রবেশ করতে পারত না। বস্তুতপক্ষে সেই দিকে অগ্রসর হতেও সে পারত না।

গরুড় কেন যমুনা নদী সংলগ্ন সে হ্রদে প্রবেশ করতে পারত না,এ বিষয়ে শ্রীমদ্ভাগবত  পুরান ১০/১৭/১০ নং শ্লোকের বর্ণনা করা হয়েছে, গরুড় সৌভরি মুনি কতৃর্ক অভিশাপ প্রাপ্ত হয়েছিলেন। বিস্তারিত শ্রীমদ্ভাগবত পুরান ১০/১৭/৯-১১)

বেদের উপনিষদ বিভাগেও স্পষ্টই শ্রীকৃষ্ণের কথা  বর্ণিত আছে। শুক্ল যজুর্বেদীয়  মুক্তিকোপনিষদে ১০৮ টি উপনিষদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এই ১০৮ টি উপনিষদের মধ্যে প্রথম ১১ টি উপনিষদ হল-ঈশ,কেন,কঠ,প্রশ্ন,মুন্ডক,মান্ডুক্য,তৈত্তিরীয়,
ঐতরেয়,ছান্দোগ্য,বৃহদ্যরন্যক ও শ্বেতাশ্বতর।
সামবেদীয় ছান্দোগ্য উপনিষদে সরাসরি দেবকীনন্দন  ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।আঙ্গিরস গোত্রীয় “ঘোর” নামক ঋষি দেবকীনন্দন শ্রীকৃষ্ণের প্রীতি বিধানার্থে একটি যজ্ঞানুষ্ঠান করেছিলেন।

তদ্ধৈতদ্ ঘোর আঙ্গিরসঃ কৃষ্ণায় দেবকীপুত্রায় উক্ত্বা উবাচ। অপিপাস এব স বভূব। সোহন্তবেলায়ামেতত্রয়ং প্রতিপদ্যেত। অক্ষিতমস্যচ্যুতমসি প্রাণসংশিতমসীতি। তত্রৈতে দ্বে ঋচৌ ভবতঃ।।৬।।

        – (ছান্দোগ্য উপনিষদে ৩।১৭।৬)

অনুবাদঃ পুরুষযজ্ঞদ্রষ্টা অঙ্গিরস গোত্রীয় ঘোর নামক ঋষি দেবকীনন্দন শ্রীকৃষ্ণের প্রীতির জন্য এই ব্রহ্মবিদ্যা অনুসন্ধান করে সেই পুরুষ যজ্ঞের অনুষ্ঠান করেছিলেন। সেই ঘোর নামক ঋষি ভগবানের শ্রেষত্ব অনুসন্ধান করে পুরুষ যজ্ঞোপাসনা দ্বারা নিশ্চই নিবৃত্ততর্ষ বা জড়তৃষ্ণামুক্ত হয়েছিলেন। অন্তিমকালে যিনি এই মন্ত্রত্রয়ের স্মরণ নেয় তিনি মুক্ত হন। প্রয়াণকালে এই তিন মন্ত্র জপ করা কর্তব্য, হে পরব্রহ্ম তুমি অক্ষয়, তুমি অচ্যুত, তুমি প্রাণের থেকেও প্রিয়তম। এই বিষয়ে দুটি ঋক রয়েছে।

শ্রীরঙ্গরামানুজাচার্য্য উপরোক্ত ছান্দোগ্য উপনিষদ৩।১৭।৬ মন্ত্রের ভাষ্য প্রদানে একটি সুসঙ্গত ব্যাখ্যা করেছেন, তা হলো

“স ঘোরনামা ভগবচ্ছেষত্বানুসন্ধানপূর্বক পুরুষ যজ্ঞোপাসনানুষ্ঠানেন ব্রহ্মবিদ্যাং প্রাপ্যাপিপাসো মুক্তো বভূবেত্যর্থঃ। ততশ্চ ষোড়শাধিকবর্ষশতজীবন ফলকস্যাপি পুরুষযজ্ঞদর্শনস্য ভগবচ্ছেষত্বানুসন্ধান পূর্বকমনুষ্ঠিতস্য ব্রহ্মবিদ্যোপযোগীত্বমপ্যস্তীতি ভাবঃ। স বভূবেত্যস্য স ভবতীত্যর্থঃ। সোহন্তবেলায়ামিত্যত্র স ইত্যস্য য ইত্যর্থঃ। ততশ্চ যোহন্ত বেলায়ামেতত্রয়ং প্রতিপদ্যেত সোহপিপাসো ভবতীত্যুবাচেত্যুত্তরত্রাণ্বয়ঃ। স ভগবচ্ছেষত্বানুসন্ধান পূর্বকপুরুষবিদ্যাসাধিত চিরায়ুষ্ট্বানুগৃহীত ব্রহ্মবিদ্যানিষ্ঠ পুরুষঃ। মরণকাল এতন্মন্ত্রত্রয়ং জপেদিত্যর্থঃ। তত্র পরব্রহ্মবিষয় এতাবৃঙ্মন্ত্রৌ ভবতঃ।”

এছাড়াও শুক্ল যজুর্বেদীয়  মুক্তিকোপনিষদে ১০৮ টি উপনিষদের তালিকায় নারায়ন উপনিষদ,গোপালতাপনী উপনিষদ,কৃষ্ণোপনিষদ এবং কলির্সন্তরন উপনিষদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। স্পষ্টভাবে সেখানে শ্রীকৃষ্ণকে পরমেশ্বর ভগবান বলা হয়েছে।

          ১/  ব্রহ্মন্যো দেবকীপুত্রঃ” 

          –নারায়ন উপনিষদ ৪( কৃষ্ণ যজুর্বেদ)

অনুবাদঃদেবকীপুত্র শ্রীকৃষ্ণই পরমেশ্বর ভগবান। 

২/ “যো ব্রহ্মাণং বিদধাতি পূর্বং  যো বিদ্যাতস্মৈ গোপয়তিস্ম কৃষ্ণ।”

      -গোপালতাপনী উপনিষদ১/২৪ (অথর্ববেদ)

অনুবাদঃশ্রীকৃষ্ণ ব্রহ্মাকে প্রথমে বেদবিদ্যা প্রদান করেন।এবং তিনিই সেই জ্ঞান আদিকালে ( সৃষ্টির শুরুতে) প্রদান করেছিলেন।

         ৩/ “একো বশী সর্বগঃ কৃষ্ণ ঈড্যঃ”

   – গোপালতাপনী উপনিষদ  ১/২১(অথর্ববেদ)

অনুবাদঃ সেই একমাত্র শ্রীকৃষ্ণই  পরম পুরুষোত্তম ভগবান,তিনিই আরাধ্য।

       ৪/ সচ্চিদানন্দরুপায় কৃষ্ণায়াক্লিষ্টকারিনে।
     নমো বেদান্তবেদ্যায় গুরুবে বুদ্ধিসাক্ষিনে।।

   – গোপালতাপনী উপনিষদ  ১/১ (অথর্ববেদ)

অনুবাদঃ আমি শ্রীকৃষ্ণের প্রতি আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম জ্ঞাপন করছি, যার আপ্রাকৃত রূপ সৎ,চিৎ ও আনন্দময় (চিন্ময় বা অবিনাশী সত্তা)।  তাকে জানার অর্থ সমগ্র বেদকে জানা।

৫/ ওঁ কৃষ্ণো বৈ সচ্চিদানন্দঘনঃ কৃষ্ণ আদিপুরুষঃকৃষ্ণ পুরুষোত্তমঃকৃষ্ণো হা উ কর্ম্মাদিমূলং কৃষ্ণঃস হ সর্ব্বৈকার্য্যঃ। কৃষ্ণঃকাশং-কৃদাদীশ
মুখপ্রভুপূজ্য কৃষ্ণোহনাদিস্তস্মিন্নজান্ডান্তবাহ্যে যন্মঙ্গললং তল্লভতে কৃতীতি।।

           – কৃষ্ণোপনিষদ ( অথর্ববেদ )

৬/ নারদঃ পুনঃ পপ্রচ্ছ তন্নাম কিমিতি।সহোবাচ হিরণ্যগর্ভঃ।হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।ইতি ষোড়শকং নাম্নাং কলিকল্মষনাশনম।নাতঃ পরতরোপায় সর্ববেদেষু দৃশ্যতে ষোড়শকলাবৃতস্য জীবস্যাবরনবিনাশনম।ততঃ প্রকাশতে পরং ব্রহ্ম মেঘাপায়ে রবিরশ্মিমন্ডলীবেতি।।২।।

      –কলির্সন্তরন উপনিষদ ২ ( কৃষ্ণ যজুর্বেদ)

অনুবাদঃ তখন নারদজী পুনঃ প্রশ্ন করলেন সেই নাম কি?তখন হিরন্যগর্ভ ব্রহ্মা বললেন,’হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে। হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।’এই প্রকার ষোড়শ নাম কলিযুগে সমস্ত পাপ নাশ করে।সমস্ত বেদ শাস্ত্রে এর থেকে শ্রেষ্ঠ কোনো উপায় নেই।এই মন্ত্র উচ্চারণে জীবের ষোড়শকলা যুক্ত আবরন বিনষ্ঠ হয়।বৃষ্টির পর যেমন মেঘ কেটে গিয়ে সূর্যরশ্মি প্রকাশিত হয় তেমনই জীব  পরমব্রহ্মকে জানতে পারে।

                        হরে কৃষ্ণ। প্রনাম।

Sadgun Madhav Dash

Writer & Admin

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments