এবিষয়ে বৈদিক শাস্ত্রের সিদ্ধান্ত এই যে, জাগতিক কোনো বস্তুই (অর্থসম্পদ) জীবকে প্রকৃতপ্রকৃতপক্ষে সুখী করতে পারে না, যতক্ষণ পর্যন্ত জীবগণ পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ভক্তিপূর্ণ সেবায় নিযুক্ত না হচ্ছে।
জড় জগতে সমস্ত বদ্ধ জীবগণ তাদের স্বরূপে সবাই চিন্ময় আত্মা। আর আত্মা হচ্ছেন পরমাত্মার ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র নিত্য অবিচ্ছেদ্য অংশসদৃশ।
“মমৈবাংশো জীবলোকে জীবভূতঃ সনাতনঃ”
এই জড় জগতে বদ্ধ জীবসমূহ আমার সনাতন বিভিন্নাংশ। (ভ:গী: ১৫/৭)
“জীবের স্বরূপ হয় কৃষ্ণের নিত্যদাস” (চৈ:চ: মধ্য:/২০/১০৮)
পরমাত্মা সচ্চিদানন্দময় (সৎ, চিৎ, আনন্দ), পরমাত্মার অংশ হওয়ায় আত্মাও হলেন সচ্চিদানন্দময়। যেহেতু প্রকৃত সত্ত্বায় জীবের সুখ-শান্তি আনন্দময় বৈশিষ্ট্য রয়েছে, সেহেতু জড় জগতের সমস্ত জীবই বিশেষ করে মনুষ্য সমাজের লোকেরা কেউ-ই দুঃখ পেতে ইচ্ছুক নয়।
তবুও পরম সত্য পরমেশ্বর ভগবান সম্বন্ধে কোনোরূপ জ্ঞান না থাকায় অবিদ্যার বশবর্তী হয়ে প্রত্যকেই সুখ-শান্তি-আনন্দের সন্ধানে এদিকসেদিক দৌড়াচ্ছে। তাই ভবিষ্যপুরাণ দৃঢ়ভাবে বর্ণনা করছেন-
“ধন দ্বারাও সুখ প্রাপ্তি ঘটে না। প্রথমে অর্থ উপার্জনে কষ্ট হয় তৎপরে তা রক্ষা করতে কষ্ট হয়। অতএব অর্থ উপার্জন ও ব্যয় উভয় ক্ষেত্রেই কষ্ট হয়। অর্থের দ্বারা এই সংসারে সুখ বস্তুতঃ লাভ করা যায় না।।৯৫।।
অর্থবান্ লোকের চোরের থেকে, জলের থেকে, অগ্নি থেকে, নিজ আত্মীয়দের থেকে এবং রাজার থেকে নিত্য মৃত্যুতুল্য ভয় হয়। আকাশে গমন করলে পক্ষিগণের দ্বারা ভূমিতে গমন করলে শ্বাপদ প্রাণীদের দ্বারা, জলে গমন করলে মৎস্যের দ্বারা নিজ মাংস ভক্ষিত হবে এরূপ ভয় অর্থবান্ লোকের থাকে। এর তাৎপর্য হল বিত্তবান্ লোককে সমস্ত জগৎ ভক্ষণ করে”।।৯৬-৯৭।।
(ভবিষ্যপুরাণ: উত্তর-পর্ব/৩/৯৫-৯৭)
সম্পাদনায়: প্রবীর চৈতন্য চন্দ্র দাস।
[লেখার স্বত্ব স্বধর্মম্ কর্তৃক সংরক্ষিত। কেবল স্বধর্মম্ এর স্বত্ব উল্লেখ পূর্বক হুবহু কপি ও লিংক শেয়ারের জন্য অনুমোদিত।]