নিম্বার্ক বেদান্ত
বেদান্তসূত্রের সবথেকে জনপ্রিয় ভাষ্যগুলির মধ্যে বেশিরভাগই বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের ভাষ্য। শংকরাচার্যের অদ্বৈতবাদকে পূর্ণরূপে খণ্ডন করে এবং তা থেকে পূর্ণ স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে বৈষ্ণব বেদান্ত দাঁড়িয়ে আছে। শৈব, শাক্ত, গাণপত্য ইত্যাদি সম্প্রদায়ের মধ্যে শাক্তমতটি বিভিন্ন পুরাণ ও উপপুরাণ, মূলতঃ তন্ত্রের উপর নির্ভরশীল; গাণপত্য মতটি কিছু উপপুরাণ ও অর্বাচীন উপনিষদের উপর নির্ভরশীল। শাক্ত ও গাণপত্য মতের বেদান্ত ভাষ্য থাকলেও তাতে অতটাও শক্তিশালী যুক্তিপূর্ণ স্বতন্ত্রতা দেখা যায় না। তাছাড়া এই দুটি মতের বৈদিক অস্তিত্বও নেই। শৈবমতের স্বপক্ষে পুরাণের পাশাপাশি কিছু শ্রুতিপ্রমাণ দেখানো হলেও সেগুলি আবার বৈষ্ণবেরা খণ্ডন করে দেখিয়েছেন যে, সেগুলি আসলে বিষ্ণুকেই উদ্দেশ্য করে- তা নাহলে শ্রুতির অন্য অংশের সাথেই বিরোধ হয়। শৈব, শাক্ত ও গাণপত্য মতের বেদান্ত ভাষ্য শেষপর্যন্ত অদ্বৈতবাদের সাথে স্বতন্ত্রতা বজায় রাখতে পারে না। কিন্তু বৈষ্ণব বেদান্ত সম্পূর্ণরূপে স্বতন্ত্র ও স্বতঃস্ফূর্ত। পূর্ববর্তী বহু প্রবন্ধে বৈষ্ণব বেদান্ত আলোচনা করা হয়েছে।
পূর্ববর্তী ৪ টি পর্বে সংক্ষেপে বেদ, বেদান্ত সূত্র এবং ৩ বৈষ্ণব আচার্যের বেদান্ত দর্শন সম্বন্ধে আমরা আলোচনা করেছিলাম। এই পর্বে আমরা আচার্য শ্রীনিম্বাদিত্য এবং তাঁর বেদান্ত দর্শন বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোকপাত করবো।
“সা জিহ্বা যা হরিং স্তৌতি তচ্চিত্তং যত্তদর্পনম।
তাবেব কেবলৌ শ্লাঘ্যৌ যৌ তৎপুজাকরৌ করৌ ।।অর্থাৎ, সেই জিহ্বাই জিহ্বা যে কেবলমাত্র শ্রীহরির স্তব করে, সেই চিত্তই চিত্ত যে চিত্ত শ্রীহরিতে সমর্পিত, সেই হস্তদ্বয় কেবল শ্লাঘ্য যে হস্তদ্বয় শ্রীবিষ্ণুর পূজায় রত হইয়াছে। (শ্রীল পূর্ণ প্রজ্ঞের কৃষ্ণামৃতমহার্ণবম-৭৪)
চিন্ত্য দ্বৈতাদ্বৈত সিদ্ধান্ত (শ্রী নিম্বাদিত্য) : চার বৈষ্ণব মহাসম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাচীনতম সম্প্রদায় হলো এই নিম্বাদিত্য বা নিম্বার্ক সম্প্রদায়। দ্বাপর যুগের শেষ দিকে স্বয়ং ভগবান ভৌমলীলা সংগুপ্ত করে স্বধাম গোলোকোদ্দেশ্যে প্রস্থান করলে এই ধন্য ভারত ভূমিতে কলি তার পার্ষদ হিংসা, মিথ্যা, দ্বেষ, কাম, ক্রোধ ইত্যাদি সহ প্রভূত অধার্মিক শক্তি সহযোগে এই পূণ্য ভূমির ধর্মাকাশ পাপের কুয়াশায় তমসাচ্ছন্ন করতে শুরু করে। কলির প্রভাবে প্রায় প্রত্যেকেই ভাগবত ধর্মচ্যুত হয়ে বিভিন্ন ক্ষুদ্র মত এবং পন্থায় আকৃষ্ট হতে থাকে। এমতাবস্থায় শ্রী ভগবান তাঁর সুদর্শন চক্রের এক অবতারকে পরম বৈষ্ণব শ্রীমদ আরুনি এবং বৈষ্ণবী জয়ন্তী দেবীর আলয়ে প্রেরণ করলেন। নিম্বাদিত্য বা নিম্বার্ক সম্প্রদায়ের উদ্ভব ভগবানের পরম ভক্ত এবং ব্রহ্মাজীর মানস পুত্রগণ অর্থাৎ ব্রহ্মার চতুষ্কুমার সনক, সনন্দ, সনাতন এবং সনত কুমার হতে, যেটি আচার্য নিম্বার্ক তাঁর বেদান্ত দর্শনের প্রথম অধ্যায়ের তৃতীয় পাদের অষ্টম সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
আচার্য শ্রীল নিম্বাদিত্য প্রবর্তিত বেদান্ত ভাষ্যের নাম “বেদান্ত পারিজাত সৌরভ” । পরবর্তীতে শ্রীল আচার্যের শিষ্য শ্রীল শ্রীনিবাসাচার্য্য এটির কিঞ্চিৎ বিস্তৃত করেন এবং নাম দেন “বেদান্ত কৌস্তভ”।
আচার্য্য শ্রীনিম্বাদিত্যের প্রচারিত সিদ্ধান্ত “চিন্ত্য দ্বৈত-অদ্বৈত সিদ্ধান্ত” নামে পরিচিত।
তাঁর মতে ব্রহ্ম-জীব ও জগৎ স্বরূপত এবং ধর্মত যুগপৎ ভিন্ন এবং অভিন্ন। এই ভেদ এবং অভেদ সমানভাবে সত্য, নিত্য ও অবরুদ্ধ। অর্থাৎ জীবেশ্বরে বা পরমাত্মায় নিত্য ভেদ এবং অভেদ বর্তমান। এই নিত্য ভেদ এবং অভেদের মতবাদ বা শিক্ষা ভগবান চৈতন্য মহাপ্রভুও দিয়ে গেছেন। কতিপয় অসৎ অসূয়াপরায়ণ ব্যক্তি নিজ মূর্খামি বশে শ্রীল নিম্বার্কাচার্য্যের চিন্ত্য ভেদাভেদবাদ এবং শ্রীমন্মহাপ্রভু দ্বারা প্রবর্তিত অচিন্ত্য ভেদাভেদ তত্ত্বকে একই মনে করে শ্রীমন্মহাপ্রভুর প্রিয় পার্ষদ শ্রীল রুপ গোস্বামীর অনুগত গৌড়ীয় সম্প্রদায়ের দর্শনকে নিম্বার্ক সম্প্রদায়ভুক্ত বলে মিথ্যা প্রচার করে থাকে। যাই হোক এই বিষয় সম্বন্ধে একটি আলাদা প্রবন্ধ করার ইচ্ছা রাখছি।
শ্রীল নিম্বার্কাচার্য্যের সিদ্ধান্ত: ঈশ্বর : ভ্রম, প্রমাদ, বিপ্রলিপ্সা, করণাপাটব, মোহ, তন্দ্রাদি অষ্টাদশ দোষ ভগবৎ তত্ত্বে নাই। তিনি নির্দ্দোষ-নির্গুণ। সচ্চিদানন্দ স্বরূপে তিনি নিত্য তাঁর নিজ ধাম গোলক বৃন্দাবনে স্বরূপ শক্তি শ্রীমতি রাধারানী সহিত বিরাজমান। তিনি নিত্য অপ্রাকৃত বিগ্রহস্বরূপ। তিনি অপ্রাকৃত চিন্ময় তত্ত্ব সৎ-চিদ-আনন্দময় তাই জড় বুদ্ধির দৃষ্টিতে তিনি নিরাকার বলে প্রতীত হন, কারণ জড় জাগতিক উপাদান দিয়ে তিনি গঠিত নন। কিছু পাষন্ড ব্যক্তি সুকৃতির অভাবে বা ভগবৎ বিদ্বেষের কারণে তাঁর এই অপ্রাকৃত আকৃতি প্রাকৃত বুদ্ধি দ্বারা গ্রহণ করতে সদা ব্যর্থ হন। এরাই বেদের “না তস্য প্রতিমা অস্তি” বেদের এই মন্ত্রের মুখ্য অর্থ ব্যতিরেকে গৌণ অর্থ করে