শ্রীল প্রভুপাদ কেন যিশু খ্রিস্টকে ভাগবত ধর্মের প্রচারক বলেছেন?!!

Screenshot_20240516-091758

শ্রীল প্রভুপাদ কোন মনগড়া কথা বলেন না। পাশ্চাত্যে গিয়ে ১০ হাজার খ্রিস্টানকে সনাতন ধর্মে প্রত্যাবর্তন করানো কোন মনগড়া কথা বলে সম্ভব নয়, অবশ্যই যথেষ্ট এভিডেন্স আছে এ ব্যাপারে।

বাইবেলে যিশুর জীবনের ১২ হতে ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত ঘটনাবলির কোন বর্ণনা নেই। খ্রিস্টানদের অন্যান্য একাধিক গ্রন্থগুলো হতে আমরা জানতে পারি, যিশু এ সময় ভারতভূমিতে এসেছিলেন এবং ভারতের উড়িষ্যার শ্রী জগন্নাথপুরী ধামে তিনি ব্রহ্মচারী শিষ্যরূপে বেদ ও বৈদিক শাস্ত্রসমূহ অধ্যয়ন করেছিলেন। জগন্নাথপুরীর বর্তমান শঙ্কর মঠের মঠাধীশ নিশ্চলানন্দ সরস্বতী এ বিষয়টি নিজে নিশ্চিত করেছেন এবং এ সংক্রান্ত তার প্রবচনটি ইউটিউবে আছে, কেউ চাইলে দেখতে পারেন।

এ লিখনিতে খ্রিস্টানদের The AQUARIAN GOSPEL গ্রন্থ হতে যিশুর ‘শ্রী জগন্নাথপুরী’ ধামে শিক্ষাগ্রহণের ইতিহাস তুলে ধরা হলো-

“And Jesus was accepted as a pupil in the temple Jagannath; and here he learned the Vedas and the Manic laws(19). The Brahmic masters won- dered at the clear conceptions of the child, and often were amazed when he explained to them the meaning of the laws (20).
[ Reference Book: The AQUARIAN GOSPEL, Section VI, Chapter 21, Verse 19-20 ]

“এবং যীশুকে জগন্নাথ মন্দিরে একজন শিষ্য হিসাবে গ্রহণ করা হয়েছিল; এবং এখানে যিশু বেদ এবং স্মৃতিশাস্ত্রের জ্ঞান লাভ করেছিলেন। শাস্ত্রের উপর এ শিশুটির স্পষ্ট ধারণা দেখে ব্রাহ্মণ পুরোহিতগণ বিস্মিত হতেন এবং শিশুটি যখন নীতিশাস্ত্রের ব্যাখা করতো তখন প্রায়ই তারা অবাক হয়ে তা শুনতেন।”
[রেফারেন্স: The AQUARIAN GOSPEL, Section VI, Chapter 21, Verse 19-20]

এ বিষয়ে একটি ইউটিউব ভিডিওতে বিস্তারিত ব্যাখা করা হয়েছে, চাইলে দেখে নিতে পারেন।

বাস্তবে, কৃষ্ণ নামটিই অপভ্রংশ হয়ে পাশ্চাত্যে খ্রিস্ট হয়েছে। ভারতভূমিতেই কৃষ্ণ নামটির বহু অপভ্রংশ উচ্চারণ দেখা যায়, যেমন কৃষ্ণ>কৃষ্ণা>কৃষ্ণান>কেষ্ট। শ্রীল প্রভুপাদ বর্ণনা করেছেন, কেষ্ট নামটিই পাশ্চাত্যবাসীদের উচ্চারণে বিকৃত হয়ে খ্রিস্ট হিসেবে উচ্চারিত হয়েছে। বাল্মীকি মুনির উপাখ্যানেও দেখা যায়, তিনি রাম উচ্চারণ করতে পারতেন না, ‘মরা’ উচ্চারণ করতেন, কিন্তু নামাভাসের প্রভাবে তিনি এক সময় শুদ্ধ নাম উচ্চারণ করতে পেরেছিলেন।

এভাবে শ্রীল প্রভুপাদ খ্রিস্টানদের ‘হরে কৃষ্ণ’ মহামন্ত্র জপে উতসাহিত করেছিলেন এবং প্রায় ১০ হাজার খ্রিস্টানকে সনাতন ধর্মে পরিণত করেছিলেন।

উল্লেখ্য, সনাতন ধর্ম হতেই অন্যান্য সকল মতের সৃষ্টি। বুদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান সব মত হলো small dictionary এর মতো, যা সনাতমধর্মরূপী Big ডিকশেনারীর অংশ। ছোট অভিধানে যা আছে তার সবই বড় ডিকশেনারীতে আছে, কিন্তু বড় ডিকশেনারীতে এমন প্রচুর জিনিস আছে যা ছোট ডিকশেনারীতে নেই।

এখন, অনেকে প্রশ্ন করে, “যিশু তো মাংসাহার করতেন, তবে তিনি কি করে ভগবানের সন্তান হতে পারেন?!?” এর উত্তর হলো, না, যিশু মাংসাহার করতেন না। যিশুর অন্তিম ১০ নির্দেশের ১টি হলো ‘Thou shalt not kill’- তুমি কাউকে হত্যা করবে না।

আরও একটা প্রশ্ন খুবই জনপ্রিয়, “মুসলিমরা নাকি যিশুকে নবী হিসেবে গণ্য করেন?!?” এর উত্তর হলো, হ্যাঁ মানেন, যিশুকে তারা ঈসা নবী(ঈশ্বরের বার্তাবাহক) হিসেবে গণ্য করেন। তাছাড়া যিশুর পিতামাতারা পূর্বে ছিলেন ইহুদী, যিশুই ভারতে এসে ভারতীয় ধর্মশিক্ষা করে পাশ্চাত্যে প্রচার করেছেন, পরবর্তীতে তা আলাদা মত(ইজম) হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছেন।

তাই শ্রীল প্রভুপাদ যখন খ্রিস্টানদের মাঝে কৃষ্ণভাবনামৃত প্রচার করছিলেন, তখন তিনি তাদের এ বিষয়টি বুঝিয়েছিলেন। তিনি তাদের বুঝিয়েছিলেন, ঈশ্বরপুত্র যিশু তোমাদের পূর্ণ ভগবদজ্ঞান দান করতে পারেন নি, কারণ তখনকার সময়ে লোকেরা এতোই পাষণ্ড ছিলো যে তারা নিজেদের পরিত্রাণ কর্তা যিশুকেও কয়েকটি মুদ্রার লোভে ধরিয়ে দিয়েছিলেন বর্বর শাসকদের কাছে এবং নিজেদের পরিত্রাণ কর্তাকে নিজেরাই হত্যা করতে চেয়েছেন। যিশু যে ভগবদজ্ঞান পূর্ণরূপে ব্যাখা করেন নি, সে জ্ঞান আমি তোমাদের দিতে এসেছি সুদূর ভারত থেকে।

এভাবে শ্রীল প্রভুপাদ তার জীবিত অবস্থায় প্রায় ১০ হাজার খ্রিস্টানকে কৃষ্ণভক্ত বৈষ্ণবে পরিণত করেছিলেন।

Avatar of Ankon Nath

Ankon Nath

Writer & Admin

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments