একাদশী কি ও কেন?

Svadharmam Q&A

↔️ একাদশী Vs রোজা ↔️
সবার প্রতি কৃষ্ণপ্রীতি ও ভালোবাসা।

আমরা বিশেষ করে বাংলাদেশী হিন্দুরা একাদশী ব্রত পালনকালে যখন সংখ্যাগুরু মুসলমান সিনিয়র-জুনিয়র, বন্ধুবান্ধবদের কাছে থেকে একাদশী নিয়ে এক ধরনের ব্যাঙ্গাত্মক বাক্য ব্যবহার করতে শুনি।
তাদের এই বিভ্রান্তিকর মন্তব্যের দ্বারা অনেক হিন্দুরা লজ্জায় পড়ে যান। আজকের এই লিখাটি ঐ সমস্ত বিভ্রান্তি দূর করতে একটু হলেও সাহায্য করবে।

👤জনৈকঃ “তোমরা তো খেয়ে দেয়ে একাদশী উপবাস থাকো। আমাদের রোজা দেখছো একদম কিছু না খেয়ে সারাদিন পার করতে হয়। খেয়ে দেয়ে উপবাস এটা হইলো কিছু”

🧘‍♂️পি. চৈতন্যচন্দ্র দাসঃ আপনার এবং আপনাদের সংস্কৃতিকে সম্মান জানিয়ে বলছি শুনুন, একাদশী ব্রত ও রোজাকে কোনো মতেই কম্পেয়ার করা যায় না। যারা মিলাতে চায় তারা আসলেই বোকা। তাই প্রথমত বলতে চাই আমরা হিন্দুরা বেদের নির্দেশিত ধর্ম পালন করি যা পরম সত্য। আধুনিক বিজ্ঞান ক্রমেই সেই সত্যের কাছে পৌঁছাচ্ছে মাত্র। একাদশী কেবল এক ব্রতের নাম নয়। এটি এক মহাজাগতিক বিষয়। এটি কেবল একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী কিংবা সম্প্রদায় বিশেষের বর্ষ ক্যালেন্ডারের মতো নয় যে, বছরের কোনো এক মাসেই কেবল পালিত হবে।

👉 একাদশী মূলত কি?
একাদশী একটি তিথি, যা প্রত্যেক মাসে দুইবার করে আবর্তিত হয়। আমরা প্রত্যেকেই জানি,
০১ দিন = ০৮ প্রহর
০১ সপ্তাহ = ০৭ দিন
০১ মাস = ০২ পক্ষ
০১ পক্ষ = ১৫ দিন/তিথি
উক্ত দুটি পক্ষের নাম হল- শুক্লপক্ষ ও কৃষ্ণপক্ষ। ০১টি পক্ষে যে ১৫টি তিথি থাকে তার ভিন্ন ভিন্ন নাম রয়েছে। যেমন-

০১. প্রতিপদ,

০২. দ্বিতীয়া,

০৩. তৃতীয়া,

০৪. চতুর্থী

০৫. পঞ্চমী

০৬. ষষ্ঠী

০৭. সপ্তমী

০৮. অষ্টমী

০৯. নবমী

১০. দশমী

১১. একাদশী

১২. দ্বাদশী

১৩. ত্রয়োদশী

১৪. চতুর্দশী

১৫.পূর্ণিমা/অমাবস্যা (শুক্লপক্ষ/কৃষ্ণপক্ষ)

এখন দেখেন তো এই পৃথিবীতে পুর্নিমা ঘটে কি না? অমাবস্যা হয় কি না? পূর্ণিমা/অমাবস্যার সাথে সমুদ্রের জোয়ার-ভাটা সম্পর্কিত কি না?

