————————————————————
রাধাষ্টমীর উপবাস পূর্ণদিবস নাকি অর্ধদিবস? (শাস্ত্র প্রমাণ)
———————————————————–
রাধাষ্টমীতে উপবাস ব্রত পূর্ণদিবস নাকি অর্ধদিবস এ নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। কেউ দাবি করেন, উপবাস মাত্রেই পূর্ণদিবস উপবাস থাকতে হবে, আবার কেউ প্রবাদ বাক্য বলেন ‘রাধার উপবাস আধা'(অর্ধদিবস)। মজার ব্যাপার হলো, বৈষ্ণব স্মৃতিপ্রমাণ ‘হরিভক্তিবিলাস’ এ রাধাষ্টমীর উপবাস বিধি উল্লেখ নেই। তাই আরেক দল যুক্তি দেখান, শ্রীমতি রাধা হলেন জগতের সকল জীবের জননী; মা কখনো নিজ সন্তানকে উপবাস রাখতে পারেন না, তাই রাধাষ্টমীতে উপবাসেরই প্রয়োজন নেই!
বোধের বিষয়, ধর্মাচরণ কখনো ব্যক্তির মনগড়া বিধানে চলে না। বিশেষ করে ব্রহ্ম সম্প্রদায়, যাতে ব্যাস-নারদের মতো স্বয়ং ভগবানাবতারগণ গুরুরূপে অধিষ্ঠীত, সেখানে অজ্ঞতার অন্ধকার থাকতে পারে না। তাই আজ আমরা ব্যাস শাস্ত্র হতে পর্যালোচনা করে দেখবো, কোন শাস্ত্রে কিভাবে রাধাষ্টমীর ব্রত পালন করতে বলেছে।
————————————————-
সর্বজনীন উপবাস বিধি (অর্ধদিবস উপবাস)
————————————————-
ভাদ্রমাস, শুক্লপক্ষ, অষ্টমী তিথি, বিশাখা নক্ষত্র, মধ্যাহ্নে, অভিজিৎ যোগে, শুভক্ষণে বৃষভানু মহারাজের যজ্ঞমন্দিরে শ্রীমতি ব্রজেশ্বরী রাধিকার আবির্ভাব হয়। তাঁর আবির্ভাব মধ্যাহ্নকালে। তাই মধ্যাহ্নে অভিষেক উৎসব ও পূজার বিশেষ বিধান আছে। উৎসবান্তে পূজোর প্রসাদ দিয়ে পারণ করার বিধান। এটি হলো সার্বজনীন বিধান। সকলের জন্য সার্বজনীন বিধি পালন করা আবশ্যক।
এ সার্বজনীন বিধিটি শ্রী নারদীয় মহাপুরাণে চার বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের ভক্তিরক্ষক আচার্য্য শ্রী নারদজী মহারাজ উল্লেখ করেছিলেন এবং শ্রী নারায়ণাবতার বেদব্যাস তা নারদীয় পুরাণে সংকলন করেছিলেন। নারদীয় পুরাণে নারদ বলেছেন-
শুক্লাষ্টম্যাং নমস্যস্য কুর্যাৎ রাধাব্রতং নরঃ।
পূর্ববৎ রাধিকাং হৈমীং কলশস্থাং প্রপূজয়েত্।
মধ্যাহ্নে পূজয়িত্বৈনামেকভক্তং সমাচরেৎ।
[ শ্রীনারদীয় মহাপুরাণ, পূর্বভাগ, ৪।৯৪।৪১-৪২ (গীতাপ্রেস গোরক্ষপুর); ৪।১১৭।৪১-৪২ (Banarasidass Publishers)]
অনুবাদ:
ভাদ্রমাসের শুক্লাষ্টমীতে সকল মনুষ্যের ভক্তিপূর্বক শ্রীমতি রাধারাণীর মহিমান্বিত ব্রত করণীয়। পূর্ববৎ স্বর্ণময় শ্রীবিগ্রহে পূজা করতে হবে। মধ্যাহ্নকালে শ্রীমতি রাধিকার পূজার পর একভক্ত করবে অর্থাৎ একবার ভাত(অন্ন) আহার করবে।
আবার,
বিশ্লেষণ:
এ শ্লোকে স্পষ্টত মধ্যাহ্নকালে পূজোৎসব পালন করতে বলেছে। কেন মধ্যাহ্নকালে? কারণ, মধ্যাহ্নকালেই ব্রজভূমিতে বৃষভানু রাজের যজ্ঞ মন্দিরে শ্রীমতি রাধিকা নিজেকে আবির্ভূত করেছিলেন। ভগবান দিনের যে সময়ে আবির্ভূত হন, সে সময়ে উৎসব পালন করা হয়। কৃষ্ণ মধ্যরাত্রিতে, নৃসিংহদেব সন্ধ্যাকালে, রামচন্দ্র মধ্যাহ্নকালে আবির্ভূত হন, তাই সে সে সময়ে বিশেষ অভিষেক, বিশেষ পূজা, ভোগ-নৃত্য-কীর্তনাদির আয়োজনে ভক্তগণ উৎসব পালন করেন। ঠিক একইভাবে মধ্যাহ্নকালে শ্রীমতি রাধিকার আবির্ভাব হওয়ায় মধ্যাহ্নকালে বিশেষ পূজার আয়োজন করতে বলা হয়েছে।
মধ্যাহ্নে পূজোৎসবের শেষে ‘ভক্ত’ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। সংস্কৃত ‘ভক্ত’ শব্দের অর্থ ‘ভাত’। ভক্ত (সংস্কৃত)> ভত্ত (প্রাকৃত) > ভাত (বাংলা)।
এখানে স্পষ্টত, অন্নপ্রসাদ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে, অনুকল্প নয়। প্রসঙ্গত এখানে বিবেচনা আবশ্যক, এটি কোন অসমর্থ বিধান নয়, বরং এটি সর্বজনীন বিধন। অসমর্থ বিধান হলে ভাত গ্রহণের কথা না বলে ফল-জলাদি গ্রহণের বিধান বলা হতো। সর্বজনীন বিধান সহজ, ন্যূনতম বিধি-নিষেধ, তাই তা সহজেই সকলে পালন করতে পারেন। তাই শুরুতেই সার্বজনীন বিধান বলেছেন শ্রীনারদ।
ভগবানের আবির্ভাবকালে উৎসবান্তে পারণার বিধান বহু শাস্ত্রেই পরিলক্ষিত হয়। যথা, হরিভক্তিবিলাসে বলা হয়েছে-
বায়ুপুরাণে চ—
যদীচ্ছে সৰ্ব্বপাপানি হস্তং নিরবশেষতঃ ।
উৎসবান্তে সদা বিপ্র জগন্নাথান্নমাশয়ে ৷৷ ইতি ৷৷ ৪০৭ ॥
অনুবাদ–
বায়ুপুরাণে বলেছে “নিঃশেষে যদি সৰ্ব্ববিধ পাপ ধ্বংস করিতে ইচ্ছা কর, হে বিপ্র! উৎসবান্তে সৰ্ব্বদা জগন্নাথদেবের অন্নপ্রসাদ ভোজন করাইবে ।
কেচিচ্চ ভগবজ্জন্ম মহোৎসব দিনে শুভে ।
ভক্ত্যোৎসবাস্তে কুৰ্ব্বস্তি বৈষ্ণবা ব্রতপারণম্ ॥৪০৫॥
অনুবাদ:
কেহ কেহ পবিত্র পরম উত্তম ভগবানের জন্ম(আবির্ভাব) মহোৎসব দিনে বৈষ্ণবগণ দাস্য ভক্তিসহ উৎসবান্তে ব্রত পারণ করিয়া থাকেন ।
তথা চোক্তং গারুড়ে—
তিথ্যন্তে চোসবাস্তে বা ব্রতী কুব্বীদ্ধ পারণম্ ৷৷৪০৬
অনুবাদ:
ঐরূপ গরুড়পুরাণে উক্ত আছে – ব্ৰতাচরণকারী পরদিন তিথির অন্তে, অথবা ঐ দিন উৎসবান্তে পারণ করিবেন।
পদ্মপুরানে বলা হয়েছে-
গুরোরুৎক্রান্তিদিবসে জন্মর্ক্ষেষু তথা হরেঃ।
ইষ্টিঞ্চ বৈষ্ণবীং কুর্য্যাচ্ছক্ত্যা বৈ দ্বিজসত্তমঃ।।
দদ্যাৎ পুষ্পাঞ্জলিং তত্র প্রত্যৃচং বেদস্মমিতম।
পারণঞ্চাপি কুর্ব্বীত চরুণা পায়সেন বা।।
[ পদ্মপুরাণ, উত্তরখন্ডম, অধ্যায় ২৫৩, শ্লোক ১৬৪-১৬৫]
অনুবাদ:
‘হরে’ অর্থাৎ শ্রীহরি/শ্রীমতির আবির্ভাব নক্ষত্রে ও গুরুবর্গের আবির্ভাব ও তিরোভাব নক্ষত্রে দ্বিজবর যথাশক্তি বৈষ্ণবী ইষ্টি করিবেন। প্রত্যেক বৈদিক মন্ত্র পাঠ করে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান করে চরু বা পায়েস দ্বারা পারণ কার্য্য করবেন।
