পুরীধামে পরমেশ্বর ভগবান জগন্নাথের প্রকাশঃ
২য় পর্বের পর-
স্কন্দ পুরাণ,বিষ্ণুক্ষেত্র, পুরুষোত্তমক্ষেত্র মাহাত্ম্য, নবম অধ্যায়ের ১-৬৮ নং শ্লোকের বর্ণনা অনুযায়ীঃ
“জৈমিনি বললেন,সন্ধ্যা কালে বিদ্যাপতি ইন্দ্রদ্যুম্নের প্রাসাদে গমন করেন।হে দ্বিজগন,বিদ্যাপতির এরুপ আগমন সংবাদ রাজার কাছে পৌঁছানো হল।ইন্দ্রদ্যুম্ন বিদ্যাপতির আগমন বার্তা শ্রবন করে পরম আনন্দিত হয়ে বিদ্যাপতির প্রতিক্ষা করতে লাগলেন।এ সময়ে বিদ্যাপতি নীলমাধবের পরম রমনীয় মাল্য(মালা) হস্তে ধারন পূর্বক রাজার সম্মুখে গমন করেন।বিদ্যাপতি এ মাল্য রাজাকে প্রদান করে বলতে লাগলেন, ক্ষেত্র পুরুষোত্তমে অবস্থিত সাক্ষাৎ মুক্তিদাতা এই মাল্যদানচ্ছলে আপনাকে নিজস্বরুপ দেখবার নিমিত্ত আজ্ঞা করেছেন।এই বলে ব্রাহ্মণ ভূপতির গলায় সেই মালা পরিয়ে দিলেন।এরপর সে মালা ইন্দ্রদ্যুম্ন প্রাপ্ত হয়ে প্রভু জগন্নাথের উদ্দেশ্যে স্তব করতে লাগলেন।এরপর রাজা বিদ্যাপতিকে সন্মানপূর্বক পূজা করে,তার কুশল জিজ্ঞাসা করে পুরুষোত্তম ক্ষেত্র সমন্ধে জিজ্ঞাসা করেন।বিদ্যাপতি রাজার সে প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেন।”
দশম অধ্যায় ১-১১৮ নং শ্লোকের বর্ণনা অনুযায়ীঃ
“ইন্দ্রদ্যুম্নের প্রশ্নের উত্তরে বিদ্যাপতি পুরুষোত্তম ধামের মহিমা বর্ণনা করেন।সে সময় দেবর্ষি নারদের আগমন হয় এবং নারদ মুনি রাজাকে ভক্তিযোগের মহিমা বর্ণনা করেন।”
একাদশ অধ্যায় ১-১৪৪ নং শ্লোকের বর্ণনা অনুযায়ীঃ
“ইন্দ্রদ্যুম্ন রাজা নারদ মুনির কাছে উৎকলদেশের নীল মাধব দর্শনের তীব্র আকাঙ্খার কথা জানালে নারদ মুনি বলেন, শীঘ্রই প্রভু জগন্নাথদেব চতুর্রুপে আবির্ভূত হবেন।পরে নারদমুনিকে পদক্ষিণ করে রাজা উৎকল অভিমুখে যাত্রা করেন।উৎকলে পৌঁছে ইন্দ্রদ্যুম্ন উৎকলের( বর্তমান উড়িষ্যা) অধিপতির সাথে সাক্ষাৎ করেন।উৎকল অধিপতির কাছে নীলাচলশিখরবাসী জগন্নাথ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। উত্তরে উৎকল অধিপতি জানান যে,নীলপর্বত দক্ষিণ সমুদ্রের তীরভাগে অবস্থিত এবং বন আবৃত,সেখানে লোকের গমনের শক্তি নাই।সম্প্রতি সেই পর্বতটি বালুকারাশি দ্বারা আচ্ছাদিত হয়েছে। এরপর নারদের দিকে তাকিয়ে ব্যাকুলভাবে বললেন,হে মুনি এ কি ঘটনা হল,হায়! হায়! যে নিমিত্তে এখানে আসলাম তাও আজ বিফল হল।এরপর নারদ মুনি বললেন,হে রাজন,বিস্মিত হচ্ছেন কেন? তুমি ভাগ্যবান পুরুষ ও বিষ্ণুভক্তিপরায়ন।অতএব বৈষ্ণবগণের বাঞ্ছা কদাপি বিফল হবার নয়।যিনি পার্থিব শরীর ধারন করেছিলেন, সেই জগতের কারন নারায়ণকে তুমি অবশ্যই দেখতে পাবে।তিনি তোমাকে কৃপা করার জন্য পুনরায় অবতীর্ণ হবেন।তুমি অবশ্যই চর্ম চক্ষু দ্বারা ক্ষেত্রধামে বৈকুন্ঠনাথকে দেখতে পাবে।হে নৃপ, পিতামহ ব্রহ্মা তোমার এই কার্য্যে আমাকে নিযুক্ত করেছেন।অতত্রব সেই ক্ষেত্রমধ্যে গমন করে তোমাকে সকল বিষয় বলব। সম্প্রতি রাত্রি তৃতীয় প্রহর হয়েছে।এইক্ষণে সকল ব্যক্তিকে স্ব স্ব গৃহে গমনার্থে অনুমতি প্রদান কর।এবং তুমিও অন্তপুরে গিয়ে নিদ্রিত হও।” চলবে…
জয় জগন্নাথ। হরে কৃষ্ণ। প্রণাম
প্রচারে- ©️ স্বধর্মম্ : Connect to the inner self পোস্টার নির্মাণ -শ্রীবিকাশ চন্দ্র দাস প্রভু।