👤জনৈকঃ হ্যাঁ।

🧘‍♂পি. চৈতন্যচন্দ্র দাসঃ হুম, এর সবই বাস্তব এবং বিজ্ঞানসম্মত।
এমন তো নয় যে পূর্ণিমার চাঁদ কেবল হিন্দুদের আলোকিত করে 😀, আর অমাবস্যার অন্ধকার কেবল মুসলমান, খ্রিস্টান, ইহুদি ইত্যাদিদের অন্ধকারাচ্ছন্ন রাখে 😐! তাহলে একাদশী তিথিও তো সবার জন্যই প্রযোজ্য ঠিক যেমনটা পূর্ণিমা থেকে অমাবস্যা সবার জন্য সমানভাবে আবর্তিত হয়। অতএব, একাদশী তিথি সবার জন্য প্রযোজ্য এটা চাক্ষুষ প্রমাণিত বিজ্ঞান। এটি তেমন কোনো রকেট সাইন্স নয় যে বুঝতে অসুবিধা হবে।

👤জনৈকঃ 🤐

🧘‍♂️পি. চৈতন্যচন্দ্র দাসঃ এবার আসুন, অন্যান্য এতোগুলো তিথি থাকলেও প্রত্যেক মাসে আসা নিয়মিত দুটি একাদশী তিথি’তেই কেন আমাদের ব্রত পালন করা আবশ্যক এই বিষয়ে কিছু জানা যাক।

👉 বৈদিক শাস্ত্রে একাদশী ব্রত উৎপত্তি বিষয়ে পদ্মপুরাণ, ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ, বরাহপুরাণ, স্কন্দপুরাণ ও বৈষ্ণবস্মৃতিরাজ শ্রীহরিভক্তিবিলাস আদি গ্রন্থে বর্ণিত আছে।

⚠️ একাদশীর আবির্ভাবঃ
পদ্মপুরাণে একাদশী প্রসঙ্গে বলা হয়েছে একসময়-
“জৈমিনি ঋষি তাঁর গুরুদেব মহর্ষি ব্যাসদেবকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে গুরুদেব! একাদশী কি? একাদশীতে কেন উপবাস করতে হয়? একাদশী ব্রত করলে কি লাভ? একাদশী ব্রত না করলে কি ক্ষতি? এ সব বিষয়ে আপনি দয়া করে বলুন।

মহর্ষি ব্যাসদেব তখন বলতে লাগলেন-সৃষ্টির প্রারম্ভে পরমেশ্বর ভগবান এই জড় সংসারে স্থাবর জঙ্গম সৃষ্টি করলেন। মর্ত্যলোকবাসী মানুষদের শাসনের জন্য একটি পাপপুরুষ নির্মাণ করলেন। সেই পাপপুরুষের অঙ্গগুলি বিভিন্ন পাপ দিয়েই নির্মিত হল। পাপপুরুষের মাথাটি ব্রহ্মহত্যা পাপ দিয়ে, চক্ষুদুটি মদ্যপান, মুখ স্বর্ণ অপহরণ, দুই কর্ণ-গুরুপত্নী গমন, দুই নাসিকা-স্ত্রীহত্যা, দুই বাহু-গোহত্যা পাপ, গ্রীবা-ধন অপহরণ, গলদেশ-ভ্রুণহত্যা, বক্ষ-পরস্ত্রী-গমন, উদর-আত্মীয়স্বজন বধ, নাভি-শরণাগত বধ, কোমর-আত্মশ্লাঘা, দুই উরু-গুরুনিন্দা, শিশ্ন-কন্যা বিক্রি, মলদ্বার-গুপ্তকথা প্রকাশ পাপ, দুই পা- পিতৃহত্যা, শরীরের রোম-সমস্ত উপপাতক।

এভাবে বিভিন্ন সমস্ত পাপ দ্বারা ভয়ঙ্কর পাপপুরুষ নির্মিত হল। পাপপুরুষের ভয়ঙ্কর রূপ দর্শন করে ভগবান শ্রীবিষ্ণু মর্ত্যের মানব জাতির দুঃখমোচন করবার কথা চিন্তা করতে লাগলেন। একদিন গরুড়ের পিঠে চড়ে ভগবান চললেন যমরাজের মন্দিরে। ভগবানকে যমরাজ উপযুক্ত স্বর্ণ সিংহাসনে বসিয়ে পাদ্য অর্ঘ্য দিয়ে যথাবিধি তাঁর পূজা করলেন। যমরাজের সঙ্গে কথোপকথনকালে ভগবান শুনতে পেলেন দক্ষিণ দিক থেকে অসংখ্য জিবের আর্তক্রন্দন ধ্বনি। প্রশ্ন করলেন-এ আর্তক্রন্দন কেন?