সিদ্ধান্ত:
শ্রীমতি রাধিকার আবির্ভাব কাল অর্থাৎ মধ্যাহ্ন পর্যন্ত উপবাস সকলের জন্যই আবশ্যক। এটি সর্বজনীন বিধি।
————————————————-
পূর্ণদিবস উপবাসের বিধি
————————————————-
সর্বজনীন বিধি বর্ণন শেষে নারদজী মহারাজ পূর্ণ উপবাস বিধির উল্লেখ করেছেন। যাদের পূর্ণদিবস নির্জলা উপবাসের মতো যথেষ্ট শারীরিক ও মানসিক শক্তি আছে, তারা শ্রীমতি রাধিকার প্রীতার্থে পূর্ণদিবস নির্জলা উপবাস করতে পারেন এবং সাড়ম্বরে বৈষ্ণবী ভোজন করিয়ে গুরুকে প্রতিমা দান করে পারণা করবেন।
শক্তো ভক্তশ্চোপবাসং পরেঽহ্নি বিধিনা ততঃ।
সুবাসিনীর্ভোজয়িত্বা গুরবে প্রতিমার্পণম্ কৃত্বা।
স্বয়ং চ ভুংজীত ব্রতমেবং সমাপয়েৎ।।
[ শ্রীনারদীয় মহাপুরাণ, পূর্বভাগ, ৪।৯৪।৪২-৪৩(গীতাপ্রেস গোরক্ষপুর); ৪।১১৭।৪২-৪৩ (Banarasidass Publishers)]
অনুবাদ:
শক্ত ভক্ত সম্পূর্ণ উপবাসপূর্বক পরদিন বিধিপূর্বক সুবাসিনী অর্থাৎ সুলক্ষণা সতী নারী তথা ব্রতচারিণী বৈষ্ণবীদের ভোজন করাবেন, অতঃপর শ্রীগুরুদেবকে শ্রীবিগ্রহটি দান করে ব্রত সমাপনপূর্বক আহার করা উচিত।
বিশ্লেষণ:
অর্ধদিবস উপবাস পালন সহজ, তাই শুরুতেই সার্বজনীন অর্ধ উপবাসের বিধান বলে এরপর নারদজী পূর্ণদিবস উপবাসের বর্ণনা করছেন। ‘শক্ত ভক্ত’ শব্দে শারীরিক-মানসিকভাবে শক্তিমান ভক্তদের বুঝানো হয়েছে, যাদের পূর্ণোপবাস ব্রত পালনে স্বাস্থ্যক্ষয় হয় না। কারণ, ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণে বলেছে- ‘নষ্টে শরীরে স ভবেদন্যথা চাত্মঘাতকঃ’- উপবাসে শরীর নষ্ট হলে আত্মহত্যার পাপ হয়। উপবাসের পরদিনে প্রাতে বৈষ্ণবী ভোজন করিয়ে আশীর্বাদ নেওয়ার কথা বলেছে। সাধারণত দেবীগণের ব্রতে সুলক্ষ্মণা সতী নারী তথা বৈষ্ণবী ভোজন করিয়ে তাদের আশীর্বাদ চাওয়া হয়। ব্রত সমাপনের পূর্বে গুরুদেবকে বিগ্রহ দান করে এরপর যথাসময়ে পারণা করতে হবে।
লক্ষ্যণীয়:
উপরোক্ত শাস্ত্র প্রমাণের সাপেক্ষে এটি দৃশ্যমান, রাধাষ্টমীতে শাস্ত্রে অর্ধদিবস ও পূর্ণদিবস উভয় প্রকার বিধান আছে। তাই নিজ নিজ গুরুপরম্পরাতে যেভাবে উপবাসের পালিত হয়, সেভাবে উপবাস পালন করা মঙ্গলকর। এ নিয়ে বিবাদ নিষ্প্রয়োজন, কারণ উভয় বিধানই ভগবানাবতার কর্তৃক নির্দেশিত। অনেক হীনমন্য ব্যক্তি আছেন, যারা পূর্ণদিবস উপবাস করে সে অহংকারে অর্ধদিবস ব্রতধারীদের পরিহাস করেন, এটি মারাত্মক বৈষ্ণব অপরাধ। যারা তা করেন, তারা নরকের কীট, তাদের ব্রত পালনই বৃথা। ‘অহংকার পতনের মূল।’
——————————————————————
ইস্কনে কিভাবে রাধাষ্টমী ব্রত পালন করা হয়?
——————————————————————
আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সঙ্গ তথা ইস্কন সকল শাস্ত্রীয় সুসিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ইস্কন পূর্বতন গুরুপরম্পরা অনুসারে অর্ধদিবস ও পূর্ণদিবস উভয় প্রকার ব্রতই অনুসরণ করে। রাধাষ্টমীতে মধ্যাহ্নকালে বিশেষ পূজোৎসব ও ভোগরাগের পর বিশেষ প্রসাদ বিতরণ হয়। তবে যারা পূর্ণদিবস উপবাস করেন, তারা পরের দিন পারণা করেন।
উল্লেখ্য, ইস্কনের পূর্বতন গুরুপরম্পরা তথা শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী প্রভুপাদের প্রতিষ্ঠিত গৌড়ীয় মঠ ও মিশনগুলোতেও একই নিয়মে রাধাষ্টমী ব্রত পালিত হয়।
————————————————-
রাধাষ্টমী ব্রতের ফল
————————————————-
কথিতুং তৎফলং পুণ্যং ন শক্নোত্যপি নারদ ।
কোটিজন্মাৰ্জ্জিতং পাপং ব্রহ্মহত্যাদিকং মহৎ।
কুৰ্ব্বন্তি যে সকৃদ্ভক্ত্যা তেষাং নশ্যতি তৎক্ষনাৎ।।
(পদ্মপুরাণ, ব্রহ্মখণ্ড, ৭/৭)
অনুবাদ:
যে সকল মানুষ ভক্তিভরে একবার মাত্র এই মহাপবিত্র শ্রীরাধাষ্টমী ব্রত পালন করে থাকেন, সেই সকল মানুষের কোটি জন্মের ব্রহ্মহত্যাদি সমস্ত মহাপাপ তৎক্ষনাৎ বিনাশ হয়ে যায়।
একাদশ্যাঃ সহস্রেন যৎফলং লভতে নরঃ।
রাধাজন্মাষ্টমীপুণ্যং তস্মাচ্ছতগুনাধিকম॥
(পদ্মপুরাণ, ব্রহ্মখণ্ড,৭/৮)
অনুবাদ:
মনুষ্যগন এক হাজার একাদশী পালনে যেই ফল লাভ করে থাকেন, শ্রীরাধাজন্মাষ্টমী ব্রতের পুন্য তার থেকেও শতগুন অধিক হয়ে থাকে।
মেরুতুল্যসুবর্ণানি দত্বা যৎ ফলমাপ্যতে ।
সকৃদাধাষ্টমী’ ক্বত্বা তস্মাচ্ছতগুণাধিকম্ ।।
(পদ্মপুরাণ, ব্রহ্মখণ্ড,৭/৯)
অনুবাদ:
মেরুপ্রমাণ সুবর্ণ দান করিয়া মানব যে ফল প্রাপ্ত হয়, একবার মাত্র রাধাষ্টমীব্রত করিয়া তাহা হইতেও শতগুণ অধিক ফল প্রাপ্ত হইয়া থাকে।
কন্যাদানসহস্রেণ যৎপুণ্যং প্রাপ্যতে জনৈঃ ।
বৃষভানুসুতাষ্টম্যা তৎফলং প্রাপ্যতে জনৈঃ ।।১০
(পদ্মপুরাণ, ব্রহ্মখণ্ড,৭/১০)
অনুবাদ:
সহস্র কন্যাদান করিয়া জনগণ যেরূপ পুণ্য লাভ করে, একমাত্র রাধাষ্টমীব্রতে সেই ফল প্রাপ্ত হইয়া থাকে।
গঙ্গাদিষু চ তীর্থেষু স্নাত্বা তু যৎফলং লভেৎ
কৃষ্ণপ্রাণপ্রিয়াষ্টম্যাঃ ফলং প্রাপ্নোতি মানবঃ
(পদ্মপুরাণ, ব্রহ্মখণ্ড,৭/১১)
অনুবাদ:
গঙ্গাদি সর্ব্বতীর্থে স্নান করিয়া যে ফল লাভ করে, কৃষ্ণপ্রণয়িনী রাধার জন্মাষ্টমীব্রতকরণে মানব তাদৃশ ফল প্রাপ্ত হুইয়া থাকে।
এতদ্ব্রতন্ত যঃ পাপী হেলয়াশ্রদ্ধায়াপি বা
করোতি বিষ্ণুসদনং গচ্ছৈৎ কোটিকুলান্নিতঃ
(পদ্মপুরাণ, ব্রহ্মখণ্ড,৭/১২)
অনুবাদ:
যে পাপী মানব এই এত হেলায় বা অশ্রদ্ধায় ও সম্পাদন করে, সেও কোটিকুলান্বিত হইয়া বিষ্ণুসদনে প্রয়াণ করিয়া থাকে।
রাধাব্রতিন উঁচুঃ
ভাদ্রে মাসি সিতাষ্টম্যাং জাতা শ্রীরাধিকা যতঃ
অষ্টমী সাদ্য সম্প্রাপ্তা তাং কুর্ব্বাম প্রযত্নতঃ।
গোঘাতজনিত পাপং স্তেয়জং ব্ৰহ্মঘাতজন
পরস্ত্রীহরণাচ্চৈব তথা চ গুরুতল্পজম্
বিশ্বাসঘাতঞ্জঞ্চৈব স্ত্রীহত্যাজনিতং তথা ।
এতানি নাশয়ত্যাশু কৃতা যা চাষ্টমী নৃণাম্
(পদ্মপুরাণ, ব্রহ্মখণ্ড, ৭/২২-২৪)
অনুবাদ:
রাধাব্রতিগণ কহিলেন, “ভাদ্র মাসে শুক্লাষ্টমীতে শ্রীরাধিকা জন্মগ্রহণ করেন। অদ্য সেই অষ্টমী তিথি উপস্থিত। তাই সাদরে আমরা সেই অষ্টমীব্রতের অনুষ্ঠান করিতেছি। এই অষ্টমীব্রত করিলে নরগণের গোহত্যা, ব্রহ্মহত্যা, স্তেয় (চুরী), পরস্ত্রী হরণ, গুরুতল্পগমন, বিশ্বাসঘাতকতা ও স্ত্রীহত্যা জনিত পাপ বিনষ্ট হইয়া থাকে।”
————————————————-
রাধাষ্টমী ব্রত পালন না করার শাস্তি
————————————————–
রাধাষ্টমীব্রতং তাত যো ন কুৰ্য্যাচ্চমুঢ়ধীঃ।
নরকান্নিস্কৃতির্নাস্তি কোটিকল্পশতৈরপি॥
(পদ্মপুরাণ, ব্রহ্মখণ্ড, ৭/৩১)
অনুবাদ:
হে তাত! যে সকল মুঢ়বুদ্ধি মানুষ রাধাষ্টমী ব্রত পালন করবে না, শতকোটি কল্পেও সেই সকল মানুষের নিস্কৃতি ঘটবে না।
স্ত্রিয়শ্চ যা ন কুৰ্ব্বন্তি ব্রতমেতচ্ছুভপ্রদম।
রাধাবিষ্ণোঃ প্রীতিকরং সর্ব্বপাপপ্রণাশনম॥
অন্তে যমপুরীং গত্বা পতন্তি নরকে চিরম্
কদাচিজ্জন্ম চাসাদ্য পৃথিব্যাং বিধবা ধ্রুবম ।
(পদ্মপুরাণ, ব্রহ্মখণ্ড,৭/৩২-৩৩)
অনুবাদ:
যে সকল নারীরা রাধাকৃষ্ণের প্রীতিকর, সর্বপাপহরনকারী,এই ব্রত পালন করবেনা, তারা নরক গমন করেন এবং পৃথিবীতে জন্মের পরে বিধবা হয়ে জীবন অতিবাহিত করতে হয়।
সংকলনে: ব্রজসখা দাস
[ বি:দ্র: স্বধর্মম্-এর অনুমোদন ব্যাতীত এই গবেষণামূলক লেখার কোনো অংশ পুনরুৎপাদন, ব্যবহার, কপি পেস্ট নিষিদ্ধ। স্বধর্মম্-এর সৌজন্যে শেয়ার করার জন্য উন্মুক্ত। ]
নিবেদক-
° স্বধর্মম্: প্রশ্ন করুন | উত্তর পাবেন °