থাকে। তারা তাদের জড় বুদ্ধি দ্বারা প্রতিমা শব্দার্থ করে জাগতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে, তাদের কাছে প্রতিমা অর্থে নির্জীব পুতুল। কিন্তু এক্ষেত্রে মুখ্য অর্থে প্রতিমা কথার অর্থ হলো তুলনা বা উপমা। অর্থাৎ এই মন্ত্রে মুখ্য অর্থ দাঁড়ায় “সে পরম অদ্বয় তত্ত্বের উপমা বা তুলনা জাগতিক দৃষ্টিতে নেই। কোনো প্রাকৃতিক বা জাগতিক বস্তু দ্বারা তিনি গঠিত নন। বেদ মূলত জড় জাগতিক তিন গুনকেই অধিক গুরুত্ব প্রদান করেন কিন্তু পরাৎপর অখিলেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ত্রিগুণাতীত তাই এক্ষেত্রে সহজেই বোঝা যায় যে উক্ত মন্ত্রের অর্থ এই দাঁড়ায় যে ত্রিগুণাতীত ভগবানের জাগতিক হিসাবে কোনো তুলনা হয়না বা ত্রিগুণান্তর্গত জাগতিক দৃষ্টিতে তাঁর কোনো উপমা নেই। যাই হোক এভাবেই মূর্খ ব্যক্তিরা প্রতি ক্ষেত্রেই মুখ্য অর্থ পরিত্যাগ করে গৌণ অর্থ নির্ধারন করে থাকেন। এখানে শ্রীল নিম্বার্কাচার্য্যের উক্তি এবং এই বেদ মন্ত্রের সমন্বয় সাধিত হলো। গোলোক চতুর্ব্যূহ, পরব্যোম চতুর্ব্যূহ এবং অন্যান্য চতুর্ব্যূহাংশ কৃষ্ণের অংশ এবং কৃষ্ণ স্বয়ং অংশী। তিনি প্রাকৃতিক জড় বুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তিগণের নিকট নিরাকার কিন্তু অপ্রাকৃতিক ভক্ত চক্ষুর নিকট তিনি সাকার। তিনিই সমস্ত সৌন্দর্য্য এবং মাধুর্য্যের মূল উৎস। রাধালিঙ্গিত সেই পরমতত্ত্বই সর্ব কারণের পরম কারণ। তিনি স্বরূপ শক্তি সর্ব্বোলক্ষ্মীময়ী কীর্তিদাসুতা এবং তাঁর কায় ব্যূহস্বরূপ সহস্র সহস্র সখীগণ দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে প্রত্যেকের নিত্য আরাধ্য। তিনি সম্পূর্ণরূপে স্বতন্ত্র, সর্ব্বশক্তিমান, সর্ব্বেশ্বরেশ্বর। তিনি ব্রহ্মা শিবাদি দেবগন দ্বারা নিত্য বন্দিত।
(উল্লেখ্য পাষণ্ডগণ বলে থাকে শ্রীমতি রাধারানী এবং সখীবৃন্দ গৌড়ীয় বৈষ্ণব দ্বারা বানানো বা কল্পনা মাত্র -যদি তাই হবে তবে আজ হতে ৫৫০০ বছর পূর্বে শ্রীল নিম্বার্কাচার্য্য কেনো শ্রীমতি এবং তাঁর সখি মঞ্জরীদের কথা বলে গেলেন?, তাদের আরও বক্তব্য হলো ব্রহ্মা,দূর্গা এবং শিবাদি দেবগন কৃষ্ণের চরণ বন্দনাকারী দাস এই উক্তি গুলিও গৌড়ীয় বৈষ্ণবদের সাজানো মিথ্যা ভাষণ, মহাপুরান শ্রীমদ্ভাগবত মিথ্যা, ব্রহ্ম সংহিতা মিথ্যা-যদি তাই হবে তবে ভাগবত এবং ব্রহ্ম সংহিতার বচন আচার্য্য নিম্বার্কের সাথে মিলে যায় কিভাবে? ৫৫০০ বছর পূর্বে নিশ্চই গৌড়ীয় বৈষ্ণব সম্প্রদায় আত্মপ্রকাশ করেনি !)
জীব : আচার্য্য নিম্বার্কের সিদ্ধান্তানুযায়ী পরমাত্মা এবং জীবাত্নার মধ্যে অংশী ও অংশ এবং জ্ঞ ও অজ্ঞ ইত্যাদি নিত্য ভেদ বর্তমান। অংশী অর্থে পরমেশ্বর, জীবাত্মাগণ যাঁর অংশদ্ভুত তিনি অংশী এবং জীবাত্মা তাঁর নিত্য অংশ। “জ্ঞ” অর্থে পরমেশ্বর পরমাত্মা এবং অজ্ঞ অর্থে পরমাত্মার জীবাত্মা। “অংশো নানাব্যপদেশান্যথা চাহি দাশকিতবাদিত্বমধীয়ত একে” (ব্রহ্ম সূত্র- ২|৩|৪২) ব্রহ্ম সূত্রের এই সূত্র ব্যাখ্যা করতে গিয়ে নিজ ভাষ্যে শ্রীল আচার্য্য বললেন ” জীব এবং পরমাত্মার অংশাংশি বা ভেদাভেদ ভাব নিত্য বর্তমান। জীব পরমাত্মার নিত্য অংশ, কারণ জ্ঞ- অজ্ঞ – ঈশ্বর ও জীব উভয়েই অজ এবং নিত্য ইত্যাদি । আবার “তত্ত্বমসি” ইত্যাদি শ্রুতিতে জীব ও ব্রহ্মের অভেদ বলা হয়েছে। সুতরাং এক্ষেত্রে ভেদ এবং অভেদ দুই স্বীকার করা হোয়েছে। অতএব জীব এবং ব্রহ্মে অংশাংশি বা ভেদ অভেদ সম্বন্ধ বর্তমান । সুতরাং শ্রুতিতে কেবলাদ্বৈতবাদ স্থান পায়না। জীব অণু চৈতন্য এবং পরমেশ্বর বৃহচ্চৈতন্য , অণু চৈতন্য সর্ব্বদাই বৃহচ্চৈতন্যের নিয়ন্ত্রণাধীন। জীব তিন প্রকারের ১) মুক্ত,২) বদ্ধমুক্ত এবং ৩) বদ্ধ।
মুক্তজীব: যারা শ্রীকৃষ্ণের চরণে সম্পূর্ণ সমর্পিত তারা মুক্ত।
বদ্ধমুক্ত : যারা পূর্বে মায়াধীন বা মায়াবদ্ধ ছিল। কিন্তু বর্তমানে গুরু বৈষ্ণবের কৃপায় ভগবদ্ভক্তি লাভ করেছেন বা করবেন তারা বদ্ধ মুক্ত।
বদ্ধ : যারা হরির দাসত্ব ত্যাগ করে মায়ার দাসত্ব করে বা করতে চায় বা যাদের চরম লক্ষ্য ভোগ তারা বদ্ধ জীব।
জড় : এই সিদ্ধান্ত মতে জড় দুই প্রকারের – মায়া এবং কাল। আবার মায়া দুই প্রকারের প্রাকৃত এবং অপ্রাকৃত। ভগবানের বহিরঙ্গা শক্তি মহামায়ার মায়া হলো প্রাকৃত মায়া এবং ভগবানের অন্তরঙ্গা শক্তি দেবী যোগমায়ার মায়া হলো অপ্রাকৃত মায়া, যদ্দ্বারা ভগবান নিজেকে আবৃত রাখেন। কালও দুই প্রকার -প্রাকৃত এবং অপ্রাকৃত। অপ্রাকৃত কাল এবং মায়া যথাক্রমে প্রাকৃত কাল এবং মায়ার অতীত চিৎস্বরূপ। কাল অচেতন । শ্রীভগবানের ইচ্চ্ছাতেই কাল ক্রিয়াশীল হয়। বস্তুত চিজ্জগতের প্রাকৃত কাল এবং মায়ার ছায়াই হলো জড় জাগতিক কাল এবং মায়া। ছায়া ধর্মবিশিষ্টা মায়াপ্রকৃতি চিজ্জগতের বিকার মাত্র।
বর্তমানে শ্রীনিম্বার্কের রচিত বলে কথিত যে দশশ্লোকী প্রচলিত তার থেকে এই সিদ্ধান্ত সংগ্রহ করা যায় –
“সর্ব্বং হি বিজ্ঞানমতো যথাৰ্থকং
শ্রুতিস্মৃতিভ্যো নিখিলস্য বস্তুনঃ।
ব্রহ্মাত্মকত্বাদিতি বেদবিন্মতং
ত্রিরূপতাপি শ্রুতিসূত্র সাধিতা।।সকল বস্তুই ব্রহ্মণাত্মক অর্থাৎ সকলের বস্তুই ব্রহ্ম(পরম) হতে উদ্ভূত। বেদতত্ত্ববিদগণের মতে ব্রহ্মরূপ সদ্বস্তু হতে কখনও অসদ্বস্তু উদয় হতে পারেনা। বস্তু বিজ্ঞানই নিখিল বস্তুর যথার্থ তত্ত্ব, শ্রুতি এবং স্মৃতি থেকে তাই জানা যায়। কোথাও অদ্বৈত বাক্য, কোথাও দ্বৈত বাক্য আবার কোথাও উভয় নিষ্ঠবাক্য প্রতিষ্ঠিত সুতরাং কেবলমাত্র কেবলাদ্বৈতবাদ স্থান পায়না। শ্রুতি এবং স্মৃতি বিচারে অদ্বৈত এবং দ্বৈত উভয়ই সিদ্ধ হওয়ায় দ্বৈতাদ্বৈতবাদই সঠিক শাস্ত্র তাৎপর্যরূপে গ্রহণীয়।
গৌড়ীয় দর্শনে বেদ সিরিজে পর্ব ১ থেকে ৫ পর্যন্ত পর্বগুলিতে আমরা খুবই সংক্ষেপে বেদ, উপনিষদ এবং বেদান্ত সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি এছাড়াও শাস্ত্রোল্লিখিত চার বৈষ্ণব মহাসম্প্রদায়ের বেদান্ত দর্শন সম্বন্ধেও কিঞ্চিৎ আলোচনার প্রয়াস আমরা করেছি। পরবর্তী পর্বে ব্রহ্ম-মাধ্ব-গৌড়ীয় সম্প্রদায়ের অচিন্ত্য বেদান্ত দর্শন এবং আচার্য্য শংকর প্রণীত মায়াবাদ বা কেবলাদ্বৈতবাদ সম্পর্কে আলোকপাত করার চেষ্টা করবো।
উপসংহারে বলি, বৈষ্ণব আচার্য্যগণ দ্বৈতবাদের যে মন্দির নির্মাণ করেছেন তা বস্তুত অদ্বৈতবাদ খণ্ডন করেই। বৌদ্ধমত খণ্ডন করে শঙ্কর পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেন বৈদিক জ্ঞান। শংকর ভগবতাজ্ঞায় অসৎ শাস্ত্র প্রণয়ন করলেন। বৌদ্ধ মতকে নিরসন করে তিনি প্রচ্ছন্নভাবে বৌদ্ধ মতবাদ মেনেও তৎকালীন সময় এবং পাত্র অনুযায়ী তিনি অসুর বিমোহনার্থে কেবলাদ্বৈত প্রচার করেন। বিশদ আলোচনা পরবর্তী পোস্টে।
শুদ্ধাদ্বৈত বেদান্ত :
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=129930228690101&id=105504134466044
শুদ্ধদ্বৈত বেদান্ত:
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=122432109439913&id=105504134466044
বেদ :
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=109429214073536&id=105504134466044
বিশিষ্টাদ্বৈত বেদান্ত :
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=121211272895330&id=105504134466044