যমরাজ বললেন, হে প্রভু, মর্ত্যের পাপী মানুষেরা নিজ কর্মদোষে নরকযাতনা ভোগ করছে। সেই যাতনার আর্ত চীৎকার শোনা যাচ্ছে। যন্ত্রণাকাতর পাপাচারী জীবদের দর্শন করে করুণাময় ভগবান চিন্তা করলেন-আমিই সমস্ত প্রজা সৃষ্টি করেছি, আমার সামনেই ওরা কর্মদোষে দুষ্ট হয়ে নরক যাতনা ভোগ করছে, এখন আমিই এদের সদগতির ব্যবস্থা করব। ভগবান শ্রীহরি সেই পাপাচারীদের সামনে একাদশী তিথি রূপে এক দেবীমুর্তিতে প্রকাশিত হলেন। সেই পাপীদেরকে একাদশী ব্রত আচরণ করালেন। একাদশী ব্রতের ফলে তারা সর্বপাপ মুক্ত হয়ে তৎক্ষণাৎ বৈকুন্ঠ ধামে গমন করল।

শ্রীব্যাসদেব বললেন, হে জৈমিনি! শ্রীহরির প্রকাশ এই একাদশী সমস্ত সুকর্মের মধ্যে শ্রেষ্ট এবং সমস্ত ব্রতের মধ্যে উত্তম ব্রত। কিছুদিন পরে ভগবানের সৃষ্ট পাপপুরুষ এসে শ্রীহরির কাছে করজোড়ে কাতর প্রার্থনা জানাতে লাগল-হে ভগবান! আমি আপনার প্রজা! আমাকে যারা আশ্রয় করে থাকে, তাদের কর্ম অনুযায়ী তাদের দুঃখ দান করাই আমার কাজ ছিল। কিন্তু সম্প্রতি একাদশীর প্রভাবে আমি কিছুই করতে পারছি না, বরং ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছি। কেননা একাদশী ব্রতের ফলে প্রায় সব পাপাচারীরা বৈকুন্ঠের বাসিন্দা হয়ে যাচ্ছে।

হে ভগবান, এখন আমার কি হবে? আমি কাকে আশ্রয় করে থাকব? সবাই যদি বৈকুন্ঠে চলে যায়, তবে এই মর্ত্য জগতের কি হবে? আপনি বা কার সঙ্গে এই মর্ত্যে ক্রীড়া করবেন? পাপপুরুষ প্রার্থনা করতে লাগল- হে ভগবান, যদি আপনার এই সৃষ্ট বিশ্বে ক্রীড়া করবার ইচ্ছা থাকে তবে, আমার দুঃখ দূর করুন। একাদশী তিথির ভয় থেকে আমাকে রক্ষা করুন। হে কৈটভনাশন, আমি একমাত্র একাদশীর ভয়ে ভীত হয়ে পলায়ন করছি। মানুষ, পশুপাখী, কীট-পতঙ্গ, জল-স্থল, বন-প্রান্তর, পর্বত- সমুদ্র, বৃক্ষ, নদী, স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল সর্বত্রই আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু একাদশীর প্রভাবে কোথাও নির্ভয় স্থান পাচ্ছি না দেখে আজ আপনার শরণাপন্ন হয়েছি।

হে ভগবান, এখন দেখছি, আপনার সৃষ্ট অনন্ত কোটি ব্রহ্মান্ডের মধ্যে একাদশীই প্রাধান্য লাভ করেছে, সেইজন্য আমি কোথাও আশ্রয় পেতে পারছি না। আপনি কৃপা করে আমাকে একটি নির্ভয় স্থান প্রদান করুন। পাপপুরুষের প্রার্থনা শুনে ভগবান শ্রীহরি বলতে লাগলেন- হে পাপপুরুষ! তুমি দুঃখ করো না। যখন একাদশী তিথি এই ত্রিভুবনকে পবিত্র করতে আবির্ভুত হবে, তখন তুমি অন্ন ও রবিশস্য মধ্যে আশ্রয় গ্রহণ করবে। তা হলে আমার মূর্তি একাদশী তোমাকে বধ করতে পারবে না।”

👉 সবমিলিয়ে ছাব্বিশটি একাদশী রয়েছে। সাধারণত বার মাসে চব্বিশটি একাদশী। এইগুলি হচ্ছে-

