বৈদিক শাস্ত্রে বর্ণিত রয়েছে-
“দুটি পাখি (জীবাত্মা ও পরমাত্মা) একই গাছে বসে আছে, কিন্তু যে পাখিটি (জীবাত্মা) ফল আহারে রত সে গাছের ফলের ভোক্তারূপে সর্বদাই শোক, আশঙ্কা ও উদ্বেগের দ্বারা মুহ্যমান। কিন্তু যদি সে একবার তার নিত্যকালের বন্ধু অপর পাখিটির (পরমাত্মার) দিকে ফিরে তাকায়, তবে তৎক্ষণাৎ তার সমস্ত শোকের অবসান হয়, কারণ তার বন্ধু হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবান এবং তিনি সমগ্র ঐশ্বর্যের দ্বারা মহিমান্বিত।”
[শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ ৪।৭ ;
মুণ্ডক উপনিষদ ৩।১।১,২]
অতএব, বোঝাই যাচ্ছে যিঁনি পরম ব্রহ্ম-পরমাত্মা-পরমেশ্বর ভগবান, তিঁনি আপনার আমার সমস্ত জীবাত্মার ব্যক্তিগত স্বাতন্ত্র্যবোধে কখনোই হস্তক্ষেপ করেন না। ভগবদ্গীতায়ও (১৮/৬৩, ৭৩) আমরা দেখতে পাই- পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে গীতার জ্ঞান প্রদানের পর বলছেন,
“….যথেচ্ছসি তথা কুরু” “এভাবেই আমি তোমাকে গুহ্য থেকে গুহ্যতর জ্ঞান বর্ণনা করলাম। তুমি তা সম্পূর্ণরূপে বিচার করে যা ইচ্ছা হয় তাই কর।”
অর্জুন বুদ্ধিমান তাই তিনি বললেন- “…করিষ্যে বচনম্ তব”
“আমার সমস্ত সন্দেহ দূর হয়েছে এবং যথাজ্ঞানে অবস্থিত হয়েছি। এখন আমি তোমার আদেশ পালন করব।”
এখানে স্পষ্টতই বোঝা যায় পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জীবকে স্বাধীনতা দিয়েছেন। তাই এই স্বাধীনতার সদ্ব্যবহার করে আমাদের জড় জগতের কর্মবন্ধন থেকে মুক্ত হওয়া উচিত। নইলে আপনার আমার দুস্কর্মের ফল আমাদেরই ভোগ করতে হবে। ভগবানকে দোষারোপ করা নাস্তিকদের কাজ!
।।হরে কৃষ্ণ।।
সম্পাদনায়: প্রবীর চৈতন্য চন্দ্র দাস।