কর্ম বড় নাকি ধর্ম
এটা বোঝার পূর্বে কর্মের সংজ্ঞা জানাটা খুব জরুরি। শ্রীবিষ্ণুপুরাণে বর্ণিত রয়েছে-
“কর্ম তাকেই বলা হয়, যা বন্ধনের কারণ না হয় এবং বিদ্যাও তাকেই বলা যায় যা মুক্তির সাধন হয়। এসব ছাড়া অন্য কর্ম তো পরিশ্রমরূপ এবং অন্য বিদ্যা কলাকৌশলমাত্র।”
– (শ্রীবিষ্ণুপুরাণ: ১/১৯/৪১)
(দৈত্যরাজ হিরণ্যকশিপুর প্রতি প্রহ্লাদ মহারাজ)
আমরা জানি যেসমস্ত কর্ম কৃষ্ণকেন্দ্রিক নয় তা বন্ধনের কারণ আর যে কর্ম কৃষ্ণের প্রীতি বিধানে যুক্ত তা মুক্তিদায়ক। যেমন ভগবদগীতায় ভগবান বলেন-
“বিষ্ণুর প্রীতি সম্পাদন করার জন্য কর্ম করা উচিত; তা না হলে কর্মই এই জড় জগতে বন্ধনের কারণ। তাই, হে কৌন্তেয়! ভগবানের সন্তুষ্টি বিধানের জন্যই কেবল তুমি তোমার কর্তব্যকর্ম অনুষ্ঠান কর এবং এভাবেই তুমি সর্বদাই বন্ধন থেকে মুক্ত থাকতে পারবে।”
– (ভ:গী: ৩/৯)
বিষ্ণুপুরাণোক্ত প্রহ্লাদ মহারাজের বাণী ও ভগবদগীতার বাণী থেকে সহজেই বুঝতে পারা যায় যদি কর্মের উদ্দেশ্য বা কেন্দ্র কৃষ্ণ না হন তবে তা মুক্তিদায়ক হয়না, ফলস্বরূপ সেই কর্ম কেবলই কলাকৌশল মাত্র অথবা কেবলই পরিশ্রম। তাই আমাদের কৃষ্ণের সন্তুষ্টির জন্য কর্ম সম্পাদন করা কর্তব্য।
কর্মের এই অতি সুন্দর ব্যবস্থাপনাকে বলা হয় কৃষ্ণভাবনা। এভাবেই পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে কেন্দ্র করে জীবন পরিচালনা করা উচিত।
“পৃথিবীতে ধর্ম নামে যাহা কিছু চলে
ভাগবত কহে তাহা পরিপূর্ণ ছলে”
অতএব, প্রকৃত ধর্ম হচ্ছে কৃষ্ণের সন্তুষ্টি বিধানে কৃত কর্ম এবং কর্মের সংজ্ঞা এবং উদ্দেশ্যও হচ্ছে সেটি।
ধর্ম বড় নাকি কর্ম বড় বিষয়টি এমন নয়। আসলে কর্মের উদ্দেশ্যে এবং কর্ম কর্তার মনোবৃত্তির উপর নির্ভর করে তা প্রতিষ্ঠিত হয়। মোটকথা হচ্ছে কর্মকে যদি ধর্মে রূপান্তরিত করা যায় তবে তা মহান অন্যথায় সেইসব কর্ম গাধার খাটুনি ছাড়া কিছুই না।। ধন্যবাদ।।
।। হরেকৃষ্ণ ।।
Hare Krishna 🙏