১. উৎপন্না একাদশী

২. মোক্ষদা একাদশী

৩. সফলা একাদশী

৪. পুত্রদা একাদশী

৫. ষটতিলা একাদশী

৬. জয় একাদশী

৭. বিজয়া একাদশী

৮. আমলকী একাদশী

৯. পাপমোচনী একাদশী

১০. কামদা একাদশী

১১. বরুথিনী একাদশী

১২. মোহিনী একাদশী

১৩. অপরা একাদশী

১৪. নির্জলা একাদশী

১৫. যোগিনী একাদশী

১৬. শয়ন একাদশী

১৭. কামিকা একাদশী

১৯. অন্নদা একাদশী

১৮. পবিত্রা একাদশী

২০. পরিবর্তিনী বা পার্শ্ব একাদশী

২১. ইন্দিরা একাদশী

২২. পাশাঙ্কুশা একাদশী

২৩. রমা একাদশী

২৪. উত্থান একাদশী

কিন্তু যে বৎসর পুরুষোত্তমাস, অধিমাস বা অনেকের মতে মলমাস থাকে, সেই বৎসর

২৫. পদ্মিনী ও

২৬. পরমা

এই নামে আরও দুটি একাদশীর আবির্ভাব হয়।

🧘‍♂️পি. চৈতন্যচন্দ্র দাসঃ আসলে এতসব আপনার মাথার উপর দিয়ে যাবে। তবুও আপনার অল্পবিদ্যাকে নাড়া দেওয়া প্রয়োজন তাই বলছি, শুনুন।

👤জনৈকঃ চুপচাপ 😶

🧘‍♂️পি. চৈতন্যচন্দ্র দাসঃ বর্নিত প্রতিটি একাদশী তিথি’র আলাদা আলাদা মাহাত্ম্য রয়েছে সে বর্ণনায় আর নাই গেলাম।
⚠️আপনার মন্তব্য ছিল কেন খেয়েদেয়ে উপবাস পালন করি?
প্রথমত বলতে চাই যেহেতু বাংলা ভাষা উৎপত্তির আদি উৎস হল সংস্কৃত ভাষা তাই অনেক শব্দ বাংলাতে সংস্কৃতের মতো উচ্চারণ রয়ে গেছে এবং আমাদের সনাতন বৈদিক ধর্মের শাস্ত্রাদি সংস্কৃত ভাষায় রচিত। তাই “উপবাস” শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে “নিকটে বাস” উপ শব্দের অর্থ নিকট, বাস অর্থ থাকা বা বাস করা। যেমনটা কোনো সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তার পদপদবী “উপ-পরিচালক” তার মানে সেই পদবীটি “পরিচালক” পদের নিকটবর্তী পদবী। তাই পরিচালক শব্দের পূর্বে “উপ” উপসর্গের ব্যবহার করা হয়েছে।  অতএব উপবাস কোনোমতেই নিতান্তই উপোস থাকা বা খালিপেটে থাকা নয়।

👤জনৈকঃ উপবাস মানে যদি হয় নিকটে থাকা তাহলে সেটা কার নিকট? এবং সেই একাদশীতে তাহলে খাওয়া দাওয়ার কোনো সংশ্লেষ নেই?

🧘‍♂️পি. চৈতন্যচন্দ্র দাসঃ নিকটে থাকা মানে হচ্ছে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীহরির নিকটে থাকা যিঁনি আপনার আমার এই সমস্ত কিছুর আদি উৎস। তাই একাদশী’র বিশেষ তিথিতে শ্রীহরির গুণ মহিমা কীর্তন শ্রীহরির চিন্তায় থাকাটাই মূলত উপবাস। যদিও একাদশীতেই ভগবানের চিন্তাতে থাকবো অন্য সময় থাকবো না এমনটা নয় সর্বদা ভগবদ্ভাবনায় থাকা উচিত।
অন্যদিকে একাদশীতে খাওয়া দাওয়ার সংশ্লেষ অবশ্যই রয়েছে, যেহেতু ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি,  একাদশী তিথিতে অন্নাদি রবিশস্যে পাপপুরুষ অবস্থান করেন তাই কেবল সেই দ্রব্যসমূহ গ্রহণ হতে বিরত থাকা অবশ্যই উচিত। বাকি যা গ্রহণযোগ্য তাতে নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে খাওয়ার ব্যাপারে ভগবদ্ভক্ত ভেদে তিনভাবে ব্রত পালন করে থাকেন।

১. নির্জলা (কোনোকিছুই গ্রহণ করেন না)

২. সজলা (কেবল জলপান করেন)

৩. সফলা (অন্ন আদি রবিশস্য ব্যাতিত ফলমূলাদি গ্রহণ করেন)

আশাকরি বুঝতে পেরেছেন একাদশী মানে রোজা রাখার মতো খালিপেটে থাকা নয়। অপরদিকে ১৫ দিন পর পর পাকস্থলীকে বিশ্রাম দেওয়াটা বিজ্ঞানসম্মত এবং সেটি ১৫ দিন পর পর একাদশী তিথিতেই পালন করা স্বাস্থ্যসম্মত। পুর্নিমা/অমাবস্যা তিথি যেমনটা মহাজাগতিক শক্তি সম্পন্ন যার ফলে সমুদ্রে জোয়ারভাটা সংঘটিত হয়। ঠিক তেমনিভাবে একাদশী তিথিতে মহাজাগতিক আধ্যাত্মিক শক্তি বিচ্ছুরিত হয় এবং সেই তিথিতে যোগীগণ আধ্যাত্মিক কল্যাণ সাধনে ব্রত পালন করে থাকেন।

⚠️প্রামাণিকতাঃ যদি আমরা উপবাস/উপোস এর সুফল-কুফল নিয়ে আলোচনা করি তাহলে দেখবেন একদম খালিপেটে থাকতে গেলে অনেকের গ্যাস্ট্রিক সহ নানান সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও দীর্ঘ এক মাস স্বাভাবিক খাদ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া ভঙ্গ করার ফলে শরীরে নানান রোগব্যাধি বাসা বাঁধে যা আয়ুকে ক্ষয় করে।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতে- দীর্ঘ মেয়াদে জলপান ছাড়াই উপবাসে শরীরের কোষ একেবারে জলশূন্য হয়ে পড়ে, এটা ক্ষতিকর। ‘‘দীর্ঘ উপবাসের পরে যখন খাবার খাই, তখন শরীর ভীষণ ভাবে রিঅ্যাক্ট করে। একে রিফিডিং সিনড্রোম বলে।” ফলে তখন রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়, বুক ধড়ফড় ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, ভুল বকা থেকে শুরু করে হার্ট ফেলিয়োর হতে পারে, কোমা এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে।’’

“বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর একটা স্লোগান আছে, ‘নো ফাস্ট, নো ফিস্ট’। মানে না খেয়ে থাকাও নয়, আবার অতিরিক্ত খাওয়াও নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের সল্ট লেক সিটিতে অবস্থিত হেলথকেয়ার হার্ট সেন্টারের প্রধান গবেষক বেনজামিন হর্ন বলেন, “নিয়মিত কয়েকদিন পর পর না খেয়ে থাকা সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এভাবে উপবাস করলে একজন মানুষের ‘হিমোগ্লোবিন’, লোহিত রক্তকণিকা ও শারীরিক বৃদ্ধির জন্য দায়ি হরমোনের মাত্রাকে প্রভাবিত করে এবং সোডিয়াম ও ‘বাইকার্বোনেট’য়ের মাত্রা কমায়। এছাড়াও ‘কিটোসিস’ এবং ‘অটোফ্যাজি’ প্রক্রিয়াকে সক্রিয় করে। এবিষয়গুলো হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে, বিশেষত হৃদযন্ত্র অকেজো হওয়া ও ‘করোনারি হার্ট ডিজিস’য়ের আশঙ্কা কমায়।

তাই এরকম বহু গবেষণার কথা বলা যাবে যা একাদশীকে পরোক্ষ/প্রত্যক্ষভাবে প্রমোট করছে। অপরদিকে সরাসরি আপনার বিশ্বাসকে আঘাত করতে পারে, তাই সে বিষয়ে না’ইবা গেলাম। আপনি আপনার সংস্কৃতি পালন করুন, নূন্যতমও না জেনে অন্যের আচার-সংস্কৃতি নিয়ে কটুক্তি থেকে বিরত থাকুন। ধন্যবাদ।

👤জনৈকঃ ধন্যবাদ।

Avatar of Prakash

Prakash

Writer & Admin

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments