ব্রহ্মা’জির আয়ুষ্কাল:
[৩০ দিনে মাস; ১২ মাসে বা’ ৩৬০ দিনে ০১ বর্ষ; এভাবে মোট আয়ু ১০০ বর্ষ বা’ পর। ব্রহ্মার আয়ুষ্কাল দুইভাগে বিভক্ত এই ভাগকে বলা হয় পরার্ধ]
সৌর বর্ষের হিসাবে পৃথিবীতে ০৪ টি যুগ (চতুর্যুগ: সত্য+ত্রেতা+দ্বাপর+কলি) চক্রাকারে আবর্তিত হয়। এই চতুর্যুগের এক সমষ্টিকে বলা হয় এক দিব্যযুগ। এক দিব্যযুগ এক হাজার বার চক্রাকারে আবর্তিত হলে ব্রহ্মাজির এক দিবস হয়, অনুরূপ এক হাজার দিব্যযুগে হয় এক রাত্রি। ব্রহ্মাজির দিবারাত্রির এই সংযুক্তিতে মোট দুই হাজার দিব্যযুগ আবর্তিত হয়; এই দুই হাজার দিব্য যুগের সমষ্টিকে বলা হয় এক কল্প অর্থাৎ, ব্রহ্মাজির এক দিন। এভাবে ৩০ দিনে মাস; ১২ মাসে অর্থাৎ ৩৬০ দিনে বছর এবং ব্রহ্মাজির ১০০ বছরে আয়ুষ্কাল পূর্ণ হয়।
বিষ্ণুপুরাণ (০১/০৩/১১-১৩) অনুযায়ী ঊষা ও সন্ধ্যা সহ মোট যুগের সময়সীমা:
১) কৃত/সত্যযুগ ৪,৮০০ দিব্যবর্ষ = ১৭,২৮,০০০ সৌরবর্ষ
২) ত্রেতাযুগ ৩,৬০০ দিব্যবর্ষ = ১২,৯৬,০০০ সৌরবর্ষ
৩) দ্বাপর যুগ ২,৪০০ দিব্য বর্ষ = ৮৬৪,০০০ সৌরবর্ষ
৪) কলিযুগ ১,২০০ দিব্যবর্ষ = ৪৩২,০০০ সৌরবর্ষ
___________________________________________
সর্বমোট = ৪,৩২০,০০০ বছর
গণনা:
০১ চতুর্যুগ = ০১ দিব্যযুগ
বা’ ০১ দিব্যযুগ = ৪,৩২০,০০০ সৌর বর্ষ।
২,০০০ দিব্যযুগ = ০১ দিন (দিবারাত্রি) বা ০১ কল্প
∴ ০১ কল্প = ২,০০০ দিব্যযুগ
বা’ ২,০০০×৪৩,২০,০০০ = ৮,৬৪০,০০০,০০০ সৌরবর্ষ।
৩৬০ দিন বা কল্প = ব্রহ্মার ০১ বর্ষ
বা’ ৩৬০×৮,৬৪০,০০০,০০০= ৩,১১০,৪০০,০০০,০০০ সৌরবর্ষ।
১০০ বর্ষে আয়ু পূর্ণ হয়
বা’ ১০০×৩,১১০,৪০০,০০০,০০০= ৩১১,০৪০,০০০,০০০,০০০ সৌরবর্ষ
অতএব, ব্রহ্মার মোট আয়ু পৃথিবীর হিসাবে ৩১১,০৪০,০০০,০০০,০০০ সৌরবর্ষ বা ৩১১ ট্রিলিয়ন ৪০ বিলিয়ন বছর।
তথ্যসূত্র:
১) বিষ্ণুপুরাণ: ১/৩/১১-১৩
दिव्यैवर्षसहस्रैस्तु कृतत्रेतादिसंज्ञितम्।
चतुर्युगं द्वादशभिस्तद्विभागं निबोध मे।।११।।
चत्वारि त्रिणि द्वै चैकं कृतादिषु यथाक्रमम्।
दिव्याब्दानां सहस्राणि युगेष्वाहुः पुराविदः।।१२।।
तत् प्रमाणैः शतैः सन्ध्या पूर्वा तत्राभिषीयते।
सन्ध्यांशश्चैव तत्तुल्यो युगस्यानन्तरो हि सः।।१३।।
দিব্যৈবর্ষসহস্রৈস্তু কৃতত্রেতাদিসংজ্ঞিতম্।
চতুর্যুগং দ্বাদশভিস্তদ্বিভাগং নিবোধ মে ।।১১৷৷
চত্বারি ত্রীণি দ্বৈ চৈকং কৃতাদিষু যথাক্রমম্।
দিব্যাব্দানাং সহস্রাণি যুগেস্বাহুঃ পুরাবিদঃ ।।১২।।
তৎ প্রমাণৈঃ শতৈঃ সন্ধ্যা পূর্বা তত্রাভিষীয়তে।
সন্ধ্যাংশশ্চৈব তত্ত্বল্যো যুগস্যানন্তরো হি সঃ ।।১৩।
দেবতাদের বারো হাজার বর্ষে সত্য যুগ, ত্রেতা যুগ, দ্বাপর যুগ ও কলিযুগ নামে চারযুগ হয়। তাদের পৃথক পৃথক পরিমাণও আমি তোমাকে শোনাচ্ছি।। ১১। পুরাতত্ত্ব জ্ঞাতাগণ সত্যযুগাদির পরিমাণ ক্রমশ চার, তিন, দুই ও এক হাজার দিব্য বর্ষ বলে থাকেন।। ১২। প্রত্যেক যুগের আগে সম পরিমাণের শত বর্ষের সন্ধ্যা থাকে এবং যুগের পরেও সেই পরিমাণের সন্ধ্যাংশ হয় (অর্থাৎ সত্যযুগ আদির পূর্বে ক্রমশ চার, তিন, দুই ও একশত দিব্য বর্ষের সন্ধ্যা এবং তত বর্ষেরই সন্ধ্যাংশ হয়ে থাকে)। ১৩।।
২) শ্রীবিষ্ণুপুরাণ: ১/৩/৫
निजेन तस्य मानेन आयुर्वर्षशतं स्मृतम्।
तत्पराख्यं तदर्धं च परार्धमभिधीयते॥
নিজেন তস্য মানেন আয়ুর্বর্ষশতং স্মৃতম্।
তৎ পরাখ্যং তদর্দ্ধং চ পরার্দ্ধমভিধীয়তে।।
বলা হয় তাঁর নিজের পরিমাণে তাঁর আয়ু শত বর্ষের হয়। সেই শত বর্ষকে বলা হয় ‘পর’, তার অর্ধেককে বলা হয় ‘পরার্ধ’।।
৩) ভগবদ্গীতা: ৮/১৭
सहस्रयुगपर्यन्तमहर्यद्ब्रह्मणो विदुः।
रात्रिं युगसहस्रान्तां तेऽहोरात्रविदो जनाः॥
সহস্রযুগপর্যন্তমহর্যদ্ ব্রহ্মণো বিদুঃ।
রাত্রিং যুগসহস্রান্তাং তে’হোরাত্রবিদো জনাঃ॥
By human calculation, a thousand ages taken together form the duration of Brahmä’s one day. And such also is the duration of his night.
মনুষ্য মানের সহস্র চতুর্যুগে ব্রহ্মার একদিন হয় এবং সহস্র চতুর্যুগে তাঁর এক রাত্রি হয়। এভাবেই যাঁরা জানেন, তাঁরা দিবা-রাত্রির তত্ত্ববেত্তা।
✍️ প্রবীর চৈতন্য চন্দ্র দাস
© স্বধর্মম্ ™️